মোঃ সুমন আলী খাঁন, হবিগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ নবীগঞ্জ উপজেলার রিফাতপুর গ্রামে ৩ মাসের বকেয়া বিদ্যুৎ বিলের জন্য সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার কারনে হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির নবীগঞ্জ জোনাল অফিসের দুই কর্মীকে বেধরক মারপিঠের অভিযোগ উটেছে বাউসা ইউপি চেয়ারম্যান আবু সিদ্দিকের বিরুদ্ধে। চেয়ারম্যানের প্রহারে গুরুতর আহত হন বিদ্যূৎ অফিসের ওয়ারিং ইন্সপেক্টর নজরুল ইসলাম ও লাইনম্যান আব্দুল্লা মোল্লা। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে। ঘটনার খবর পেয়ে নবীগঞ্জ থানা পুলিশের সহযোগিতায় বিদ্যুৎ অফিসের ইন্সপেক্টর তাদেরকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা করিয়েছেন।
এদের মধ্যে এক জনের অবস্থা গুরুতর বলে সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে। সূত্রে জানাযায়, হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির নবীগঞ্জ জোনাল অফিস বকেয়া বিদ্যুৎ বিল আদায়ে ব্যর্থ হয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন কার্যক্রম শুরু করেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে রিফাতপুর গ্রামে বাউসা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক আবু সিদ্দিকের নামীয় হিসাব নং ৫৬৫/৪৯২০ নং মিটারের ৩ মাসের বকেয়া বিদ্যুত বিল ১ হাজার ৬ শত ৩ টাকা এবং চেয়ারম্যানের সহোদর আবুল ফজল নামীয় হিসাব নং ৪৯২৩ নং মিটারে ৩ মাসের বকেয়া ৪ হাজার ৫ শত ৪৫ টাকা বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের জন্য একাধিকবার তাগিদ দিলেও তা আদায় না হওয়ায় লাইন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে যায়। এ সময় বিদ্যুৎ অফিসের ওয়ারিং ইন্সপেক্ট নজরুল ইসলামের নিদের্শে লাইন ম্যান আব্দুল্লা মোল্লা (২৩) চেয়ারম্যান আবু সিদ্দিকের মিটার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন। এ কারণেই ক্ষিপ্ত হয়ে চেয়ারম্যান আবু সিদ্দিক ঘর থেকে বের হয়ে লাটি দিয়ে বেদরক মারপিট শুরু করেন। তার নির্মম আঘাতে ওয়ারিং ইন্সপেক্টর নজরুল ইসলাম (৪২) এবং লাইনম্যান আব্দুল্লা মোল্লা (২৩) মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। ঘটনার খবর পেয়ে বিদ্যুত বিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা নবীগঞ্জ থানার একদল পুলিশের সহযোগিতায় তাদেরকে উদ্ধার করেন। এস আই প্রদ্যুৎ ঘোষ জানান, আহতদের নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে আহত ওয়ারিং ইন্সপেক্টর নজরুল ইসলাম জানান, তারা বাড়িটি চেয়ারম্যানের তা জানতেন না। জানার পর সংযোগটি আবার লাগানো হয়। কিন্তু রক্ষা হয়নি তাদের, ক্ষিপ্ত ইউপি চেয়ারম্যান আবু সিদ্দিক তাদের বেধরক মারপিট করলেন। এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান আবু সিদ্দিকের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি মারপিটের কথা অস্বীকার করে বলেন, এ ধরনের কোন ঘটনা ঘটেনি, তবে ভূলবুঝাবুঝি হয়েছিল তা সমাধান করা হয়েছে। এ ঘটনায় তিনি পল্লী বিদ্যূতের ডিজিএম এর সাথে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করেন।
এ ব্যাপারে পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএম আব্দুল বারীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি মারপিটের ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, চেয়ারম্যান আবু সিদ্দিক নিজ হাতে আইন তুলে নিয়েছেন। এ ঘটনায় আইনানুক ব্যবস্থ্যা গ্রহন করা হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ডিজিএম বলেন, ইউপি চেয়ারম্যানসহ রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের অনুরোধে আইনানুক ব্যবস্থ্যা গ্রহন করতে পারলাম কই?
এ ঘটনায় সচেতন মহলে আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইছে।