মেহেরপুর প্রতিনিধি: মেহেরপুর শহরের তাহের ক্লিনিকের মালিক আবু তাহের এর ভুল চিকিৎসায় অপারেশন টেবিলেই আব্দুল খালেক (৫০) নামের এক রোগী মারা গেছে।
বুধবার বিকাল সাড়ে ৪ টার দিকে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। নিহত আব্দুল খালেক সদর উপজেলার গোভিপুর গ্রামের মৃত হারান হালসোনার ছেলে।
অভিযুক্ত ডা. আবু তাহের বাংলাদেশ মেডিক্যাল এসোসিয়েশন (বিএমএ) মেহেরপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এনেসথেসিস্ট হিসেবে তার কোন প্রশিক্ষণ বা সনদ নাই। তবুও তিনি নিজেই সার্জারি ও এনেসথেসিস্ট হিসেবে কাজ করেছেন।
এ ঘটনায় নিহতের মেয়ে পারিভন খাতুন অভিযোগ করেছেন, ডা. তাহের নিজেই অজ্ঞান করা ইনজেকশন দিয়ে তার বাবাকে মেরে ফেলেছে।
নিহত আব্দুল খালেকের ভাইয়ের ছেলে জাহিদ হোসেন জানান, আব্দুল খালেক দুপুরে দা দিয়ে বাঁশ কাটছিলেন। এসময় অসাবধানবশত দায়ের কোপে বাম পা কেটে যায়। পরিবারের লোকজন তাকে প্রথমে হাসপাতালে নিলে জরুরী বিভাগে নেওয়ার আগেই তাহের ক্লিনিকের এক দালাল রোগীর লোকজনকে ফুসলিয়ে রোগীকে তাহের ক্লিনিকে নিয়ে যায়। এসময় ডা. আবু তাহের জরুরী ভাবে তাকে অপরারেশন থিয়েটারে নিয়ে যান।এসময় ডা. আবু তাহের নিজেই এনেসথেসিয়া সহ অপারেশন শুরু করেন। অপারেশন শেষে রোগীর আর জ্ঞান ফেরেনি। পরে তাকে মৃত ঘোষনা করা হয়।
ঘটনার পরপরই রোগীর স্বজনরা ক্লিনিকে আহাজারি করতে থাকে এবং ডা. আবু তাহেরের ভুল চিকিৎসাকে অভিযুক্ত করে তাঁর বিচারের দাবি করে। এসময় আশেপাশের এলাকা থেকে অসংখ্য মানুষ ক্লিনিক চত্বরে জমা হয়।
এদিকে খবর পেয়ে মেহেরপুর সদর থানার এসআই রফিকুল ইসলাম সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ক্লিনিকে গিয়ে লাশ উদ্ধার করেন।
তিনি জানান, প্রাথমিক ভাবে চিকিৎসক আবু তাহের নিজেই সার্জারি ও এনেসথেসিস্টের কাজ করেছেন বলে স্বীকার করেছেন। তবে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অপারেশন থিয়েটারে দায়িত্বরত সেবিকা রিপনা খাতুন জানান, ডা. আবু তাহের চিকিৎসক হিসেবে একাই ছিলেন। সাথে ছিলেন তিনি সহ দুইজন সেবিকা ও দুইজন আয়া এবং ম্স্তুাক নামের আরো এক ক্লিনিক স্টাফ। তিনি আরো জানান, ডা. আবু তাহের নিজেই সার্জারি ও এনেসথেসিস্টের কাজ করেছেন ।
তবে এ বিষয়ে ক্লিনিক মালিক ডা. আবু তাহেরের সাথে দেখা করতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের সাথে দেখা করেননি এমনকি মোবাইল ফোনও রিসিভ করেননি।
মেহেরপুরের সিভিল সার্জন ডা. জিকেএম সামসুজ্জামান বলেন, তাহের ক্লিনিকে রোগীর মৃত্যুর খবর শুনেছি। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।