বয়োজেষ্ঠ্য বন্ধু এবং প্রতিবেশিদেরকে সেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে সেবা করলে তারা জীবনটাকে উপভোগ করতে পারেন এবং দীর্ঘদিন বাঁচেন। যুক্তরাজ্যের নতুন একটি গবেষণা থেকে এমনটাই প্রমাণিত হয়েছে।
গবেষণাটি পরিচালিত হয়েছে অ্যাবারডিন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস স্কুলের নেতৃত্বে। গবেষণায় জাপানের বয়োজেষ্ঠ্যদের মধ্যে মৃত্যুর হার বিশ্লেষণ করে দেখা হয়েছে। ১৯৯৫ সালে কোবেতে এক ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হানার পরবর্তী সময়কাল থেকে ওই গবেষণা শুরু করা হয়।
ওই ভূমিকম্পের পর বিধ্বস্ত এলাকাগুলোর বয়োজেষ্ঠ্য বাসিন্দাদেরকে দীর্ঘমেয়াদে দৈনন্দিন সেবা প্রদানের জন্য স্বেচ্ছাসেবীদের সংখ্যা ব্যাপকহারে বাড়তে থাকে। প্রায় ১৪ লাখ সেচ্ছাসেবী ভূমিকম্পপীড়িতদেরকে সেবা দিতে থাকেন।
স্বেচ্ছাসেবামূলক যত্নের মধ্যে ছিল বয়োজেষ্ঠ্যদের ঘরে পরিদর্শনে গিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলা এবং প্রতিদিনের কাজকর্মে সহায়তা করা।
গবেষণাটির নেতৃত্বে ছিলেন ড. ইউ আওকি। তিনি স্বেচ্ছাসেবীদের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করার পাশাপাশি ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় বয়োজেষ্ঠ্যদের মৃত্যুর হারের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী এলাকার বয়োজেষ্ঠ্যদের মৃত্যুর হারের তুলনা করে দেখেন। ওই গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে, যেসব এলাকায় স্বেচ্ছাসেবার হার বেশি ছিল সেসব এলাকায় মৃত্যুর হার তাৎপর্যপূর্ণভাবে অনেক বেশি ছিল।
স্বেচ্ছাসেবা সংক্রান্ত এর আগের গবেষণাগুলোতে স্বেচ্ছাসেবকদের ওপর স্বেচ্ছাসেবামূলক শ্রমের স্বাস্থ্যগত উপকারিতা খতিয়ে দেখা হয়েছে। আর এই গবেষণায় প্রথম স্বেচ্ছাসেবা এবং স্বেচ্ছাসেবা গ্রহণকারীদের দীর্ঘায়ু হওয়ার মধ্যে যোগসাজশ আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হল।
ড. আওকি গবেষণার ফলাফল বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে বলেন, “এই গবেষণা বয়োজেষ্ঠ্যদেরকে স্বেচ্ছাসেবার মাধ্যমে সহায়তার প্রকৃত মূল্য উদঘাটন করেছে। যা না পেলে বয়োজেষ্ঠ্যদেরকে হয়তো তাদের দৈনন্দিন কর্মকাণ্ড এবং একাকীত্ব নিয়ে অনেক সংগ্রাম করতে হত।
এছাড়া যেসব সমাজ বিশাল সংখ্যক বয়োবৃদ্ধ জনগোষ্ঠী নিয়ে উত্তরোত্তর বেড়ে চলা স্বাস্থ্যসেবার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে তাদের জন্যও এই গবেষণাটি বেশ কাজে লাগবে। এ থেকে শিক্ষা নিয়ে সরকারগুলোও বৃদ্ধদের স্বাস্থ্যসেবার জন্য লোককে স্বেচ্ছাসেবায় উৎসাহিত করতে পারে।
অক্সফোর্ড ইকোনমিকস পেপারস এর অনলাইন সংস্করণে গবেষণার ফলাফলটি প্রকাশিত হয়েছে।
সূত্র: ডিএনএ ইন্ডিয়া