নিউজ ডেস্ক:
তারা যৌন কর্মী নন। তবে তারা নগ্ন থাকেন। অন্যদের সামনে। ঘন্টার পর ঘণ্টা। নগ্ন হওয়াটাই পেশা। বিনিময়ে পান জীবিকা। তবে অতি সামান্য। তারা ‘লাইভ মডেল’। যাদের ছবি এঁকে পাকা হয় হবু শিল্পীদের হাত। সরকারি বা বেসরকারি আর্ট কলেজে। সামাজিকভাবে এই ‘লজ্জাজনক’ পেশা গোপন রাখতে বাধ্য হন তারা। তবে সবসময় পারেন না। ফলে সমাজে অনেক সময় হেয় হতে হয়। অথচ, এমন কঠিন কাজ করে তাদের ভাগ্যে জোটে খুবই কম পারিশ্রমিক। অবশেষে সেই হতভাগ্য মডেলদের জন্য পদক্ষেপ নিয়েছে মহারাষ্ট্র সরকার। এক লাফে তিন গুণ বৃদ্ধি পেল তাদের পারিশ্রমিক।
মহারাষ্ট্র জুড়ে রয়েছে ১২টি ফাইন আর্ট কলেজ। এরমধ্যে ৪টি সরকারি। এই এক ডজন প্রতিষ্ঠান থেকে পাওয়া যায় ডিগ্রি। পাশাপাশি আছে অন্তত ১৫০ টি প্রতিষ্ঠান‚ যেখান থেকে পাওয়া যায় ডিপ্লোমা। সব জায়গাতেই সিলেবাসে আছে লাইভ মডেল দেখে নগ্ন মানবদেহ অঙ্কন।
এতদিন অবধি মহারাষ্ট্রে ফুল ন্যুড মডেলদের জন্য পারিশ্রমিক ছিল ৩০০ টাকা। তার জন্য টানা নগ্ন হয়ে একভাবে ৬ ঘন্টা থাকতে হত ক্যানভাসের সামনে। এ বার সেই পারিশ্রমিক বেড়ে হল এক হাজার টাকা। সেমি ন্যুডরা পেতেন ২৫০ টাকা‚ বেড়ে হল ৬০০। বস্ত্র আবৃত মডেল পেতেন ২০০‚ এ বার হল ৪০০। গত ৪ বছর ধরে এই টাকায় কাজ করে আসছিলেন তাঁরা। বর্ধিত পারিশ্রমিক লাগু হবে নতুন শিক্ষাবর্ষ থেকেই।
আর্ট কলেজ সূত্রে জানা গেছে‚ ন্যুড বা সেমি ন্যুড মডেল কার্যত পাওয়াই যায় না। বাধ্য হয়ে কোনও মূর্তি সামনে রেখে চালাতে হয় ড্রয়িং-এর কাজ। কারণ‚ এই সামান্য টাকায় কেউ রাজি হন না একদল সম্পূর্ণ অপরিচিত চোখের সামনে সম্পূর্ণ বিবস্ত্র হতে। এমনকী‚ দিনমজুররাও এই কাজ প্রত্যাখ্যান করেছেন।
মডেল-অভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল কোর্স। সমস্যায় পড়ছিলেন ছাত্র ছাত্রীরা। সেই অভাব মেটাতে পারিশ্রমিক বৃদ্ধি করল সরকার।
আশ্চর্য এই সমাজ। ফ্যাশন ফোটোগ্রাফির লেন্সের সামনে নগ্ন বা অর্ধ নগ্ন হলে উপার্জন রাশি রাশি টাকা। একই কাজ তুলি-ক্যানভাসের সামনে ঘন্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে করলে নামমাত্র মজুরি। ন্যুড মডেলিং ফ্যাশনে গ্ল্যামারাস। কিন্তু পেইন্টিং-এ লজ্জার ! একদল মডেলের খ্যাতির মুকুটে নতুন পালক গোঁজে নগ্নতা। আর একদল বাধ্য হয়ে মিথ্যে বলেন নিজের পেশা নিয়ে। নগ্নতারও কত রূপ ! সূত্র: ইন্টারনেট