সিলেটের জেলা প্রশাসক (ডিসি) হিসেবে গতকাল সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) নিয়োগ পান পি কে এম এনামুল করিম। তবে নিয়োগের ২৪ ঘণ্টা না পেরোতেই তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তার জায়গায় সিলেটের নতুন ডিসি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের উপসচিব শের মাহবুব মুরাদ।
আজ মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এক প্রজ্ঞাপনে শের মাহবুব মুরাদকে নিয়োগ ও এনামুল করিমকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।
এনামুল করিম জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। এর আগে, ২০১৪ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ফেনী শহরের এসএসকে সড়কে ভ্রাম্যমাণ আদালতের পরিচালনার সময় এক ব্যাংক কর্মকর্তাকে প্রকাশ্যে চড়-থাপ্পড় মেরেছিলেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পি কে এম এনামুল করিম। সেই ঘটনায় বিব্রত হয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
পি কে এম এনামুল করিমের বিরুদ্ধে আরও বড় অভিযোগ ২০১৯ সালে ফেনীর নুসরাত হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্তদের বাঁচাতে তার সবধরনের প্রচেষ্টা চালানো। মৃত্যুর আগে নুসরাত জাহান রাফি ও তার মা শিরিন আক্তার ন্যায়বিচারের আশায় তার কাছে গিয়েছিলেন। তবে বিচার দূর, তার বিরুদ্ধে ওঠে মামলাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার অভিযোগ।
নুসরাতের মৃত্যুর আগে তার মা শিরিন আক্তারকে হুমকি দিয়ে এনামুল করিম বলেছিলেন, ‘আপনারা প্রিন্সিপাল সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে যে মামলা করেছেন, তা প্রমাণ করতে না পারলে আপনাদের বিরুদ্ধে প্রিন্সিপালের লোকজন ৫০ লাখ টাকার মানহানি মামলা করবে। জেলার সরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার এমন কথায় মানসিকভাবে আরো ভেঙে পড়েন নুসরাত। শিরিন আক্তার আরো বলেন, ‘অধ্যক্ষের কক্ষে আমার সামনে নুসরাত অজ্ঞান হয়ে গেলে তার মুখে পানি ছুড়ে মেরেছিলেন সোনাগাজী থানার এসআই ইকবাল। ’
অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলার লোকজনের দেওয়া আগুনে পুড়ে নুসরাত জাহান রাফির মৃত্যুর পর ২০১৯ সালের ১৮ এপ্রিল তার মা পুলিশের কাছে দেওয়া জবানবন্দিতে এসব তথ্য তুলে ধরেন।
সিলেটের ডিসি হিসেবে নিয়োগের পর এমন সব সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পরেই তাকে প্রত্যাহার করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।