নিউজ ডেস্ক:
ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার দোড়া ইউনিয়নের মেম্বার মোঃ রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে বয়স্ক ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতা, ভিজিএফ কার্ড ও সোলার প্যানেল দেওয়ার কথা বলে হতদরিদ্রদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এমন কি তিনি একজন ভিক্ষুকের কাছ থেকেও ঘুষ নিতে কসুর করেন নি। ইউপি মেম্বরের এই বানিজ্য নিয়ে এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। তদন্ত করে তাকে বরখাস্ত করার দাবী তুলেছেন ওয়ার্ডবাসি। সরেজমিন গিয়ে জানা গেছে, দোড়া ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের পাঁচলিয়া ও সারুটিয়া গ্রামের একাধিক মানুষের কাছ থেকে রেজাউল মেম্বর টাকা নিয়েছেন। টাকা নিয়ে ভাতা না করে দেওয়ায় ফুঁসে উঠেছেন গ্রামবাসি। সারুটিয়া গ্রামের মাঠ পাড়ার মৃত অমেদ মন্ডলের স্ত্রী ফিরোজা বেগম অভিযোগ করেন, ৮ মাস আগে বিধবা ভাতার কার্ড দেওয়ার কথা বলে রেজাউল মেম্বার তার কাছ থেকে তিন হাজার টাকা নেন। এখনো তিনি আমার কার্ড করে দিতে পারেন নি। একই গ্রামের মৃত আনসার মন্ডলের ছেলে আত্তাব জানান, ভিজিএফ কার্ড করে দেওয়ার কথা বলে তার কাছ থেকে পাঁচ’শ টাকা নিয়েছিলেন রেজাউল মেম্বর। এখন কিছুই পেলাম না। এছাড়া একই গ্রামের আনার উদ্দিনের পুত্রবধূর মাতৃত্বকালীন ভাতার কার্ড দেওয়ার নাম করে চার হাজার টাকা নেন। এখনো কার্ড পাইনি। আশাদুলের স্ত্রী শিরিনা বেগম বলেন, আমার স্বামী দিনমজুর। বহু কষ্টে যোগাড় করে ৩ হাজার টাকা মেম্বারকে দিয়েছিলাম মাতৃত্বকালিন ভাতার কার্ডের জন্য। কিন্তু পায়নি। এনমনকি ওই গ্রামের ভিক্ষুক আব্দুল কুদ্দুসের ভিজিএফ’র কার্ড করার কথা বলে অর্থলোভী মেম্বর দুই’শ টাকা ঘুষি নিয়েছিল। কিন্তু তার টাকাও ফেরৎ দেয়নি। কার্ডও হয়নি। কুদ্দুসের অভিযোগ মেম্বর তার কাছে ৫০০ টাকা চেয়েছিল। আমি ভিক্ষা করে ২০০ টাকা দিয়েছিলাম। টাকা কম দেওয়ায় আমার কার্ড হয় নি বলে মেম্বর সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। ওই ওয়ার্ডের বাসিন্দা ইন্তাজ আলী বলেন, আমার নামে পরিষদ থেকে সেনেটারি লেট্রিন বরাদ্দ হয়। কিন্তু আমি পায়নি। উপজেলা থেকে অফিসার এসে দেখে যান আমি পায়নি। তারপরও ইউপি মেম্বরের কোন বিচার হয়নি। এদিকে মনছের মন্ডলের বাড়িতে সোলার প্যানেল বসানোর কথা বলে ৮ হাজার টাকা ঘুষ নেন। কিন্তু তাকে কোন সোলার প্যানেল দেওয়া হয়নি। গ্রামবাসির ভাষ্যমতে রেজাউল মেম্বর বহু মানুষের কাছ থেকে বয়স্ক ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতা ও ভিজিএফ কার্ডধারীদের নিকট থেকে নিজে ও ও ঝড়ু দালালদের মাধ্যমে অর্থ সুবিধা নিয়ে থাকেন। এ ভাবে তিনি লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিলেও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর ভায়ে কেও মুখ খুলতে সাহস পায় না। এ ব্যাপারে রেজাউল মেম্বর জানান, তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। একটি মহল তাকে হেয় করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে এবং মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছেন। বিষয়টি নিয়ে দোড়া ইউপি চেয়ারম্যান কাবিল উদ্দিন বিশ্বাস বলেন, রেজাউল মেম্বার ভাতা বা সোলার প্যানেল দেওয়ার নাম করে টাকা নিয়েছেন কিনা আমার জানা নেই। যদি রেজাউল মেম্বার কারো কাছ থেকে টাকা নিয়ে থাকেন তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে