নিউজ ডেস্ক:
সিলেটর দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি পাঠানপাড়ায় আতিয়া মহলে জঙ্গিদের আস্তানায় সেনাবাহিনীর প্যারা-কমান্ডোদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আতিয়া মহল থেকে রবিবার ভোর সাড়ে ৫টা পর্যন্ত থেমে থেমে গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। তবে সাড়ে ৫টার পর থেকে অনেকটা নিস্তব্ধ ছিল এই পাঁচ তলা ভবনটি।
এই নিস্তব্ধতা ভাঙ্গে সকাল ৯টা ৫৭ মিনিটে। হঠাৎ বিকট শব্দে ঘটে বিস্ফোরণ। কেঁপে উঠে শিববাড়ি এলাকা। আবারও আতংক ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়। এরপর ভবনের ভেতরে ব্যাপক গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে। এর রেশ কাটতে না কাটতেই ১০টা ৭ মিনিটে প্রচণ্ড শব্দে ফের বিস্ফোরণ ঘটে।
এরপর আরও কিছু সময় ধরে চলে গোলাগুলি। তবে আতিয়া মহলের ভেতরে কারা বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে তা জানা যায়নি। গতকাল শনিবার সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে প্রেসব্রিফিং এ সেনা সদরদফতরের ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফখরুল আহসান জানিয়েছিলেন, জঙ্গিরা পাঁচ তলা ভবনটির নিচ থেকে উপর তলা পর্যন্ত উঠানামা করছে। তারা সেখানে অত্যন্ত সুসংগঠিত ও শক্তিশালী অবস্থায় আছে এবং ভবনটির বিভিন্ন স্থানে বিস্ফোরক লাগিয়ে রেখেছে। জঙ্গিদের ধরতে তাদের অভিযান অব্যাহত আছে বলেও তিনি জানিয়েছিলেন।
শনিবার সকাল ৮টা থেকে সেনা কমান্ডোদের যে অভিযান শুরু হয়েছিল তা এখনো অব্যাহত আছে বলে জানা গেছে। প্রসঙ্গত, গতকাল শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় আতিয়া মহলের অনতিদুরে একটি বোমা হামলা হয়। সেই বোমা হামলায় ৪ জন নিহত হন। পরে ঘটনাস্থল পরিদর্শনের সময় একটি অবিস্ফোরিত বোমার বিস্ফোরণ ঘটলে আদালত পুলিশের পরিদর্শক চৌধুরী আবু কায়সার ও জালালাবাদ থানার ওসি (তদন্ত) মনিরুল ইসলাম নিহত হন। র্যাব সদর দফতরের ইন্টেলিজেন্স উয়িংয়ের পরিচালক লে. কর্নেল আবুল কালাম আজাদ ও উপপরিচালক মেজর মোহাম্মদ আজাদসহ আইনশৃংখলা বাহিনীর কয়েকজন সদস্যও গুরুতর আহত হন। তারমধ্যে আবুল কালাম আজাদ ও মেজর আজাদকে শনিবার রাতেই ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে স্তানান্তর করা হয়।
গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৩টা থেকে এই ‘আতিয়া মহল’টি ঘিরে রাখে পুলিশ। শুক্রবার বিকেলে অভিযানে আসে ‘সোয়াত’। তাদের পক্ষে অত্যান্ত সুসংগঠিত জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা সম্ভব না হওয়ায় ডাকা হয় সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষিত কমান্ডোদের।
এই কমান্ডোরা শনিবার সকাল ৮টা থেকে অভিযান শুরু করে। ২টার মধ্যে তারা ভবনটির ২৯টি ফ্ল্যাটে আটকা পড়া প্রায় ৭৮ জন অধিবাসীকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।