নিউজ ডেস্ক:
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনকে হত্যাকে দেশবিরোধী শক্তির চক্রান্ত বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, লিটন হত্যা সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার অংশ। তাকে হত্যা করতে অনেক আগে থেকেই চক্রান্ত চলছিল। অনেক ছক কষে তাকে হত্যা করা হয়েছে। তারা আরো ঘটনা ঘটাতে পারে। এ জন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। বিশেষ করে মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
গতকাল সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে এক অনির্ধারিত আলোচনায় তিনি এই পরামর্শ দেন বলে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে।
সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকের আগে প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভার সদস্যরা জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় এমপি লিটনের কফিনে শ্রদ্ধা জানান। সংসদ ভবন চত্বরে লিটনের নামাজে জানাজার পর ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া সংসদ সদস্যদের নিরাপত্তা বাড়ানোর তাগিদ দেন।
মন্ত্রিসভার বৈঠকে নির্ধারিত আলোচ্য বিষয়ের সাথে গুরুত্বসহকারে আলোচনায় স্থান পায় সংসদ সদস্য লিটন হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি। তার গুলিতে এক শিশু আহত হওয়ার প্রসঙ্গও আলোচনায় উঠে আসে।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার সন্ধ্যায় গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে নিজ বাসায় গুলিতে নিহত হন সংসদ সদস্য লিটন। পাঁচজন যুবক কথা বলার নাম করে বসার কক্ষে ডেকে নিয়ে তাকে কাছ থেকে গুলি করে হত্যা করে।
মন্ত্রিসভার বৈঠকে অংশ নেয়া একাধিক মন্ত্রীর সাথে আলাপকালে তারা জানিয়েছেন, এমপি লিটনের হত্যার পেছনে জামায়াতের সম্পৃক্ততা থাকতে পারে বলে সন্দেহের কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, সে ছিল ওই এলাকায় জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে আতঙ্ক। সে আওয়ামী লীগকে ওই এলাকায় শক্তিশালী অবস্থানে নিতে কাজ করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ছেলেটা (লিটন) অত্যন্ত ভালো ছিল। সে বিদেশ থেকে পড়াশোনা করে এসেছে। আওয়ামী লীগের জন্য নিবেদিতপ্রাণ ছিল।
দেশবিরোধী শক্তি চক্রান্ত করছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে বলেছেন, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে এই ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত নতুন নয়। ১৯৭২ থেকে ’৭৪ সাল পর্যন্ত সাতজন এমপিকে মারা হয়েছে। জোট সরকারের আমলেও সংসদ সদস্য শাহ এ এম এস কিবরিয়া ও আহসান উল্লাহ মাস্টারকে হত্যা করা হয়েছে। এভাবে বিভিন্ন সময়ে ষড়যন্ত্রকারীরা পরিকল্পিতভাবে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীকে হত্যা করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, লিটন হত্যা সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার অংশ। ২০১৫ সালের ২ সেপ্টেম্বর সুন্দরগঞ্জে এক শিশুকে গুলি করার ঘটনাটিও এর অংশ ছিল। বিভিন্নভাবে লিটনকে হেয় করা হয়েছে। প্রথমে তাকে হেয় করা হয়েছে এরপর তাকে হত্যা করা হয়েছে।প্রধানমন্ত্রী বলেন, পত্রিকায় এসেছে শিশু সৌরভকে গুলি করেছে সে (লিটন)। কিন্তু পত্রিকায় আসেনি যে তার ওপর আক্রমণ হয়েছে এবং সেটা ঠেকাতেই সে গুলি করেছে এবং সেই গুলিতে সৌরভ আহত হয়।