নিউজ ডেস্ক:
কক্সবাজার সীমান্তে মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য বিভিন্ন দেশের পাঠানো ত্রাণসামগ্রীর ওপর প্রযোজ্য শুল্ক ও কর মওকুফ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ইতিমধ্যে এনবিআর মালয়েশিয়া ও আজারবাইজান থেকে আগত ত্রাণসামগ্রীর ওপর শুল্ক ও কর মওকুফ করে পৃথক আদেশ জারি করেছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব ও এনবিআর চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান বলেন, আমরা মালয়েশিয়া ও আজারবাইজান থেকে আগত ত্রাণসামগ্রী শুল্কমুক্ত সুবিধা দিয়েছি।
মালয়েশিয়ার ত্রাণসামগ্রী বিষয়ে আদেশে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে সম্প্রতি আশ্রয় গ্রহণকারী দুর্দশাগ্রস্ত রাখাইন মুসলমানদের মানিবক সহায়তা দেওয়ার প্রস্তাবে বাংলাদেশ জরুরি ত্রাণ সহায়তা গ্রহণে সম্মত হওয়ায় মালয়েশিয়া সরকারের একটি ত্রণাবাহী মিলিটারি এয়ারক্রাফট প্রায় ১০টন ত্রাণসামগ্রীসহ গত ৯ সেপ্টেমবর চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে অবতরণ করে। যা বিমানবন্দরে সংরক্ষিত আছে। ত্রাণসামগ্রীর মধ্যে রয়েছে চাল- খেজুর, গুড়া দুধ, বিস্কুট, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, কম্বল, পুরানো কাপড়, সাবান, লিকুইড হ্যান্ড সোপ ও শ্যাম্পু ইত্যাদি। তাই বাংলাদেশে আশ্রয়গ্রহণকারী রোহিঙ্গা মুসলমানদের জন্য জরুরি মানবিক সহায়তার কথা বিবেচনা কর ত্রাণসামগ্রীর ওপর আরোপযোগ্য শুল্ক কিংবা কর মওকুফ করা হলো।
আজারবাইজানের ত্রাণসামগ্রীর বিষয়ে আদেশে বলা হয়েছে, দু্র্দশাগ্রস্ত রাখাইন মুসলমানদের মানবিক সহায়তা প্রদানের জন্য আজারবাইজান সরকারের একটি ত্রাণবাহী এয়ারক্রাফট গত ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিমানবন্দরে অবতরণ করেছে। আজারবাইজানের তথ্যানুসারে যেখানে চাল, ময়দা, কৌটাজাত গরুর মাংস, পাস্তা স্প্যাগেটি, কনডেন্স মিল্ক ইত্যাদি রয়েছে। তাই মানবিক সহায়তা হিসেবে ওই ত্রাণসামগ্রীর ওপর আরোপযোগ্য শুল্ক ও কর মওকুফ করা হয়েছে।
এর আগে ১৯৯২ সালের এনবিআর থেকে জারি করা অপর এক আদেশে বলা হয়েছে, সরকার, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, এনজিও, ব্যুরোর অধীনে নিবন্ধিত কোনো সেচ্ছাসেবী সংগঠন বা অনিবন্ধিত দেশি ও বিদেশি সংগঠনের নামে আসা ত্রাণসামগ্রী কিছু শর্ত সাপেক্ষে শুল্ক ও কর থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হলো।
জাতিসংঘের হিসেবে গত ২৫ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে তিন লাখ ১৩ হাজার রোহিঙ্গা। তবে ধারণা করা হচ্ছে, তাদের প্রবেশের প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়ে আরও অনেক বেশি। ১৯৭০ সালে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেয় বার্মিজ কর্তৃপক্ষ। নতুন মাত্রা পায় রাষ্ট্রীয় দমনপীড়ন। সেই থেকে এ পর্যন্ত জীবন বাঁচাতে দেশটি ছেড়ে পালিয়েছেন প্রায় ১০ লাখ মানুষ। নিজ দেশের বেসামরিক মানুষের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে মিয়ানমারের এমন ব্যর্থতায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও তুরস্কসহ মুসলিম দেশগুলো।