কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
ইটনায় সাবেক জেলা প্রশাসক বীরমুক্তিযোদ্ধা আবদুর রহিম মোল্লার বিরুদ্ধে আওয়ামী দোসর ও গুটি কয়েক মুক্তিযোদ্ধা কর্তৃক মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মানহানিকর মানববন্ধন ও সংবাদ প্রকাশের প্রতিবাদে কিশোরগঞ্জে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (১৩ নভেম্বর) সকাল ১০ টায় কিশোরগঞ্জ প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন করেন সাবেক জেলা প্রশাসক বীরমুক্তিযোদ্ধা আবদুর রহিম মোল্লা।
মুক্তিযুদ্ধকালীন কম্পানী কমান্ডার বীরমুক্তিযোদ্ধা কে এম মাহবুবুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বীরমুক্তিযোদ্ধা আবদুর রহিম মোল্লা।
এসময় তিনি বলেন, গত ৫ নভেম্বর মানববন্ধনসহ গুটি কয়েক পত্রিকায় আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ষড়যন্ত্রমূলক এবং চরমভাবে মিথ্যাচার।
এসময় মানববন্ধন ও প্রকাশিত সংবাদে ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা বলে অভিযুক্ত করে মানববন্ধনকারী গুটিকয়েক আওয়ামী বাকশালি মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের দোসররা।
তিনি বলেন, সংবাদে প্রকাশিত অভিযোগ আমি নাকি ২০২১ সালে সচিব থাকাকালীন প্রভাব কাটিয়ে মুক্তিযোদ্ধা হয়েছি। এসব অভিযোগ সবই মিথ্যা কারণ আমি ২০১৬ সালে সরকারি চাকুরি থেকে অবসর গ্রহণ করি। এছাড়াও তিনি নিজেকে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা দাবি করে বলেন, আমার বিসিএস গেজেট: মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক ৭ মে ২০১১ তারিখের প্রকাশিত প্রজ্ঞাপন নম্বর ২২ বৈশাখ/৫ই মে ২০১১, গেজেট নং- ৪৬ বলে ১১/০৯/২০১১ইং তারিখে সাময়িক সনদপত্র নম্বর ১৭১৮২৬ গ্রহণ করি।
এছাড়াও কেন্দ্রীয় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল কর্তৃক স্বাক্ষরিত প্রত্যয়ন পত্র:- পত্র নম্বর মুক্তিসুপা/কিশোরগঞ্জ ৫০৬৬/৮৪, তারিখ:১৭/১০/১৯৮৪ পেয়েছি। কেন্দ্রীয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কর্তৃক প্রকাশিত ভোটার তালিকায় ১৯৯৪ সালে ভোটার হিসাবে আমি অন্তরভূক্ত ছিলাম। সর্বোপরি বিগত ২৮/১২/২০০৫ ইং তারিখে কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা উপজেলা যাছাই-বাছাই কমিটির সভায় প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে আমাকে অনুমোদন করা হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধ বিষযক মন্ত্রণালয়ের চাহিদা মোতাবেক ১৯৭৩ থেকে পরবর্তী ১৯৮৪, ১৯৮৫, ১৯৮৬ সালে বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন কর্তৃক অনুমোদিত তালিকার আমার ক্রমিক নং-৮৩, রেজি নং-১৪২৪ লিপিবদ্ধ রয়েছে এবং ১৯৮৫ ব্যাচে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকুরিতে প্রবেশ সংক্রান্ত জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কর্তৃক আমি প্রত্যয়ন পত্র প্রাপ্ত।
এ সময় তিনি কিশোরগঞ্জ-৪ সংসদীয় আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশি বলেও জানান গণমাধ্যম কর্মীদের। তিনি তার বিরুদ্ধে সংঘটিত মানববন্ধন ও প্রকাশিত সংবাদ সর্বৈই মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক এবং রাজনৈতিক প্রতিদন্ধীর বাকশালি আচরণের বহিঃপ্রকাশ বলে তিনি অভিযোগ করেন। যা আদৌও কাম্য হতে পারে না। বিগত স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে দীর্ঘ ৯ বছরে ওএসডি ছিলাম। মিথ্যা শেলু মেসিন চুরির মামলা হয়েছে আমার নামে। পমোশন দেয়নি আমাকে।
আব্দুর রহিম মোল্লা তার বিরুদ্ধে প্রকাশিত ও সংঘটিত মিথ্যা মানববন্ধনের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানান। সেই সাথে নিজেকে একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা দাবি করে বলেন, ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে আমাকে বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা শহীদ জিয়ার আদর্শ থেকে একচুলও নড়ানো যাবে না।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি প্রিন্সিপাল হাবিবুর রহমান ভূইয়া, মুক্তিযুদ্ধকালীন কম্পানী কমান্ডার সালাহউদ্দিন আহমেদ বাচ্চু, বীরমুক্তিযোদ্ধা আমিরুজ্জান, ইটনা উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শেখ আল মামুন, কিশোরগঞ্জস্থ ইটনা সমিতির সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা গিয়াস উদ্দিন খান আরজু মিল্কী, বীরমুক্তিযোদ্ধা আবুবকর ছিদ্দিকসহ ইটনা উপজেলার বিএনপির শতাধিক নেতাকর্মী ও জেলায় কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিকস মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।।