রফিকুল ইসলাম রফিক, নান্দাইল প্রতিনিধিঃ ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলায় ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগ (আইপিএল) ক্রিকেট আসরকে ক্ষেন্দ্র করে লাখ লাখ টাকার জুয়ার বানিজ্য চলছে। এতে করে নান্দাইল উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে চুরি-ছিনতাই, হামলা-লুটপাট ও হত্যাকান্ড সহ সামাজিক অপরাধ বৃদ্ধি পেয়েছে। উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, ইউনিয়ন পর্যায়ের বাজার গুলোতে এই ক্রিকেট ম্যাচকে কেন্দ্র করে জমজমাট জুয়া খেলা চলে আসছে। গাঙ্গাইল ইউনিয়নের নান্দাইল রোড বাজার, বঙ্গবাজার, বাংলাবাজার, চন্ডিপাশা ইউনিয়নের নান্দাইল চৌরাস্তা বাজার, বাঁশহাটি বাজার, রাজগাতী ইউনিয়নের বড়াইল বাজার, কালীগঞ্জ বাজার, শিমুলতলা বাজার, খারুয়া ইউনিয়নের দেওয়ানগঞ্জ বাজার, শেরপুর ইউনিয়নের পাঁচরুখী বাজার, নান্দাইল ইউনিয়নের ঝালুয়া বাজার, মোয়াজ্জেমপুর ইউনিয়নের কালিয়াপাড়া বাজার, বেতাগৈর ইউনিয়নের শিবিরের বাজার, চামারুল্লা বাজার, মুশুল্লি ইউনিয়নের তারঘাট, আচারগাঁও ইউনিয়নের জামতলা বাজার, বাকচান্দা বাজার ও ধরগাঁও বাজারে জুয়াড়িদের জুয়ার মাধ্যম বলে জানা গেছে। জুয়াড়িদের প্রত্যেকটি ম্যাচেই হচ্ছে জুয়ার মাধ্যম। বিপিএল, আইপিএল, ফুটবলসহ প্রায় সব ধরণের খেলাতেই বিভিন্ন ধরণের বাজি চলে। কখনও টাকা আসে, কখন চলে যায়। শুধু তাই নয় এই ক্রিকেট জুয়ার কারনে ছাত্র-যুবকরা ইয়াবায় আসক্ত হয়ে পড়ছে। বাজারের চায়ের স্টলগুলো বিশেষ করে স্কুল-কলেজ পড়–য়া ছাত্র সহ উঠতি বয়সের যুবক থেকে শুরু করে সেলুনের নাপিত, বিভিন্ন শ্রমজীবী, হোটেলের মেসিয়ার, টমটমের ড্রাইভার জুয়ায় আসক্ত হয়ে পড়েছে। ফলে এলাকায় আইন শৃংখলা পরিস্থিতির চরম অবনতি হচ্ছে। এলাকায় চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, রাহাজানির মত বিভিন্ন ধরনের অসমাজিক কর্মকান্ড বৃদ্ধি পাচ্ছে। যেভাবে জুয়া হচ্ছে, কে কোন দল নিবে, কত রানে জিতবে, কয় উইকেটে জিতবে, প্রথম ছয় ওভারে কত নিবে, এক ওভারে কত নিবে, কোন ব্যাটসম্যান কত রান করবে ইত্যাদির মাধ্যমে লাখ লাখ টাকার জুৃয়ার বানিজ্যে চলছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জুয়াড়ির সাথে কথা বললে জানা গেছে, প্রথম ৮ ম্যাচে প্রায় ৫০ হাজার টাকা লাভ হয়ছিল। কারন এই ৮ ম্যাচে যেদল পরে ব্যাট করছিল সেদলই জিতে ছিল বলে তার কাছ হতে জানা গেছে। টাকার অভাবে কেউ কেউ দামি মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, মোটরসাইকেল, মায়ের/স্ত্রীর সোনার গহনাসহ নানা দামি জিনিসপত্র বন্ধকও রাখছে।” এই সব জুয়া বন্ধের জন্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন এলাকার সচেতন নাগরিকরা। বাজি হেরে বিভিন্ন ধরনের মাদক সেবন গ্রহন বৃদ্ধি পাচ্ছে। অভিভাবকদের সাথে কথা বলে জানাগেছে, তারা ঘরে বসেই এন্ড্রয়েড মোবাইল ফোনের সহযোগীতায় ভারতের আইপিএল খেলার বাজির টাকা বিকাশের মাধ্যমে প্রতিপক্ষের মাঝে টাকা পাঠায়।” আইন বলছে, খেলার নামে এমন জুয়া দÐনীয় অপরাধ। তবে আইপিএল জুয়া বন্ধে প্রশাসনের তেমন কোনো নজরদারি নেই। উক্ত জুয়ার আসর বন্ধ করার জন্য প্রসাশনের সর্বোচ্চ পর্যায়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন নাগরিকবৃন্দ। বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন নান্দাইল উপজেলা শাখার নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে প্রত্যেকটি চায়ের দোকানে এই সমস্ত জুয়া বন্ধে মোবাইল কোর্ট বসানোর দাবী জানান।