দূরের দৃষ্টি ধীরে ধীরে ঝাপসা হচ্ছে শিশুদের। করোনা মহামারীর পর থেকে এই সমস্যা বেড়েছে কয়েক গুনে। ‘ব্রিটিশ জার্নাল অফ অপথ্যালমোলজি’ পত্রিকার একটি গবেষণাপত্রে দাবি করা হয়েছে, এশিয়া, ইউরোপ-সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মায়োপিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। অর্থাৎ, দূরের জিনিস দেখতে সমস্যা হচ্ছে।
কোভিড লকডাউনের পর থেকে দৃষ্টি সংক্রান্ত এমন নানা সমস্যা বেড়ে চলেছে।
গবেষকদের দাবি, করোনা মহামারীর সময়ে স্কুল বন্ধ থাকার কারণে পড়াশোনার মাধ্যম হয়ে উঠেছিল ল্যাপটপ, মোবাইল কিংবা ট্যাবলেট। ফলে বাধ্যতামূলক ভাবেই ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করার সময়ও বাড়ে। অনলাইন ক্লাস করতে গিয়ে মোবাইল-ল্যাপটপের প্রতি আসক্তিও বাড়ে শিশুদের। সেই অভ্যাস বজায় আছে এখনও। জীবনযাত্রা স্বাভাবিক হওয়ার পরেও অভ্যাস অনুযায়ী শিশুরা ডিজিটাল ডিভাইসের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েছে। একটানা কম্পিউটার বা মোবাইলের স্ক্রিনে চোখ রাখার কারণেই দৃষ্টিশক্তি কমতে শুরু করেছে শিশুদের। বাড়তি স্ক্রিন টাইমের কারণে দূরের জিনিস দেখতে সমস্যা হচ্ছে অনেকেরই। এই সমস্যাকেই চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় বলে মায়োপিয়া। এই সমস্যায় যারা আক্রান্ত হন, তারা নির্দিষ্ট দূরত্বে থাকা সব কিছু ঝাপসা দেখেন।
ব্রিটিশ জার্নালের রিপোর্টের তথ্য অনুযায়ী, ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বের অর্ধেক সংখ্যক মানুষ মায়োপিয়ায় আক্রান্ত হবেন। যার মধ্যে অন্তত ৭৪ কোটি শিশুর মায়োপিয়া ধরা পড়বে। প্রতি তিন জন শিশুর মধ্যে এক জন চোখের সমস্যায় আক্রান্ত হবে।
মায়োপিয়া হলে দূরের দৃষ্টি ঝাপসা হওয়ার সঙ্গে মাথা যন্ত্রণা, ঘাড়ে-পিঠে ব্যথাও বেড়ে যায়। চোখ দিয়ে পানি পড়া বা চোখে যন্ত্রণা হতে পারে। এমনকি, মাইগ্রেনের সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
মায়োপিয়ার ঝুঁকি এড়াতে সবার আগে ফোন থেকে দূরে থাকা ভীষণ জরুরি। বিশেষ করে শিশুদের মোবাইল বা ল্যাপটপ ব্যবহার করার সময় বেঁধে দিতে হবে। পড়াশোনার বাইরে ল্যাপটপ বা অন্যান্য ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করতে না দেওয়াই ভাল। যদি বোঝা যায় শিশু দূরের জিনিস দেখতে পারছে না, বা স্কুলে গিয়ে বোর্ডের লেখা পড়তে সমস্যা হচ্ছে, তা হলে দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। সূত্র: আনন্দবাজার