বেসরকারি ফার্নেস তেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো ২৭ মাস ধরে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সরকারি নির্দেশনা মানছে না, যার ফলে দেশজুড়ে লোডশেডিং পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এ সময়ে কেন্দ্রগুলো অলস বসিয়ে রেখে কেন্দ্রভাড়া আদায় করেছে, কিন্তু কোনো জরিমানা দেওয়া হয়নি।
চুক্তি অনুসারে, বছরে ১০ শতাংশ সময় বন্ধ রাখতে পারলেও বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো আড়াই বছর ধরে বন্ধ থাকার পরও এটির হিসাব করছে না বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)।
পিডিবির কর্মকর্তারা বলছেন, এই হিসাব করলে তাদের ৪০ শতাংশ খরচ কমানো সম্ভব হতো। বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রের বকেয়া বিল জমতে থাকায় তারা বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ রাখে। দাবি পূরণের শর্তে পিডিবি ২০২২ সালের জুলাই থেকে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ শুরু করে, যার অনুমোদন বিদ্যুৎ বিভাগের ছাড়াই তৎকালীন চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান বোর্ডে অনুমোদন করেছিলেন। এর ফলে সরকার বন্ড ছেড়ে বেশির ভাগ বকেয়া পরিশোধ করে এবং এখনো বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো সেই সুবিধা পাচ্ছে।
এ ব্যাপারে মাহবুবুর রহমান বলেন, বকেয়া বিল পরিশোধে পিডিবি হিমশিম খাচ্ছিল। তাই আউটেজের টাকা আদায় স্থগিত করা হয়েছিল, বাতিল করা হয়নি। না হলে বিদ্যুৎকেন্দ্র চালাতে পারত না। তাঁর দাবি, বিদ্যুৎ বিভাগের পরামর্শে সিদ্ধান্ত নিয়ে বিদ্যুৎ বিভাগকে তা অবহিত করা হয়েছিল। তবে বিদ্যুৎ বিভাগের লিখিত অনুমোদন ছাড়া পিডিবি কি চুক্তির শর্ত স্থগিত করতে পারে? এমন প্রশ্নে তার কাছ থেকে কোনো উত্তর মেলেনি।
পিডিবির চাহিদামতো বিদ্যুৎ সরবরাহে ব্যর্থ হলে চুক্তি অনুযায়ী জরিমানা আদায় এবং কেন্দ্রভাড়া হিসাব করে সরকারের অতিরিক্ত ব্যয় কমানোর সুপারিশ করেন ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা এম শামসুল আলম।
তিনি বলেন, বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো ইচ্ছাকৃতভাবে উৎপাদন বন্ধ রেখে ভাড়া নিচ্ছে যা চুক্তির লঙ্ঘন। এজন্য তাদের চুক্তি বাতিল ও জরিমানা আদায় করা প্রয়োজন।