ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে আরও ২৩ ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত
নিউজ ডেস্ক:ঝিনাইদহে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা কমেনি। প্রতিদিন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নেই সন্ধান মিলেছে ২৩ ডেঙ্গু রোগীর। এর মধ্যে বালিয়াডাঙ্গা গ্রামে আলতাফ হোসেনের স্ত্রী তারানা বেগম (৩৫) ও বানুড়িয়া গ্রামের আব্দুর রহিমের স্ত্রী সুফিয়া বেগম (৫৫) ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
ম-লপাড়ার সাগর হোসেন জানান, ডেঙ্গুর ভয়ে তিনি চৌগাছায় শ্বশুরবাড়িতে ওঠেন। তারপরও তিনি রক্ষা পাননি। এরপর তিনি বাড়ি ফিরে দেখেন, তাঁর মা চম্পা বেগমও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁদের পাড়ার রমজান আলীর পরিবারের তিন সদস্য ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। গোটা ম-লপাড়ায় কমপক্ষে ২৩ জন নারী-পুরুষ ও শিশু ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তাঁদের বেশির ভাগই চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। এক শিশু এখনো খুলনা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ম-লপাড়ায় আরশেদ আলী ম-লের স্ত্রী আনজুরা বেগম (৪০), ফজলুর রহমান ম-লের স্ত্রী মাজেদা বেগম (৫০), ফকির ম-লের ছেলে জালাল উদ্দিন ম-ল (৪২), মোশারফ হোসেন ম-ল (৬০), তাঁর ছেলে বিপুল হোসেন (৩০), অহেদ আলীর স্ত্রী নুরী বেগম (৩৬), আব্দুল রাজ্জাকের ছেলে শরিফুল ইসলাম (৪৫), মইন উদ্দিনের ছেলে রমজান আলী ম-ল (৪৫), রফিকুল ইসলামের ছেলে সাহাবুল ম-ল (১২), রমজান আলীর স্ত্রী শেফালী বেগম (৪৫), তাঁর ছেলে আসিফ হোসেন (১৭), কন্যা রাবেয়া খাতুন (১৫), মৃত বাবর আলীর ছেলে সাবজাল হোসেন ম-ল (৫০), বাবর আলীর ছেলে তাহাজ্জেল হোসেন (৪০), তাঁর ছেলে আব্দুস সালাম (২৬), আশরাফ আলীর স্ত্রী আনজুরা বেগম (৪০), এলাহী ম-লের স্ত্রী চায়না বেগম (৬৫), জাহিদুল ইসলামের স্ত্রী শর্মিলা আক্তার পপি (২৬), তরিকুল ইসলামের ছেলে তামিম ইকবাল (৭), আসলাম উদ্দিনের স্ত্রী চম্পা বেগম (৩৫), মীর আব্দুল করিমের স্ত্রী জহুরা খাতুন (৬০), মমিনুর রহমানের স্ত্রী কুটি বেগম (৫০) ও মিণ্টু ম-লের ছেলে তানভীর (৪) ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সাদ্দাম হোসেন জানান, তাঁদের গ্রাম একতারপুরে তিনটি পাড়া রয়েছে। এগুলো হচ্ছে বিশ^াসপাড়া, খন্দকারপাড়া ও ম-লপাড়া। ম-লপাড়ায় শতাধিক পরিবার বসবাস করে। এখানকার প্রায় প্রতিটি পরিবারের কারও না কারও শরীরে জ্বর দেখা দিয়েছে। আর কমপক্ষে ২৫ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে।
এ বিষয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. হুসাইন সাফায়াত জানান, বিষয়টি জেনে তাঁরা হাসপাতালে আসা রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছেন। এ ছাড়া প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদকে তাঁরা বিষয়টি অবহিত করেছেন।
স্থানীয় ত্রিলোচনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম ওরফে সানা জানান, তাঁরা বেশ কয়েকবার ওই পাড়ায় ওষুধ ছিটিয়েছেন। এমনকি পরিষ্কার অভিযানও চালিয়েছেন। তারপরও কেন এমন হচ্ছে, তা বুঝতে পারছেন না বলে তিনি উল্লেখ করেন। তবে বর্তমানে আক্রান্তের সংখ্যা কম বলে তিনি দাবি করেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুবর্ণা রানী সাহা বলেন, বিষয়টি জানার পর তিনি ওই এলাকার ইউপি সদস্যকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করেছেন। যাঁরা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কাজে সবাইকে সচেতন করার কাজ করছেন। এ ছাড়া ওষুধ ছিটানোর ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে।
ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের পরিসংখ্যান কর্মকর্তা আব্দুল কাদের জানান, গত ৩ মাসে হাসপাতালে ৪২৫ ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত ভর্তি আছেন ২৩ জন। নতুন আক্রান্ত রোগী ৩ জন।