নিউজ ডেস্ক:
কেরানীগঞ্জের মুগারচরে শিশু আবদুল্লাহ (১১) হত্যা মামলায় খোরশেদ আলম নামে এক আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। গতকাল বুধবার দুপুরে ঢাকার ৩ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক সাঈদ আহমেদ এ আদেশ দেন।
রায়ে মামলার প্রধান আসামি মোতাহার হোসেনের (বন্দুকযুদ্ধে নিহত) ছেলে মেহেদী হাসান শামীমকে ১০ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মেয়ে মিতু আক্তারকে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা অনাদায়ে তাকে আরো ১ মাসের কারাভোগ করতে হবে। মোতাহার হোসেনের স্ত্রী নাসিমা বেগমের বিরুদ্ধে অবিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
দণ্ডপ্রাপ্ত শামীমের বিরুদ্ধে আব্দুল্লাহকে খুন ও খুনের সাধারণ অভিপ্রায় প্রমাণিত হলেও তার বয়স ১৮ বছরের কম হওয়ায় শিশু আইনের বিধান অনুসারে তাকে সর্বোচ্চ সাজা ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আর মিতু আক্তারকে খুনের আলামত ধ্বংস করতে সহায়তা করার কারণে তাকে ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত। তবে আপিলের সত্ত্বে মিতুর আইনজীবীরা জামিনের আবেদন করলে বিচারক তা মঞ্জুর করেন।
রায় ঘোষণাকালে খোরশেদ আলম বাদে অপর আসামিরা আদালতে হাজির ছিলেন। গত ৮ জুন রাষ্ট্রপক্ষ এবং আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের জন্য আজকের দিন ধার্য করা হয়।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, কেরানীগঞ্জের রুহিতপুর ইউনিয়নের মুগারচর গ্রামের পশ্চিম মুগারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র মো. আবদুল্লাহ ২০১৬ সালের ২৯ জানুয়ারি দুপুরে নিখোঁজ হয়। ওই দিনই আসামি মেহেদী হাসান ওই শিশুকে বাড়ির দ্বিতীয় তলায় নিয়ে যায় এবং আসামি মোতাহার ও খোরশেদ মুখ চেপে ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।
হত্যার পর আবদুল্লাহর লাশ প্লাস্টিকের ড্রামে ভরা হয় এবং আসামি কায়কোবাদকে লাশ ফেলার জন্য ভাড়া করা হয়। এর আগে মুঠোফোনে তাকে অপহরণের দাবি করে দুই দফায় ২ লাখ টাকা নেয় অপহরণকারীরা।
২০১৬ সালের ২ ফেব্রুয়ারি আবদুল্লাহর বাড়ির ১০০ গজ পশ্চিমে মোতাহার হোসেনের বাড়ির একটি কক্ষ থেকে প্লাস্টিকের ড্রামে ভরা আবদুল্লাহর গলিত লাশ উদ্ধার হয়। এরপর ওই বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি মামলার মূল আসামি মোতাহার হোসেন র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন।
একই বছরের ৯ মার্চ কেরানীগঞ্জ মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শফিকুল ইসলাম আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযোগপত্রে মোতাহার হোসেনের ছেলে মেহেদী হাসান, মেয়ে মিতু আক্তার এবং স্ত্রী নাছিমা বেগমের সঙ্গে বন্ধু খোরশেদ এবং জনৈক কায়কোবাদকে আসামি করা হয়।