নিউজ ডেস্ক:
রাজধানীতে র্যাব ও সিআইডির পৃথক অভিযানে নারী পাচারকারী চক্রের ১৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা বলছে, চক্রটি অবৈধভাবে বিমান, স্থল ও নৌপথের মাধ্যমে ভারত, মালয়েশিয়া, চীন, থাইল্যান্ড, মধ্যপ্রাচ্য, সিঙ্গাপুর, ইউকে, ইউএসএ, ইতালি, কানাডা, বলিভিয়া, মোসাম্বিক, নিউজিল্যান্ডসহ বেশ কয়েকটি দেশে মানুষ পাঠাত। পাচার হওয়া নারীদের জোরপূর্বক শ্লীনতাহানি করা হতো। র্যাব ও সিআইডি কর্মকর্তারা এতথ্য জানান।
গত বুধবার দুপুরে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) কর্নেল আনোয়ার লতিফ জানান, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ও নারায়ণগঞ্জ থেকে র্যাব-৩ সদস্যরা ১৬ জনকে গ্রেফতার করে। তারা হলেন- ওয়াহেদুর রহমান, সুব্রত দাশ, হানিফ, ওমর ফারুখ, জামান জালালী, রমজান আলী, রফিকুল ইসলাম, ফখরুল ইসলাম, মোয়াজ্জল হোসেন, আবু তালেব, খায়রুল আলম, ফররুল ইসলাম, হাসান মিয়া, রাজবীর হোসেন, আকতার হোসেন ও ফখরুল ইসলাম। এ সময় তাদের কাছ থেকে ২১টি পাসপোর্ট, এক হাজার ৯৮১টি বিভিন্ন দেশের জাল ভিসা, একটি আইডি কার্ড, ১৬টি ফয়েল মেশিন, একটি ফটোকপি মেশিন, চারটি প্রিন্টার, একটি কম্পিউটার মনিটর, দু’টি লেমিনেটিং মেশিন, একটি সিপিইউ, দু’টি কাঠের ফ্রেম, ১০১টি সিল মোহর, ১০টি স্ক্যানার মেশিন, একটি ল্যাগেজ, ৮৫০টি পুলিশ ক্লিয়ারেন্স ফরম, ৩৫টি কুয়েত দিনার স্টিকার, সাতটি মোবাইল, তিনটি এটিএম কার্ড এবং প্রায় ১২ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়।
তিনি বলেন, এক শ্রেণির দালাল চক্র স্বল্প আয়ের মানুষদের প্রলোভন দেখিয়ে বিদেশে পাচার করে। গ্রেফতার হওয়া চক্রটির জনশক্তি রফতানির বৈধ কোনো কাগজপত্র নেই। ২০০৭ সাল থেকে তারা বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন রাষ্ট্রে মানবপাচার করে আসছে। চক্রটি অবৈধভাবে বিভিন্ন মাধ্যমে বিভিন্ন দেশে মানুষ পাঠাত।
এদিকে গত মঙ্গলবার রাতে গুলিস্তানের একটি শপিংমল থেকে নারী পাচারকারী চক্রের মূলহোতা আজিজ শিকদারকে গ্রেফতার করে পুলিশের আপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ দুপুরে সিআইডি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিশেষ পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম একথা বলেন।
তিনি জানান, এক নারী ভিকটিমের অভিযোগের ভিত্তিতে নারী পাচারকারীর মূল হোতা আজিজ শিকদারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আজিজ যে চক্রটির সাথে কাজ করে ওই চক্রটি এখন পর্যন্ত ১৫০ জন নারীকে বিভিন্ন দেশে পাচার করেছে বলে প্রাথমিভাবে তথ্য পাওয়া গেছে। পাচার করার পর তাদের জোরপূর্বক শ্লীনতাহানিসহ বিভিন্ন খারাপ কাজে বাধ্য করা হয়। এছাড়া তাদের শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়। ভিকটিম ওই নারীকেও আজি পাচার করেছিল। তাকে লিবিয়া নেওয়ার কথা বলে সিরিয়ায় নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় তার ওপর শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়।