গত বৃহস্পতিবার থেকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যদের কড়া প্রহরায় পূর্বাঞ্চলের চট্টগ্রাম থেকে জ্বালানি তেলবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছিল। ওই দিন থেকে ঢাকা, সিলেট এবং চট্টগ্রামের হাটহাজারী ও দোহাজারীতে তেলবাহী ট্রেন চলাচল করতে থাকে।
চার দিনের মাথায় এসে গতকাল থেকে জ্বালানি তেল পরিবহন সীমিত করা হয়েছে।
কবে নাগাদ সারা দেশে যাত্রী, পণ্যসহ সব ট্রেন চলাচল শুরু হবে তা নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) দুপুরে রেল ভবনে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। বৈঠকে রেলমন্ত্রী, রেলওয়ে সচিব, রেলের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত থাকবেন।
জানা গেছে, গত ১০ দিনে শুধু এই অঞ্চলে (রেলের ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগ) যাত্রী ও পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় অন্তত ৩০ কোটি টাকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হয়েছে রেলওয়ে। এছাড়া বগিসহ বিভিন্ন ট্রেনে অগ্নিসংযোগের কারণে পূর্বাঞ্চল রেলওয়েতে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ পাঁচ কোটি টাকা।
এদিকে গত বৃহস্পতিবার থেকে বিভিন্ন বিদ্যুকেন্দ্রে ব্যবহারের জন্য ওয়াগনে জ্বালানি তেলবাহী ট্রেন বিজিবির প্রহরায় চলাচল শুরু হলেও সোমবার থেকে এই ট্রেন চলাচলও সীমিত করা হয়েছে।
রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম-ঢাকা ও চট্টগ্রাম-রংপুরগামী জ্বালানি তেলবাহী ট্রেনে আপাতত বিজিবির পাহারা না থাকায় এসব রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে বিজিবি পাহারায় চট্টগ্রাম-সিলেট, চট্টগ্রাম-দোহাজারী রুটে তেলবাহী ট্রেন চলাচল অব্যাহত থাকবে।
এছাড়া চট্টগ্রাম-হাটহাজারী রুটে তেলবাহী ট্রেনে বিজিবির সদস্যরা পাহারায় না থাকলেও সংস্থাটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, হাটহাজারীতে থাকা বিজিবি সদস্যরা টহলে থাকবেন। তবে এতে সম্মতি নেই রেলওয়ের।
পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম সোমবার দুপুরে তাঁর কার্যালয়ে সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘যাত্রী ও পণ্যবাহী ট্রেন চলাচলের বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে শিগগিরই এই ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ’
পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের প্রধান বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘পূর্বাঞ্চলে গত মে মাসে রেলের আয়ের হিসাবের সঙ্গে তুলনা করে দেখা যায়, এখন প্রতিদিন গড়ে দুই কোটি ৯৬ লাখ ২০ হাজার ৩২২ টাকা ৫৮ পয়সা করে ক্ষতি হচ্ছে। ’
একই অঞ্চলের অতিরিক্ত মহাব্যবস্থাপক সুশীল কুমার হালদার বলেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় দুষ্কৃতকারীদের নাশকতায় পূর্বাঞ্চল রেলের চারটি বগি (যাত্রীবাহী কোচ) পুড়ে যায়। এ ছাড়া আরো বিভিন্ন সম্পদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব মিলিয়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ পাঁচ কোটি টাকা। যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। আগাম বিক্রি করা টিকিটের টাকা ফেরত দেওয়া হবে। ’
চট্টগ্রাম বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার আনিছুর রহমান বলেন, ‘এখন চট্টগ্রাম-সিলেট ও চট্টগ্রাম-দোহাজারী রুটে জ্বালানি তেলবাহী ট্রেন চলাচলের সময় বিজিবি সদস্যরা নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন। তবে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী ও রংপুরগামী তেলবাহী ট্রেন চলাচল আপাতত বন্ধ থাকবে। তারা (বিজিবি) জানিয়েছে, হেডকোয়ার্টার্স থেকে অনুমোদন পাওয়া গেলে এসব রুটেও দায়িত্ব পালন করবে। ’