নিউজ ডেস্ক:
সফররত সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড.বিবিয়ান বালাকৃষ্ণণ বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসনের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
তিনি আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসন চাই। কারণ, তাদের অবস্থান দীর্ঘায়িত হলে তারা সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়তে পারে।’
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বৈঠক শেষে সফররত পররাষ্ট্রমন্ত্রীর উদ্ধৃতি দিয়ে সাংবাদিকদের একথা বলেন।
ড. বালাকৃষ্ণণ অবশ্য রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরুর প্রশংসা করেন। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্মম অভিযানে দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য রাখাইন থেকে এসব রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে।
এ প্রসঙ্গে সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরার পর সেখানে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন যে, মিয়ানমার সরকার রাখাইনে রোহিঙ্গাদের অবস্থা দেখতে আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোকে মিয়ানমার সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় পুনর্ব্যক্ত করেন বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা দেশের জন্য বিরাট বোঝা।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা বিশেষ করে নারী ও শিশুরা মিয়ানমারে ধ্বংসযজ্ঞের শিকার হয়েছে। আমরা মানবিক কারণে তাদের আশ্রয় দিয়েছি।
শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তার প্রশংসা করেন।
তিনি মিয়ানমারকে বাংলাদেশের বন্ধুভাবাপন্ন দেশ হিসেবে উল্লেখ করে বাংলাদেশের মাটিকে কাউকে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে ব্যবহার করতে না দেয়ার অবস্থানের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।
বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে সিঙ্গাপুরের বিনিয়োগকারীদের জন্য জমি বরাদ্দের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী এসব অঞ্চলে বড় ধরনের বিনিয়োগ করতে সিঙ্গাপুরের বিনিয়োগকারীদের প্রতি আহ্বান জানান।
বিগত ১০ বছরে বাংলাদেশের ব্যাপক আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকারের যথাযথ পদক্ষেপের ফলে গত অর্থবছরে ৭.৮৬ শতাংশ জিডিপি অর্জিত হয়েছে। চলতি অর্থবছরে তা ৮.২৫ শতাংশ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী সিঙ্গাপুরের মাটি স্বল্পতার কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশের নদীগুলো ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে বিনামূল্যে এদেশ থেকে বালু-মাটি নিতে সফররত পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী, প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী, এসডিজি বিষয়ক মূখ্য সমন্বয়কারী মো. আবুল কালাম আজাদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসান,সিঙ্গাপুরে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোস্তাফিজুর রহমান এবং ঢাকায় সিঙ্গাপুরের হাইকমিশনার ডেরেক লোহ ইইউ- সি বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।