নিউজ ডেস্ক:
ঠাণ্ডা যুদ্ধের সময় প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য কতকিছু যে করা হয়েছিল, এবার পরিবেশ পরিবর্তনের পরিণামে একটু একটু করে প্রকাশ্যে আসছে সেইসব কাণ্ডকারখানা। সম্প্রতি জিওফিজিকাল রিসার্চ লেটার্সে প্রকাশিত হয়েছে আমেরিকার একটি সামরিক ঘাঁটির কথা যা ১৯৫০-এর দশকে ড্যানিশ সরকারের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে তৈরি করা হয়েছিল বরফের নিচে। পরিবেশের পরিবর্তনের ফলে ধীরে ধীরে সেই গোপন সামরিক ঘাঁটি প্রকাশ্যে আসছে। ১৯৫০-এর দশকে একদিকে আমেরিকা ও অন্যদিকে সোভিয়েতকে কেন্দ্র করে ঠাণ্ডা যুদ্ধ যখন তুঙ্গে তখনই আমেরিকা সরকার ড্যানিশ সরকারের সঙ্গে হাত মিলিয়ে গ্রিনল্যান্ডের বরফের স্তরের নিচে একটি সামরিক ঘাঁটি তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেয়। মাটির থেকে ৮ মিটার নিচে গড়ে তোলা হয় এই সামরিক ঘাঁটি, যা একটি ছোটখাটো শহরের তুল্য। বড় বড় বিল্ডিং এবং অস্ত্রাগার গড়ে ওঠে বরফের গর্ভে। গোটা বিষয়টিই ছিল প্রজেক্ট আইসওয়ার্মের অঙ্গ। যে প্রজেক্টের লক্ষ্য ছিল, উত্তর মেরুতে মিসাইল লঞ্চার বসানোর বন্দোবস্ত করা। সেই কারণেই মেরুদেশের গর্ভে গড়ে তোলা হয় সামরিক ঘাঁটি। বর্তমানে গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের কারণে গলে যাচ্ছে গ্রিনল্যান্ডের বরফ। তাতেই একটু একটু দিনের আলোর মুখ দেখছে এই গুপ্ত ঘাঁটিটি। কিন্তু বর্তমানে পরিত্যক্ত এই সামরিক ঘাঁটি প্রকাশ্যে আসার পরে অন্যরকম বিপদের আশঙ্কা করছেন পরিবেশ বিজ্ঞানীরা। কানাডার ইয়র্ক ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক উইলিয়াম কোলগান জানাচ্ছেন, ‘যে কর্তৃপক্ষ এই ঘাঁটি নির্মাণ করেছিলেন, তারা বোধ হয় ভাবেননি যে, কখনো এই সামরিক ঘাঁটির উপরের বরফের আচ্ছাদন সরে যেতে পারে। এখন সেটাই ঘটছে, এবং তার ফলে আশপাশের অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ছে তেজস্ক্রিয়তা এবং সামরিক অস্ত্র থেকে নিঃসৃত বর্জ্য।’ এর ফলে গুরুতর ক্ষতি ঘটে যাচ্ছে পরিবেশের। ‘এই ক্ষতির হাত থেকে পরিবেশকে রক্ষা করাই এখন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ’, বলেন কোলগান। এই চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি কীভাবে দাঁড়াতে পারে আধুনিক বিজ্ঞান, সেটাই এখন দেখার বিষয়।