নির্বাচন কমিশন বর্তমানে শূন্য রয়েছে। প্রক্রিয়া চলছে নতুন কমিশন গঠনের। তবে কে হবেন চতুর্দশ প্রধান নির্বাচন কমিশনার? কারা হবেন কমিশনার? সে আলোচনা এখন দেশজুড়েই।
এ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গন সরগরম। তবে নতুন সিইসি ও নির্বাচন কমিশনারদের নাম জানতে আরও অপেক্ষা করতে হবে দেশবাসীকে। নতুন ইসি নিয়োগে সার্চ কমিটির কাছে ৫ শতাধিক নাম এসেছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এসব নামের তালিকা তৈরি করছে। দু-এক দিনের মধ্যে তালিকা প্রস্তুত হবে; সে তালিকা নিয়ে বৈঠক করবে সার্চ কমিটি। এরপর ১০ জনের নাম চূড়ান্ত করে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হবে।
সূত্র জানিয়েছেন, বিএনপিসহ ১৭টি দল ও জোট, পেশাজীবী সংগঠন এবং ব্যক্তিগতভাবে অনেকেই নাম জমা দিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে। আইন অনুযায়ী ২১ নভেম্বরের মধ্যে সার্চ কমিটি ১০ জনের নাম চূড়ান্ত করে রাষ্ট্রপতির কাছে জমা দেবে। তবে এবার সিইসি, চার নির্বাচন কমিশনারসহ পাঁচজন থাকবেন কি না তা নিয়ে আলোচনা চলছে।
এদিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার হিসেবে সুশীলসমাজ, সাবেক নির্বাচন কমিশনার, সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তা, বিচারক, শিক্ষক, সিনিয়র সাংবাদিক, আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মীর নাম এসেছে। নিজের নাম যেন সম্ভাব্য ইসিতে স্থান পায় সেজন্য অনেকেই ব্যক্তিগতভাবে চাকরিজীবনের সফলতা, আওয়ামী লীগ আমলে লাঞ্ছনা-বঞ্চনার ফিরিস্তি তুলে ধরছেন জীবনবৃত্তান্তে।
অন্যদিকে সিইসি ও নির্বাচন কমিশনার হিসেবে ৫ শতাধিক নাম মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে জমা পড়লেও আলোচনায় রয়েছে দুই ডজন নাম। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ঘুরেফিরে একই ব্যক্তির নাম দিয়েছে।
সিইসি ও নির্বাচন কমিশনার হিসেবে যাঁদের নাম আলোচনায় রয়েছে তাঁরা হলেন- নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ও সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, সাবেক নির্বাচন কমিশনার এস এম জাকারিয়া, সাবেক সচিব এ এম এম নাসির উদ্দিন, সাবেক সচিব সড়ক ও জনপদ মো. শফিকুল ইসলাম, আবু আলম শহীদ খান, মহিবুল হক, শহিদুল ইসলাম, নির্বাচন কমিশনের সাবেক অতিরিক্ত সচিব ড. মোহাম্মদ জাকরিয়া, সাবেক সেনা কর্মকর্তা নাজিম উদ্দিন, সুপ্রিম কোর্টের সাবেক রেজিস্ট্রার ইকতিদার আহমেদ, সাবেক সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মিসেস শামীম আহমেদ, সাবেক যুগ্ম সচিব মিসেস তাহমিদা আহমেদ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) আনোয়ার হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) আমিন তারিক, সাবেক যুগ্ম সচিব আকতার আহমেদ, সাবেক যুগ্ম সচিব মুন্সী আলাউদ্দিন আল আজাদ, সিনিয়র সাংবাদিক আবু সাঈদ খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস ও রুহুল আমিন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. আবদুল লতিফ মাসুম, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম হাসান তালুকদার এবং নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল হান্নান চৌধুরী, ইসির সাবেক অতিরিক্ত সচিব জেসমিন টুলি, সাবেক অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবীর মিলন, ড. এ ওয়াই এম একরামুল হক, মুনির চৌধুরী এবং সাবেক যুগ্মসচিব আরিফুর রহমান; সাবেক আমলা শামীমা আহমেদ, মঞ্জুর কাদির, শাহনাজ বানু ও এস এম নুরুজ্জামান।
চলতি নভেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন কমিশন গঠন প্রক্রিয়া শেষ করার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। আইন অনুযায়ী সার্চ কমিটি দায়িত্ব পাওয়ার ১৫ কার্যদিবস তথা ২১ নভেম্বরের মধ্যে নতুন ইসি গঠনের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে নাম প্রস্তাব করবে। এ ছাড়া প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগে যোগ্যতাসম্পন্নদের অনুসন্ধান করছে সার্চ কমিটি। রাজনৈতিক দল এবং পেশাজীবী সংগঠনের কাছ থেকে ৫ শতাধিক নাম পেয়েছে কমিটি। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সার্চ কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা দেবে। তারা এ নামের তালিকা তৈরি করছে। এ আইনের অধীনে ২০২২ সালের নির্বাচন কমিশনই প্রথম নিয়োগ পেয়েছিল। সার্চ কমিটির প্রস্তাবিত ১০ জনের নাম থেকে পাঁচজন বেছে নিয়ে নতুন কমিশন গঠন করে দিয়েছিলেন রাষ্ট্রপতি।