চুয়াডাঙ্গার নবগঙ্গা খাল পুনঃখননকাজের উদ্বোধনকালে এমপি ছেলুন জোয়ার্দ্দার
নিউজ ডেস্ক:ভূ-ওপরস্থ পানির ব্যবহার বৃদ্ধি, জলাবদ্ধতা দূরীকরণ, দেশীয় প্রজাতির মাছের আবাসস্থল, বিচরণ ও উৎপাদন, বোরো মৌসুমে সেচকৃত এলাকা বৃদ্ধিসহ বহুমুখী পরিকল্পনা নিয়ে প্রায় ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে চুয়াডাঙ্গার নবগঙ্গা নদী পুনঃখননকাজ শুরু হয়েছে। গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ৯টায় ঘোড়ামারা ব্রিজের সামনে আনুষ্ঠানিকভাবে এ কাজের উদ্বোধন করেন চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন। উদ্বোধন-পরবর্তী এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে বয়ে চলা চারটি শাখানদী নবগঙ্গা, কুমার, ভৈরব ও চিত্রার অবস্থা আজ করুণ। এর মধ্যে চিত্রা ব্যতীত সব কটিরই পুনঃখননের কাজ শুরু হয়েছে। এ কাজ শেষ হলে নদীগুলো বর্ষা মৌসুমে পানির রিজার্ভার হিসেবে কাজে লাগবে। এ নিয়ে বর্তমান সরকারের বৃহৎ পরিকল্পনা রয়েছে।
দিল্লির পক্ষ থেকে কোনো সাড়া না পাওয়ায় মাথাভাঙ্গা নদীর খননকাজ শুরু করা যাচ্ছে না উল্লেখ করে ছেলুন জোয়ার্দ্দার বলেন, মাথাভাঙ্গা নদী একসময় এ অঞ্চলের মানুষের ব্যবসায়িক কাজের অন্যতম মাধ্যম ছিল। এ নদী দিয়ে ছোট-বড় নৌযানে মালামাল পরিবহন করা হতো। দুটি দেশের মধ্যে নদীটির অংশ থাকায় ভারত থেকেও মালামাল নিয়ে অনেকে আসতেন চুয়াডাঙ্গায়। বর্তমানে এ নদীর উৎসমুখ ভরাট হয়ে পানি আসা বন্ধ হয়ে গেছে। এ নিয়ে অনেক চিঠি চালাচালি হয়েছে। তবে দিল্লির পক্ষ থেকে কোনো সাড়া না পাওয়ায় মাথাভাঙ্গা নদীর খননকাজ শুরু করা যাচ্ছে না। তবে দিল্লির সাড়া পেলেই মাথাভাঙ্গার পুনঃখননকাজ শুরু হবে বলেও উল্লেখ করেন এমপি এমপি ছেলুন জোয়ার্দ্দার।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকারের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড কুষ্টিয়া সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও জিকে সেচ প্রকল্প পরিচালক মনিরুজ্জামান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) খোন্দকার ফরহাদ আহমেদ, পৌর কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর আলম মালিক খোকন এবং জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মোহাইমেন হাসান জোয়ার্দ্দার অনিক। স্বাগত বক্তব্য দেন চুয়াডাঙ্গা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জাহেদুল ইসলাম।
প্রকল্প সূত্র জানায়, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ৬৪ জেলার ছোট নদী, খাল ও জলাশয় পুনঃখনন প্রকল্পের (১ম পর্ব) আওতায় ৭ কোটি ৮০ লাখ টাকা ব্যয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের নবগঙ্গা নদী পুনঃখনন করা হচ্ছে। ১৪ মাসে এ নদীর ১৪ কিলোমিটার এলাকা খনন করা হবে। এতে নাব্যতা-সংকট দূরীকরণে নদীর গভীরতা আরও ৮ ফুট বাড়ানো হবে। এ কাজ শেষ হলে বৃদ্ধি পাবে ভূ-ওপরস্থ পানির ব্যবহার। জলাবদ্ধতা দূর হবে অনেকাংশেই। বোরো মৌসুমে সেচকৃত এলাকা বৃদ্ধি পাবে। এ ছাড়াও দেশীয় প্রজাতির মাছের আবাসস্থল, বিচরণ ও উৎপাদনও বৃদ্ধি পাবে। নদীর পাড়ে সবজি চাষ ও ফলদ গাছ লাগানো হবে, যা প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করবে।