র্যাবের ৪০ মিনিটের প্রচেষ্টায় বোমা নিষ্ক্রিয়
নিউজ ডেস্ক:চুয়াডাঙ্গায় প্রায় পাঁচ কেজি ওজনের শক্তিশালী একটি বোমা উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার ভোরে দামুড়হুদা উপজেলার নাটুদাহ ইউনিয়নের চন্দ্রবাস গ্রামের একটি জঙ্গল থেকে এ বোমাটি উদ্ধার করা হয়। বোমাটি উদ্ধারের পর গোটা এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। খবর পেয়ে বিকেলে খুলনা থেকে র্যাব-৬-এর একটি বোমা ডিস্পোজাল ইউনিট ৪০ মিনিটের প্রচেষ্টায় বোমাটির বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নিষ্ক্রিয় করে। র্যাবের বিশেষজ্ঞ টিমের দাবি, নিষ্ক্রিয় করা বোমাটি ছিল এক্সক্লুসিভ ও শক্তিশালী। এটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য তাঁরা উদ্ধার হওয়া আলামত ফরেনসিক বিভাগের পাঠাবে। পুলিশের ধারণা, বড় ধরনের কোনো নাশকতার পরিকল্পনা ছিল দুর্বৃত্তদের।
পুলিশ জানায়, দামুড়হুদা উপজেলার নাটুদাহ ইউনিয়নের চন্দ্রবাস গ্রামের ওয়ালিদ হোসেনের বাগানে গত মঙ্গলবার বিকেলে কয়েকজন ব্যক্তি খড়ি কুড়াচ্ছিলেন। এ সময় বাগানের একটি মেহগনিগাছের নিচে প্যাকেটে মোড়ানো মানুষের মাথা আকৃতির একটি বোমা দেখে আতকে ওঠেন তাঁরা। পরে স্থানীয় ব্যক্তিদের মাধ্যমে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় দামুড়হুদা থানার পুলিশ ও জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
দামুড়হুদা মডেল থানার ভারাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুকুমার বিশ্বাস জানান, ‘খবর পেয়ে আমরা মঙ্গলবার সন্ধ্যার কিছুটা পরে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। কিন্তু বোমাটি অনেক বড় ও ঘটনাস্থল দুর্গম হওয়ায় ঝুঁকি এড়াতে বুধবার ভোরে বোমাটি খুব সাবধানতার সঙ্গে উদ্ধার করি। পরে সেটি স্থানীয় নাটুদাহ ক্যাম্পের সামনে মাঠের মধ্যে বালিভর্তি একটি বালতির মধ্যে রাখা হয়। খবর দেওয়া হয় র্যাবের বোম ডিস্পোজাল ইউনিটকে। খবর পেয়ে বিকেল পাঁচটার দিকে খুলনা থেকে পাঁচ সদস্যর বোমা ডিস্পোজাল ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং বোমাটি নিষ্ক্রিয় করার কাজ শুরু করে। প্রায় ৪০ মিনিট প্রচেষ্টার পর র্যাবের সদস্যরা বোমাটি একটি গর্ত খুঁড়ে মাটি ও বস্তাচাপা দিয়ে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নিষ্ক্রিয় করেন। এ সময় গোটা এলাকায় পুলিশ নিরাপত্তার চাদরে ঘিরে রাখে।
র্যাবের বোমা ডিস্পোজাল ইউনিটের প্রধান সেলিম আজাদ সাংবাদিকদের জানান, ‘বোমাটি একটি নারকেলের মধ্যে তৈরি করা হয়েছিল। এটি আমাদের কাছে একেবারেই নতুন।’ বোমাটি এক্সক্লুসিভ ও শক্তিশালী ছিল বলেও জানান তিনি। নিষ্ক্রিয় করার পর বোমার বিস্ফোরিত অংশ র্যাব সংগ্রহ করে নিয়ে যায়। র্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়, যেহেতু নারিকেল আকৃতির এমন বোমা বাংলাদেশে প্রথম, তাই বোমাটির আলামত ফরেনসিক বিভাগে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে।
চুয়াডাঙ্গার সহকারী পুলিশ সুপার (দামুড়হুদা সার্কেল) আবু রাসেল জানান, ‘নতুন আকৃতির এ বোমা উদ্ধার আমাদের ভাবিয়ে তুলেছে। এ বোমার পেছনে কারা জড়িত, তাদের শনাক্তের কাজ ইতিমধ্যে শুরু করা হয়েছে। খুব শিগগিরই এ বোমার কারিগর ও দুর্বৃত্তদের আইনের আওতায় আনা হবে।’
পুলিশ সুপার মাহবুবুর রহমান পিপিএম জানান, ‘প্রাথমিকভাবে আমরা ধারণা করছি, আর কয়েক দিন পর পবিত্র ঈদুল আজহা। ঈদকে সামনে রেখে বড় ধরনের নাশকতার পরিকল্পনা ছিল দুর্বৃত্তদের। বোমাটি উদ্ধারে সে পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে। এর বাইরে অন্য কোনো উদ্দেশ্য ছিল কি না, তা তদন্ত করা হচ্ছে।’