মেহেরপুর অফিস: মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের পরিপত্র অগ্রাহ্য করে মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার মানিকনগর ডিএস আমিনিয়া আলিম মাদ্রাসায় অধ্যক্ষ পদের পরিবর্তে সুপার ও সহকারি সুপার হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার পায়তারা করায় মাদ্রাসা ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষসহ ২০ জনকে বিবাদী করে একটি মামলা দায়ের করেছেন সাবেক অধ্যক্ষ ও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আহমদ আলী। গতকাল রবিবার মামলাটি আমলে নিয়ে সভাপতি ও অধ্যক্ষসহ প্রথম ১২ জন বিবাদী শোকজ এবং বাকি বিবাদীদের সমন জারি করেছেন মেহেরপুরের সিনিয়র সহকারি জজ আবু সাঈদ কনক।
মামলার বিবাদীরা হলেন- মাদ্রাসা গভর্ণিং বডির সভাপতি আহসান আলী মোল্লা, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাজেদুল হক, সদস্য এনামুল খাঁ, রহিদুল ইসলাম, আব্দুর রহমান, ছাকেদা খাতুন, , শিক্ষক প্রতিনিধি সদস্য আনোয়ারুল ইসলাম, রুহুল আমিন, কাবিদুল হক, সামসন্নাার , রেজাুল করিম, অফাজ উদ্দিন, সুপার পদ প্রার্থী আসাদল্লাহ আল গালিব, আব্দুল লতিফ,, তাজ উদ্দিন খান, রুহুল আমিন, তহিদুল ইসলাম, আবু সাদেক, সহকারি সুপার পদ প্রাথী মিকাইল হোসেন, শফিকুল ইসলাম।
মামলার বিবরণে বাদি অভিযোগ, তিনি ওই মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ হিসেবে কর্মরত ছিলেন এবং প্রতিষ্ঠাতা সদস্য রয়েছেন। কিন্তু তিনি অবসরে গেলে আব্দুল মাজেদকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। পরবর্তিতে আলিম মাদ্রাসায় অধ্যক্ষের পরিবর্তে সুপার হিসেবে এবং সহকারি সুপার হিসেবে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা হয়। যা মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড প্রবিধান বিরোধী। আলিম মাদ্রাসায় কখনোই সুপার পদ থাকে না। যেহেতু মাদ্রাসাটি আলিম শিক্ষাদানের অনুমতি পেয়েছে সে হিসেবে সেখানে অধ্যক্ষ পদ সৃষ্টি হয়েছে। সহকারি সুপারের পদটি প্রভাষক হিসেবে পায়ন করা হয়েছ। অথচ বর্তমান গভর্ণিং বডির সভাপতি আহসান আলী মোল্লা, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল মাজেদ, সদস্য রেজাউল করিম ও শিক্ষক প্রতিনিধি আনোয়ারুল ইসলাম, মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক আফাজ উদ্দিন যোগসাজশে আর্থিক সুবিধার লোভে সেখানে সুপার ও সহকারি সুপার পদে নিয়োগ প্রকাশ করে নিয়োগ প্রক্রিয়্া চালিয়ে যাচ্ছেন। যাতে করে মাদ্রাসার শিক্ষার মান ব্যহত হয় এবং তারা মোটা অংকের অর্থিৈনতক সুবিধা ভোগ করতে পারেন।
বিবরণে আরো অভিযোগ করেছেন, যে সকল প্রার্থীরা সুপার পদে আবেদন করেছেন । তাদের সেই যোগ্যতাও নাই। এক্ষেত্রে সভাপতি, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষসহ গভর্ণিং বডির সদস্যদের মধ্যে কয়েকজন মোটা অংকে উৎকোচ গ্রহণ করে আসাদুল্লাহ আল গালিবকে সুপার এবং শফিকুল ইসলামকে সহকারি সুপার হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার পাঁয়তারা চালাচ্ছেন। যা সম্পূর্ন অনৈতিক ও মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের পরিপন্থী।
মামলার আইনজীবী আনোয়ার হোসেন জানান, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের প্রবিধানকে বৃদ্ধাঙ্গলী দেখিয়ে সভাপতি, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সহ গভর্ণিং বডির সদস্যরা নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করেছেন যা আইনসিদ্ধ নয়। মাননিয় আদালত বিষয়টি পর্যালোচনা করে প্রথম ১২ জনকে শোকজ করেছেন এবং বাকি বিবাদীদের আদালতে হাজির হওয়ার জন্য সমন জারি করেছেন।
বিষয়টি নিয়ে কথা বললে স্থানীয়দের একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, মাদ্রাসায় সুপার পদে ১৫ লাখ এবং সহকারি সুপার পদে ১০ লাখ টাকা ঘুষ নিয়ে নিয়োগ দেওয়ার কথা চুড়ান্ত হয়েছে। আর এ কাজটি করেছেন গভর্ণিং বডির সভাপতি আহসান আলী মোল্লা, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল মাজেদ, সদস্য রেজাউল করিম ও শিক্ষক প্রতিনিধি আনোয়ারুল ইসলাম।