স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহঃ
নাছরিন আক্তার নামে এক নারী হিজড়াকে বিয়ের ফাঁদে ফেলে ১৯ লাখ টাকা আত্মসাতের দায়ে ঝিনাইদহের শৈলকুপার লুসানুর রহমান (লুসান) নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মানিকগঞ্জের বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে ৩ জনের বিরুদ্ধে এই মামলা করেন নাছরিন আক্তার। মামলার অন্যান্য আসামীরা হলেন, লুসানের পিতা খাসিয়ার রহমান ও মা দিপিকা বেগম। মামলার রেকর্ড সুত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে নারী হিজড়া নাছরিনের সঙ্গে পরিচয় হয় শৈলকুপা উপজেলার বিজুলিয়া গ্রামের খাসিয়ার রহমানের ছেলে লুসানের। লুসান তখন তেজগাঁও পলিটেকনিক্যাল কলেজের ছাত্র ছিল। নাছরিনের আদি বাড়ি খুলনা হলেও তিনি মানিকগঞ্জ জেলার শিবালয় উপজেলার নিহন্দ গ্রামে বসবাস করেন। তার পিতার নাম আব্দুল গাফফার শেখ। পরিচয় থেকে পরিণয়ের দিকে গড়ায় নাছরিন লুসানের সম্পর্ক। ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারী নোটারি পাবলিকে ৫ লাখ টাকা দেনমোহর ধার্যে তাদের বিয়ে হয়। এজাহারে বাদীর ভাষ্যমতে বিয়ের আগে ও পরে স্ট্যাম্পে চুক্তিপত্রের মাধ্যমে লুসান ব্যবসার কথা বলে ১৫ লাখ টাকা নিয়েছে। পরে আরো ৪ লাখসহ সর্বমোট ১৯ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে। টাকা নেওয়ার পর লুসান স্ত্রী নাসরিনকে এড়িয়ে চলে। টাকার জন্য ঘুরতে থাকলে লুসান বিভিন্ন সময় হুমকি ধামকি ও সে কোন টাকা নেয়নি বলে অস্বীকার করতে থাকে। নিরুপায় হয়ে নাছরিন স্বামী লুসানের বিরুদ্ধে মানিকগঞ্জের আদালতে ২০১৮ সনের যৌতুক নিরোধ আইনের ৩ ধারায় মামলা দায়ের করেছে। যার নং সিআর-১৩০/২০। সে সময় টাকা ফেরৎ ও ঘর করার প্রলোভন দেখিয়ে লুসান মামলা তুলতে বলে। প্রথম মামলা উঠানোর পর থেকেই প্রথম স্ত্রী নাছরিনের সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় লুসান। শৈলকুপায় বাড়ি পুলিশের উর্ধ্বতন এক কর্মকর্তার নাম ভাঙ্গিয়ে লুসান নারি হিজড়া নাছরিনকে হুকমী দিচ্ছে। উপায় না পেয়ে নাছরিন আদালতে মামলা করেন। স্বপন নামে নাছরিনের এক আত্মীয় জানায়, নাছরিন ও লুসান কলকাতা বেড়াতে গেলে লুসান একটি আবাসিক হোটেলে নিয়ে নাছরিনকে হত্যার চেষ্টা চালায়। মাথায় আঘাত করে নাসরিনকে ঘরে ফেলে নগদ টাকা নিয়ে চম্পট দেয়। শৈলকুপার মনোহরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোস্তফা আরিফ রেজা মন্নু ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, লুসানের সঙ্গে নারী হিজড়া নাছরিনের বিয়ে হয়েছে। বিয়ের সুত্রে বিজুলিয়া গ্রামে দীর্ঘদিন সংসার করেছে নাসরিন। তৃতীয় লিঙ্গের ব্যক্তিকে বিয়ে করার বিষয়টি প্রথমদিকে এলাকায় মুখরোচক হলেও এর বাস্তবতা ভিন্ন। অসহায় নাসরিনকে ঠকিয়ে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনা এলাকার মানুষ জানে। এ বিষয়ে অসহায় নাসরিন ও তার পরিবার অনেকবার আমার কাছে এসেছে, তাদেরকে আইনী আশ্রয় নিতে পরামর্শ দিয়েছি । এ সংক্রান্তে বাদীর নিকট অডিও ভিডিও স্থিরচিত্রসহ নানা তথ্য প্রমান রয়েছে বলে জানা গেছে।