চুয়াডাঙ্গার ঝিনাইদহ বাসস্টান্ডে বাস-মোটরসাইকেল সংঘর্ষ, চালক আহত
নিউজ ডেস্ক:চুয়াডাঙ্গার ঝিনাইদহ বাসস্ট্যান্ডে উল্টোপথে আসা বাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে আশরাফুল ইসলাম পলাশ (২১) নামের এক মোটরসাইকেলের চালক গুরুতর আহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাতটার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ সময় উত্তেজিত জনতা বাসটির গতিরোধ করে ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ ঘটনায় চুয়াডাঙ্গা-ঝিনাইদহ সড়কে ঘণ্টাব্যাপী যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয় এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা বাসের আগুন নেভান। তবে বাসের চালক-হেলপারসহ কোনো সাধারণ যাত্রীর ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে জানা গেছে।চুয়াডাঙ্গার ঝিনাইদহ বাসস্ট্যান্ডে উল্টোপথে আসা বাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে আশরাফুল ইসলাম পলাশ (২১) নামের এক মোটরসাইকেলের চালক গুরুতর আহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাতটার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ সময় উত্তেজিত জনতা বাসটির গতিরোধ করে ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ ঘটনায় চুয়াডাঙ্গা-ঝিনাইদহ সড়কে ঘণ্টাব্যাপী যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয় এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা বাসের আগুন নেভান। তবে বাসের চালক-হেলপারসহ কোনো সাধারণ যাত্রীর ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে জানা গেছে।প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার সাতগাড়ীর মুকুল হোসেনের ছেলে আশরাফুল ইসলাম পলাশ পেশায় একজন গাড়িচালক। তিনি বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সাধারণ সম্পাদক ডা. আব্দুল লতিফের ব্যক্তিগত গাড়িচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। প্রতিদিনের ন্যায় গতকাল মঙ্গলবার সকালে মোটরসাইকেলযোগে ডিউটিতে যাচ্ছিলেন পলাশ। পথের মধ্যে ঝিনাইদহ বাসস্ট্যান্ড মোড় থেকে একটু সামনে যেতেই ভুল পথে আসা বরিশালগামী আলসানি পরিবহনের একটি বাস (ঢাকা মেট্রো-ব-১৪-৭১৪৫) তাঁর মোটরসাইকেলটিকে সামনে থেকে সজোরে ধাক্কা দেয়। বাসের ধাক্কায় মোটরসাইকেল থেকে সড়কের ওপর আছড়ে পড়ে গুরুতর আহত হন পলাশ। তাঁকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার স্বার্থে তাঁকে রাজশাহীতে স্থানান্তর করেন।এদিকে, আলসানি পরিবহনের মালিক মেহেরপুরের আবুল হাশেম বাদী হয়ে বাস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় একটি মামলা করেছেন। এ মামলায় অভিযুক্ত চারজনকে আটক করে গতকালই আদালতে পাঠায় পুলিশ। আদালত আসামি চুয়াডাঙ্গা সাতগাড়ী নতুনপাড়ার জিল্লু শেখের ছেলে জনি শেখ (২২), বাবুর ছেলে পলাশ আহমেদ জয় (২৪), সোবহান আলীর ছেলে মোমিন আহমেদ (২১) ও পরি সাহার ছেলে সুমন সাহাকে (২২) জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।এ প্রসঙ্গে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ ফকরুল আলম খান বলেন, মেহেরপুর থেকে ছেড়ে আসা বরিশালগামী আলসানি পরিবহনের একটি বাস চুয়াডাঙ্গা-ঝিনাইদহ মহাসড়কের ঝিনাইদহ বাসস্ট্যান্ড নামক স্থানে একটি মোটরসাইকেলকে সামনে থেকে ধাক্কা দেয়। বাসের ধাক্কায় চালক পলাশ গুরুতর আহত হন।
এ ঘটনায় স্থানীয় জনতা উত্তেজিত হয়ে বাসটি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন। খবর পেয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয় পুলিশ। সদর হাসপাতালের জুনিয়র সার্জারি কনসালট্যান্ট এহসানুল হক তন্ময় বলেন, আহত মোটরসাইকেলচালক মাথায় বড় ধরনের আঘাত পেয়েছেন। তাঁকে তাৎক্ষণিক উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। এদিকে, খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মেহেরপুর থেকে ছেড়ে আসা আলসানি পরিবহনের বাসটি গতকাল সকাল ৬টা ৫০ মিনিটে চুয়াডাঙ্গা থেকে বরিশালের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। বাসের চালক ছিলেন মেহেরপুরের আব্দুর রহমান। সকাল সাতটার দিকে রেলগেট পার হয়ে ঝিনাইদহ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় উল্টোপথে চলতে গিয়ে মোটরসাইকেলের সঙ্গে বাসটির এ মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় হোটেল মালিক শুভ জানান, মোটরসাইকেলচালক আশরাফুল ইসলাম নিয়ম মেনে বাঁ দিক দিয়েই যাচ্ছিলেন। কিন্তু সড়ক বিভাজক থাকার পরও আলসানি পরিবহনের যাত্রীবাহী বাসটি উল্টোদিকে দ্রুতগতিতে চলছিল। রাস্তার কিছুটা সামনে একটি গতিরোধক থাকায় প্রায়ই বাস-ট্রাককে এভাবে উল্টোপথে চলতে দেখা যায়। দুর্ঘটনার পর বাসের যাত্রীরা নেমে পড়েন। এরপর বাস ফেলে পালাতে গেলে ড্রাইভার ও হেলপারকে আটক করে স্থানীয় লোকজন। খবর পেয়ে তাঁদের নিজেদের জিম্মায় নিয়ে যান চুয়াডাঙ্গা জেলা বাস-ট্রাক সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রিপন ম-ল ও আলসানির চুয়াডাঙ্গা কাউন্টার মাস্টার প্রিন্স। তিনি আরও জানান, দুর্ঘটনার প্রায় ৪০ মিনিট পর উত্তেজিত জনতা বাসটিতে আগুন লাগিয়ে দেয়। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স চুয়াডাঙ্গার সহকারী উপপরিচালক আবদুস সালাম বলেন, সকাল ৭টা ৪০মিনিটে তাঁরা বাসে আগুন লাগার সংবাদ পান। চুয়াডাঙ্গা স্টেশন থেকে দ্রুত তিনটি ইউনিট এসে আগুন নেভাতে সক্ষম হয়।