বিপ্লব নাথ (চট্টগ্রাম) : নির্বাচিত হওয়ার পর অনেক কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হতে হয়েছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আলহাজ্ব আ.জ.ম.নাছির উদ্দিনের। বিভিন্ন সময় প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে নগর বাসীর দুর্ভোগেই যেন লেগে থাকে প্রায়ই। নগরবাসিকে পর্যাপ্ত সেবা ও নগরীর উন্নয়নে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেও বিশেষ কোন সুফল পাওয়া যাচ্ছিল না। চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা ও জনদুর্ভোগ কমাতে সরকারের পরিষেবা সংস্থাগুলোকে সিটি করপোরেশনের সঙ্গে সমন্বয় করে উন্নয়নকাজ পরিচালনায় বাধ্য করতে পরিকল্পনামন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন।
এবিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জারি করা পরিপত্রের নির্দেশনা বাস্তবায়নে সহযোগিতা চেয়ে আ হ ম মুস্তফা কামালের কাছে সম্প্রতি চিঠি পাঠিয়েছেন তিনি।
চিঠিতে বলা হয়েছে, “চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের অবকাঠামোয় (রাস্তা, ড্রেন, কালভার্ট ও ব্রীজ) বিভিন্ন সরকারি সংস্থা কর্তৃক নিজস্ব উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের পূর্বে সিটি কর্পোরেশনকে অবগতকরণ ও ছাড়পত্র গ্রহণের বিষয়ে আপনার সহৃদয় সহযোগিতা ও হস্তক্ষেপ কামনা করছি।”
গত বছরের ১৭ জুন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জারি করা এক পরিপত্রে বলা হয়, সিটি করপোরেশন এলাকায় সেবাদাতা সংস্থাসহ সরকারি দপ্তরের প্রধানরা সিটি করপোরেশনের সভায় অংশ নেবেন। তারা সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবেন এবং বাস্তবায়নের অগ্রগতি সিটি করপোরেশনকে জানাবেন।
এ বিষয়ে মেয়র আ জ ম নাছির বলেন, “আসলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে পরিপত্র জারির পর থেকে সবাই সে অনুযায়ী কাজ করার চেষ্টা করছে।
“নতুন করে গৃহায়ন ও গণপূর্ত, পানি সম্পদ বা নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় যদি প্রকল্প অনুমোদন পায় সেক্ষেত্রে তারা যেন সিটি করপোরেশনের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রকল্প বাস্তবায়ন করে সে বিষয়টি পরিকল্পনামন্ত্রীকে জানানোর জন্যই মূলত আমরা চিঠি দিয়েছি।”
চট্টগ্রামের মেয়র জানান, এসময়ের মধ্যে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) ছাড়া আর কেউ নতুন প্রকল্প পায় নি। চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে গৃহীত ওই প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী স্থানীয় সরকারমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে প্রধান করে কমিটি গঠন করা হয়েছে।
পরিকল্পনামন্ত্রীর কাছে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, “চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের অবকাঠামোয় (রাস্তা, ড্রেন, কালভার্ট, ব্রীজ) বিভিন্ন সংস্থা কর্তৃক নিজস্ব উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের পূর্বে সিটি কর্পোরশনকে অবগত না করে অসমন্বিতভাবে উন্নয়ন কার্যক্রম সম্পাদন করছে।
“সংস্থাগুলোর সঙ্গে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের কোনরূপ সমন্বয় না থাকায় চলমান উন্নয়ন কার্যক্রমে জলাবদ্ধতা, জনদুর্ভোগসহ নানা সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। এতে বর্তমান সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে; সংস্থাগুলো চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনকে প্রকল্প বিষয়ে পূর্বে অবগত না করানোর ফলে অনেক সময় উন্নয়ন কার্যক্রমে (ওভারলেপিং) দ্বৈততা হচ্ছে। সিটি কর্পোরেশন এলাকায় সরকারের যে কোনো উন্নয়ন সিটি করর্পোরেশনকে অবগত করে সম্পাদন করলে চট্টগ্রামে জনদুর্ভোগহীন পরিকল্পিত নগরে পরিণত করা সম্ভব হবে।”