চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনার স্তুপ
নিউজ ডেস্ক:সারা দেশের হাসপাতাল থেকে কমপক্ষে ৫০ হাজার টন চিকিৎসা বর্জ্য হয়। এ হিসেবে প্রতিদিনের এই বর্জ্যরে পরিমাণ ১৩৭ টন। ফলে যত্রতত্র বর্জ্য ছড়িয়ে পড়ায় ব্যাপকভাবে পরিবেশ দূষণ হচ্ছে এবং বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁঁিক। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেই নিজস্ব বর্জ্য শোধাণাগার কার্যক্রম। তাই বাধ্য হয়েই প্রতিদিনের দূষিত বর্জ্য ফেলা হয় হাসপাতালের খোলা জায়গায়। আর এতে করে বাতাসের সঙ্গে দূর্গন্ধ ছড়িয়ে পরিবেশকে করছে মারাত্মকভাবে দূষিত। দিন শেষে হাসপাতাল রোগীদের এসব বর্জ্য নিয়ে কোথায় ফেলা হয় তার সঠিক জবাব নেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে। চিকিৎসকরা বলছে, হাসপাতালের এসব বর্জ্য এতই ক্ষতিকারক যে, একজন সুস্থ রোগীকে অসুস্থ করতে এর মিনিট পাঁচেকই যথেষ্ঠ।
চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জন খাইরুল আলম বলেন, হাসপাতালে রোগীদের এসব বর্জ্য বিনষ্ট করতে বিশেষ এক ধরণের ইনসিনারেসন মেশিনের প্রয়োজন। যা চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেই। প্রতিদিনের রোগীদের যে বর্জ্য জমা হয়, তা হাসপাতালের একপাশে ডাস্টবিনে রাখা হয়। পরে সেসব বর্জ্য পৌরসভার গাড়ি এসে নিয়ে যায়। তবে পৌরসভার গাড়ি হাসপাতালের সেই বর্জ্য কোথায় ফেলে তার কোন তথ্য দিতে পারেননি জেলার এই স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।
চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালটি ১শ’ শয্যা বিশিষ্ঠ একটি হাসপাতাল। তবে হাসপাতাল তুলনায় রোগীর চাপ পড়ে তিনগুন। ফলে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ চিকিৎসা বর্জ্য জমে হাসপাতালে। এসব বর্জ্য ওয়ার্ড থেকে পরিচ্ছন্ন কর্মীরা নিয়ে এসে ফেলে হাসপাতালের ডাস্টবিনে। একসাথে অনেক বর্জ্য জমে মুহুত্বে ছড়িয়ে পড়ে দূর্গন্ধ। যা মানবদেহ ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে কয়েক দিন ঘুরে দেখা যায়, মেডিসিন, সার্জারি ও গাইনি ওয়ার্ডের পাশে রাখা আছে বড় বড় প্লাষ্টিকের ড্রাম। সারাদিন পর সন্ধ্যায় পরিচ্ছন্ন কর্মিরা এসব ড্রামে ভর্তি হওয়া রোগীদের বর্জ্য নিয়ে গিয়ে হাসপাতালের ডাস্টবিনে ফেলছে। একটা সময় হাসপাতালে রোগীদের বর্জ্য জমতে জমতে তৈরি হয় আর্বজনার স্তুপ।
সদর হাসপাতালের একপরিচ্ছন্ন কর্মি জানান, দীর্ঘদিন ধরে ওয়ার্ডের বর্জ্য নিয়ে হাসপাতালের খোলা জায়গাতেই ফেলেন তিনি। পরে গাড়ি এসে ময়লাগুলো নিয়ে চলে যায়।
সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শামীম কবীর বলেন, হাসপাতালে অস্ত্রপাচারের মাধ্যমে রোগীর শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করা অঙ্গপ্রত্যঙ্গ মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়। তবে রোগীদের বর্জ্য ধংসের জন্য যে সরঞ্জাম প্রয়োজন, তা হাসপাতালে না থাকায় বাধ্য হয়েই রোগীদের চিকিৎসা বর্জ্য ডাস্টবিনে ফেলা হচ্ছে বলে জানান তিান।
সিভিল সার্জন খাইরুল আলম বলেন, সদর হাসপাতালের বর্জ্য শোধাণাগারের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণাালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। খুব শ্রিঘই এই সমস্যা দূর হবে বলে আশ্বাস দেন এই কর্মকর্তা।
তবে সাধারণ মানুষ বলছে শুধুমাত্র আশ্বাস নয়, হাসপাতালটিতে বর্জ্য শোধণাগার তৈরী করে পরিবেশসহ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা সাধারণ রোগীদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হোক।