নিউজ ডেস্ক:
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আলবদর আশরাফুজ্জামান খান এবং ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল জব্বার (পরবর্তীতে জাতীয় পার্টি থেকে পিরোজপুর-মঠবাড়িয়ার এমপি) এবং জাতিরজনক বঙ্গবন্ধুর ঘাতক হিসেবে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত খুনী রাশেদ চৌধুরীকে অবিলম্বে বাংলাদেশের কাছে সমর্পণের দাবি জানানো হয়েছে। মার্কিন প্রশাসনের কাছে এ দাবি জানাতে নিউইয়র্কে আগস্টের মাঝামাঝি একটি বড় ধরনের কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
আলবদর কমান্ডার হিসেবে বুদ্ধিজীবী হত্যার নায়ক আশরাফুজ্জামান খান নিউইয়র্কে এবং রাজাকার আব্দুল জব্বার বসবাস করছে ফ্লোরিডায়। অপরদিকে বঙ্গবন্ধুর ঘাতক রাশেদ চৌধুরীকে মাঝেমধ্যেই দেখা যায় ক্যালিফোর্নিয়ায়। একাত্তরের আলবদর বাহিনীর আরো কয়েকজন সদস্য নিউইয়র্ক, নিউজার্সি, ফ্লোরিডা, মিশিগান, ক্যালিফোর্নিয়ায় বসবাস করছে। এদের কেউ কেউ মিডিয়ার কর্মীর আবরণ গায়ে ঝুলিয়ে বিভিন্ন সভা-সমাবেশেও অংশ নিচ্ছে বলে সভায় উল্লেখ করা হয়।
এরা মাঝেমধ্যেই কথিত মিডিয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশে চলমান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালকে প্রশ্নবিদ্ধ করার সংঘবদ্ধ প্রচারণাতেও লিপ্ত হচ্ছে। কখনো কখনো এরা মার্কিন কংগ্রেস এবং স্টেট ডিপার্টমেন্টকেও লাগাতার মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে বলেও এ সভায় অভিযোগ করা হয়। এমন ঘৃণ্য তৎপরতায় লিপ্তদের চিহ্নিত করতে সকলে একযোগে কাজ করার সংকল্প ব্যক্ত করেন।
সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের যুক্তরাষ্ট্র শাখার কার্যকরী কমিটির এই সভায় একইসাথে আরো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, ‘বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ফিরিয়ে নিতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে চলমান কর্মসূচির বিরুদ্ধে এই প্রবাসে যদি কোন ষড়যন্ত্রের আভাস পাওয়া যায়, তাহলে ঐ ষড়যন্ত্রকারিদের রুখে দিতে সকল প্রবাসীকে ঐক্যবদ্ধ করতে সকলেই সচেষ্ট থাকতে হবে এবং নিজ নিজ অবস্থান থেকে মার্কিন কংগ্রেসের সাথে যোগাযোগ অব্যাহত রাখতে হবে। ’
২৮ জুলাই শুক্রবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্ক সিটির জ্যাকসন হাইটসে পালকি পার্টি সেন্টারের এই সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা রাশেদ আহমেদ। নির্বাহী সদস্য মুক্তিযোদ্ধা লাবলু আনসারের সঞ্চালনায় এ সভায় বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সহ-সভাপতি হারুন ভূইয়া এবং কন্ঠযোদ্ধা রথীন্দ্রনাথ রায়, সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল বারী, যুগ্ম সম্পাদক মো. আব্দুল কাদের মিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক নূরল আমিন বাবু, প্রচার সম্পাদক শুভ রায়, সাংস্কৃতিক সম্পাদক কন্ঠযোদ্ধা শহীদ হাসান, নারী বিষয়ক সম্পাদক সবিতা দাস, নির্বাহী সদস্য শহীদুল ইসলাম, আশরাফ উদ্দিন খান লিটন এবং নান্টু মিয়া।
সভা থেকে বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়ন আর কল্যাণে সাধ্যমত অবদান রাখার জন্যে প্রবাসীদের প্রতি আহবান করা হয়। একইসাথে প্রবাস প্রজন্মকেও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সম্পৃক্ত রাখতে নানা কর্মসূচির আলোকপাত করা হয়।
সেপ্টেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতা হিসেবে যোগদান করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সে সফরের সময়ে নেয়া সমস্ত কর্মসূচিতে সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম অংশ নেবে বলেও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
সভায় মুুক্তিযুদ্ধে ৯ নম্বর সেক্টরের সাব সেক্টর কমান্ডার মেজর জিয়াউদ্দিনের মৃত্যুতে গভীর শোক এবং তার বিদেহী আত্মার শান্তি ও মাগফেরাত কামনায় সকলে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করেন।