২৫ লক্ষ টাকার আলামত জব্দ : ২ লক্ষ টাকা জরিমানা : কারখানা সিলগালা
নিউজ ডেস্ক:: চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার ডুগডুগি বড় দুধপাথিলা সড়কের পাশে অবস্থিত ‘এমএস ফুড প্রোডাক্টস্’ ও ‘আরএমকে ফুড প্রোডাক্টস্’ একটি কারখানায় অসাদুপায়ে উৎপাদন ও বাজারজাত করা হচ্ছে ওরাল স্যালাইন, টেস্টি স্যালাইন ও সফট ড্রিংকস। এরুপ গোপণ সংবাদের সতত্য নিশ্চিত করেন জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা, চুয়াডাঙ্গার উপ-পরিচালক জাফর ইকবাল। জানা যায় কারখানাটিতে উৎপাদিত পণ্য নকল এবং অনুমোদনহীন। এ তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল রোববার দুপুর ২ টার দিকে চুয়াডাঙ্গা জেলা জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার উপ-পরিচালক জাফর ইকবাল ও জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পাপিয়া আক্তার যৌথ অভিযান পরিচালনা করেন কারখানাটিতে। অসাদুপায়ে নকল ওরাল স্যালাইন, টেস্টি স্যালাইন, সফট ড্রিংকস পাউডার, ডাব ড্রিংকস পাউডার উৎপাদন, প্রক্রিয়া ও বাজার জাতকরণের অভিযোগে ‘এমএস ফুড প্রোডাক্টস্’ ও ‘আরএমকে ফুড প্রোডাক্টস্’র মালিক জহুরুল ইসলাম মঞ্জুকে ২ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়। এ সময় আনুমানিক ২৫ লক্ষাধিক টাকার নকল পণ্য উৎপাদনের সকল আলামত জব্দ করে কারখানাটি সিলগালা করা হয়। সূত্র জানায়, দামুড়হুদার লোকনাথপুর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন ডুগডুগি-বড় দুধপাথিলা সড়কের পাশে একটি মাঠের ভেতর নির্জন এলাকায় ‘এমএস ফুড প্রোডাক্টস্’ ও ‘আরএমকে ফুড প্রোডাক্টস্’ নামের একটি নকল ওরস্যালাইন এবং সফট ড্রিংক্স পাউডার কারখানার সন্ধান পায় জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই), চুয়াডাঙ্গা। তাদের সহযোগিতায় রোববার দুপুর ২টার দিকে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসন ও জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা যৌথভাবে অবৈধ কারখানায় উপস্থিত হয়ে সেখানে নকল ওরস্যালাইন এবং সফট ড্রিংকস পাউডার তৈরির বিষয়টি দেখতে পান। কারখানা থেকে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর ৪০ হাজার প্যাকেট স্যালাইন, ৫৫ কার্টুন সফট ড্রিংকস পাউডার, সফট ড্রিংকস পাউডার তৈরির সরঞ্জাম ও কেমিক্যাল জব্দ করা হয় এবং এ সকল মালামাল উৎপাদনের দুটি মেশিন, একটি ক্রাশ মেশিন, একটি বিলিন্ডার, একটি প্যাকেজিং মেশিন ও অন্যান্য মালামালসহ কারখানাটি সিলগালা করে দেয়া হয়। কারখানাটি থেকে আনুমানিক ২৫ লাখ টাকার আলামত জব্দ করা হয় বলে জানা গেছে। এরপর চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পাপিয়া আক্তার ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে ওই কারখানার মালিক জহুরুল ইসলাম মঞ্জুকে (৫০) ২ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৩ মাসের কারাদন্ডাদেশ দেন। অবৈধ প্রক্রিয়ায় পণ্য উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ, মিথ্যা বিজ্ঞাপন দ্বারা ক্রেতার সাথে প্রতারণার অভিযোগে ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ এর ৪৩ ও ৫০ ধারা এবং স্ট্যান্ডার্ড মার্কের অনুচিত ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি পূর্বক বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড ও টেস্টিং ইন্সটিটিউশন অধ্যাদেশ, ১৯৮৫ (সংশোধিত ২০০৩) এর ১৯ ধারায় এ দন্ড দেয়া হয়। তাৎক্ষণিক জরিমানার টাকা পরিশোধ করে মুক্তি পান ফ্যাক্টারির মালিক জহুরুল ইসলাম মঞ্জু। তিনি চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গার গোকুলখালী ও বর্তমান ঠিকানা বড়দুধপাতিলা গ্রামের মরহুম জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে। ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পাপিয়া আক্তার জানান, দামুড়হুদার লোকনাথপুর বাসস্ট্যান্ডের পাশে একটি মাঠের ভেতর নির্জন এলাকায় জনৈক জহুরুল ইসলাম মঞ্জু ‘এমএস ফুড প্রোডাক্টস্’ ও ‘আরএমকে ফুড প্রোডাক্টস্’ নামে একটি নকল সফট ড্রিংকস পাউডার এবং স্যালাইন তৈরির অবৈধ কারখানা গড়ে তোলেন। দীর্ঘদিন ধরে ওই কারখানায় উৎপাদিত হুবহু এসএমসির আদলে তৈরি মোড়কে ওরাল স্যালাইন, নিউ টেস্টি স্যালাইন, অরেঞ্জ সফট ড্রিংকস পাউডার ও ডাব সফট ড্রিংকস পাউডার বাজারজাত করে আসছিল। যার কোনো অনুমোদন নেই। তাই তাকে নগদ ২ লক্ষ টাকা জরিমানাসহ কারখানাটি সিলগালা করা হয়েছে। সিলগালাকৃত কারখানাটি স্থানীয় (হাউলী, দামুড়হুদা) ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী শাহ মিন্টুর হেফাজতে দেয়া হয়েছে। অভিযানে অংশ নেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট খোন্দকার ফরহাদ আহমদ, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) উপ-পরিচালক আবু জাফর ইকবাল, সহকারী পরিচালক লুৎফুল কবির, তপু কুমার ভৌমিক ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণের সহকারী পরিচালক সজল আহম্মেদসহ জেলা পুলিশ সদস্যরা।