শুক্র ও শনিবার (২০শে ও ২১শে অক্টোবর) এই দু’দিনের টানা বর্ষণ ও ঝড়ো হাওয়ার কবলে পড়ে এই অভয়াশ্রমের পাখির বাসা ভেঙে যায়। এতে পাখি ও পাখির বাচ্চাগুলো মাটিতে পড়ে যায় এবং অধিকাংশ বড় পাখি বিভিন্ন বাড়ির আঙিনায় ও মাঠের ফসলের জমিতে পড়ে অসুস্থ হয়ে যায়।
খবর পেয়ে শনিবার নাটোর থেকে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার তৎপরতা চালায়। পরে রাজশাহী থেকে সামাজিক বন বিভাগের দু’জন প্রতিনিধি এসে উদ্ধার কাজে সহায়তা করেন। এসময় তারা ছোট বড় মিলিয়ে ৬৮টি জীবিত পাখি উদ্ধার করেন। এদের মধ্যে বড় পাখি ৩০টি ও বাচ্চা পাখি ৩৮টি। সেগুলো একটি বাড়িতে রেখে আগুন জ্বালিয়ে উত্তাপ দেয়া হচ্ছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মাহমুদুল ইসলাম মুহসিন জানান, দু’দিনের টানা বর্ষণ ও ঝড়ো হাওয়ার কবলে পড়ে সমশখলসী গ্রামের পাখির অভয়াশ্রমের অর্ধ শতাধিক শামুকখোল পাখি মারা যায়। ঝড়ো বাতাসের কবলে পড়ে অভয়াশ্রমের বাচ্চা পাখিগুলি গাছ থেকে নিচে পড়ে এ ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে নাটোর থেকে দমকল কর্মীরা গ্রামে এসে বাড়ি বাড়ি গিয়ে জীবিত পাখি উদ্ধারে তৎপরতা চালায়। পরে রাজশাহী থেকে সামাজিক বনবিভাগের দু’জন প্রতিনিধি নার্সারি সহকারী আলিম উদ্দিন ও ইউসুফ মিঞা এসে উদ্ধার তৎপরতায় দমকল কর্মীদের সহায়তা করেন। পাশাপাশি ঝড়ের কবলে পড়া অসুস্থ পাখিকে তাপ দিয়ে সুস্থ করার চেষ্টা করেন।
শনিবার সকাল থেকে বিকেল তিনটা পর্যন্ত তিনিসহ সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ, সাবেক ইউপি সদস্য ইব্রাহিম হোসেন, পরিবেশ কর্মী জিয়াউল আলম, মামুনুর রশীদসহ গ্রামবাসীদের কয়েকজন ঝড়ো বাতাসের কবলে পড়া পাখি উদ্ধারে তৎপরতা চালান।
এলাকাবাসী জানান, ছোট পাখি বেশি মারা গেছে। আর যে সব পাখি মানুষের বাড়িতে গিয়ে পড়েছে তার মধ্যে অনেক পাখিকে তারা জবাই করে রান্না করে খেয়েছে।
রাজশাহী সামাজিক বনবিভাগের নার্সারি সহকারী আলিম উদ্দিন ও ইউসুফ মিঞা জানান, তারা উদ্ধার করা অসুস্থ ছোট শামুকখোল পাখিকে তাপ দিয়ে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। এ কাজে গ্রামবাসী সহযোগিতা করছেন।
নলডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ( ইউএনও) মোহাম্মদ রেজা হাসান বলেন, খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ফায়ার সার্ভিস ও বন্যপ্রাণি সংরক্ষণ বিভাগ এবং বন বিভাগকে খবর দেয়া হয়। তারা এসে উদ্ধার তৎপরতা চালান এবং পাখিগুলোকে রক্ষা করেন। কেউ যাতে পাখিগুলো না মারে সেজন্য গ্রামবাসীকে সজাগ থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।