এন.আই.মিলন, দিনাজপুর প্রতিনিধি– প্রবাসী বাংলাদেশী আনোয়ার হোসেন ওমান থেকে লাশ হয়ে ফিরল বীরগঞ্জে, অভিযোগ নেয়নি পুলিশ, সাত দিন যাবৎ এলাকায় চলছে শোকের মাতম। অসহায় স্ত্রী লাশের কফিন নিয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরে মামলা করতে ব্যর্থ হয়ে অবশেষে ১০ সেপ্টেম্বর রবিবার দাফন করেছে।
আনোয়ারের স্ত্রী রেহানা বেগমের অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার শতগ্রাম ইউনিয়নের অর্জুন্নাহার গ্রামের সামাদ ওরফে গাহু’র পুত্র আইনাল হকের (ওমান দেশে কর্মরত) প্রায় ৫ লাখ টাকার বিনিময়ে চাকুরী দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে একই এলাকার ইউসুফ আলীর ছেলে আনোয়ার হোসেন (৩৯) ওমানে নিয়ে যায়। কিন্তু কাজ দিতে না পারায় এবং নির্যাতনের কারনে ৩ মাসের ব্যবধানে ৩ বার বাড়ী ফিরতে বাধ্য হয়। বাড়ীতে ফিরে প্রতারণার শিকার আনোয়ার হোসেন টাকা ফেরতের দাবী করলে আইনাল হকের বাবা সামাদ ওরফে গাহু, মিজানুর রহমান, আমজাদ হোসেন ও সাবিয়া বেগম তাকে গত ৪ আগষ্ট’২০১৭ তারিখে আবার আইনাল হকের নিকট ওমানে পাঠিয়ে দেয়।
রেহানা জানায় মোবইল ফোনে স্বামীর সাথে তার শেষ কথা হয় ২৯ আগষ্ট’১৭ তারিখে, তার স্বামী তাকে জানিয়েছে আইনাল হক খুব খারাপ আচরণ করছে, তাকে অভুক্ত অবস্থায় একটি ঘরে আটক রেখে শারিরিক নির্যাতন চালাচ্ছে, সে তাকে মেরে ফেলতে পারে। আমাকে এখান থেকে দেশে ফেরৎ নেয়ার চেষ্টা কর। ২ সেপ্টেম্ব’১৭ অন্য এক প্রবাসী বাংলাদেশেী তার আত্মীয়ের মোবাইল ফোনে জানান আমার স্বামী মৃত অবস্থায় ঘরের বাইরে পড়ে আছে। আমি বিষয়টি নিশ্চিত হতে অনেকবার চেষ্টা করেও আইনালের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারি নাই কিংবা সে কোন তথ্য দেয়নি। ঘটনাটি আমি বীরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জকে লিখিতভাবে জানাতে গেলে তিনি বলেন এখন নয় নিহতের লাশ বাড়ীতে এলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ৯ সেপ্টেম্বর শনিবার লাশ ঢাকা বিমান বন্দর হয়ে বাড়ীতে আসলে ইউপি চেয়ারম্যান কেএম কুতুব উদ্দিন মৃত আনোয়ার হোসেনের বাড়ীতে এসে দ্রুত লাশ দাফনের পরামর্শ এবং ঘটনাটি স্থানীয়ভাবে মিমাংসার প্রস্তাব দেন। কিন্তু আমি আমার স্বামীর হত্যাকারীদের বিচারের দাবীতে লিখিত অভিযোগ সহ স্বাক্ষীদের সাথে নিয়ে তাৎক্ষনাত থানায় যাই এবং অফিসার ইনচার্জকে লিখিত এজাহার দেই কিন্তু তিনি আমার অভিযোগ গ্রহন না করে ফিরিয়ে দেন। স্বামীহারা অসহায় মহিলার আহাজারিতে আকাশ পাতাল ভারি হয়ে যায়, শতশত নারী-পুরুষ হৃদয় বিদারক ঘটনায় দু:খ প্রকাশ করতে দেখা গেছে। রবিবার সকালে লাশ পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদশির এলাকাবাসী ও নিহতের স্ত্রী জানান কফিন খুলে দেখা যায় লাশের শরীরের বিভিন্ন স্থানে পেটে ও নাকে ক্ষতর চিহ্ন, জখম রয়েছে। অভিযুক্ত আইনাল হকের বাবা জানায় এ ঘটনায় আমি বা আমার পরিবারের কেউ জড়িত নয়, আইনাল হক পৃথক জীবন যাপন করে, ওরাই ভাল জানে কার কি দোষ।
অফিসার ইনচার্জ বীরগঞ্জ থানায় মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে পাওয়া যায়নি, ইন্সেপেক্টর তদন্ত বলেন ঘটনাটি তার জানা নেই।