উৎসবমুখর পরিবেশে দৈনিক সময়ের সমীকরণের ৪র্থ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপন, হোটেল সাহিদ প্যালেসে ভিন্নরকম মিলনমেলা
সময়ের সঙ্গে তালমিলিয়ে সময়ের সমীকরণকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে : এমপি নূর মোহাম্মদ
নিউজ ডেস্ক:নানা আয়োজনে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সর্বাধিক পাঠকনন্দিত দৈনিক সময়ের সমীকরণ-এর ৪র্থ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র্যালি, আলোচনা সভা, গুণীজন সম্মাননা, পুরস্কার বিতরণ ও আনন্দ উৎসবের আয়োজন করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় চুয়াডাঙ্গা কোর্ট মোড়স্থ পুলিশ পার্ক লেনে অবস্থিত পত্রিকার প্রধান কার্যালয় থেকে সময়ের সমীকরণ-এর লোগো-সম্বলিত গেঞ্জি ও ক্যাপ পরে বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হয়। এ সময় বিশিষ্টজন ও প্রতিনিধিদের মিলনমেলায় এক উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। সাজোয়া ব্যান্ড পার্টি আর সময়ের সমীকরণ-এর ‘সততা আমাদের শক্তি’ থিম সং এর সঙ্গে মেতে ওঠেন প্রতিবেদক, প্রতিনিধি ও আনন্দ র্যালিতে অংশগ্রহণকারীরা। র্যালিটি কোর্ট মোড়, শহীদ হাসান চত্বর, সমবায় নিউ মার্কেট হয়ে হোটেল সাহিদ প্যালেস অ্যান্ড কনভেনশন হলে গিয়ে শেষ হয়। সময়ের সমীকরণ-এর প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও বাংলাদেশ বিজনেস চেম্বার অব সিঙ্গাপুরের ফরমার প্রেসিডেন্ট আলহাজ্ব সাহিদুজ্জামান টরিকের নেতৃত্বে র্যালিতে অংশ নেন কিশোরগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য, সাবেক আইজিপি, সচিব ও রাষ্ট্রদূত নূর মোহাম্মদ, সাবেক ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ এ কে এম শহীদুল হক, জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার, পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম, ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, এফবিসিসিআইয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিআইপি দিলীপ কুমার আগরওয়ালাসহ আমন্ত্রিত অতিথি ও প্রতিনিধিরা।
র্যালির সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন দৈনিক সময়ের সমীকরণ-এর প্রধান উপদেষ্টা রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন ও প্রধান সম্পাদক নাজমুল হক স্বপন। বার্তা সম্পাদক হুসাইন মালিক, সহসম্পাদক আব্দুল আওয়াল, কবি রিগ্যান এসকান্দার, লেখক ও গবেষক হারুন উর রশিদ, সম্পাদনা সহকারী ফেরদৌস ওয়াহিদ, আশরাফুল ইসলাম শ্যামল, মেহেরাব্বিন সানভী, অনলাইন ডেস্ক ইনচার্জ রাহুল রাজ, জীবননগর অফিস প্রধান জাহিদ বাবু, প্রতিনিধি মিঠুন মাহমুদ, আজিজুর রহমান ডাবলু, শাকিল হাসান, জাহিদুল ইসলাম মামুন, আহমাদ সগীর, রাসেল হোসেন মুন্না ও ওয়াসিম রয়েল সামনে থেকে ব্যান্ড পার্টির সঙ্গে নাচে-গানে শোভাযাত্রায় নতুন মাত্রা যোগ করেন। র্যালিতে আরও অংশ নেন আলমডাঙ্গা অফিস প্রধান খ. হামিদুল ইসলাম আজম, দামুড়হুদা প্রতিনিধি মোজাম্মেল শিশির, ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি তানভির সোহেল, সার্কুলেশন ম্যানেজার আলমগীর হোসেন, সার্কুলেশন সহকারী তৌহিদুর রহমান তপু, ছাপাখানা সহকারী হাসান, দেলোয়ার, সুমন, সুমন (২), সরোজগঞ্জ প্রতিনিধি ইকরামুল হক, মুজিবনগর প্রতিনিধি শের খান, মেহেরপুর প্রতিনিধি মাসুদ রানা, গাংনী প্রতিনিধি মাহবুব আলম, হিজলগাড়ী প্রতিনিধি আরিফ হাসান, তিতুদহ প্রতিনিধি আকিমুল ইসলাম, কোটচাঁদপুর প্রতিনিধি মামুনুর রশিদ সুমন, ডাকবাংলা প্রতিনিধি সাইফুল ইসলাম, হাসাদাহ প্রতিনিধি বদরুজ্জামান শ্যামল, সীমান্ত প্রতিনিধি মফিজুর রহমান, উথলী প্রতিনিধি রাসেল হোসেন মুন্না, দত্তনগর প্রতিনিধি আ. রহিমসহ অন্যরা। নিজস্ব প্রতিবেদক আফজালুল হক, রুদ্র রাসেল, প্রতিনিধি রোকনুজ্জামান ও রেডিও কণ্ঠের সিইও আশিক ব্যস্ত ছিলেন ফেসবুক ওয়ালে সরাসরি সম্প্রচারে। বিশেষ প্রতিবেদক এস এম শাফায়েত মূল অনুষ্ঠান ভেন্যুতে ব্যস্ততার ফাঁকে শহীদ হাসান চত্বর থেকে র্যালিতে অংশ নেন। এদিনও আনন্দ র্যালির ব্যানার নিয়ে অতিথিদের সঙ্গে পাশাপাশি যেতে ভোলেননি তিনি। সবাই যখন আনন্দ উৎসবে ব্যস্ত, তখনও সহকর্মী সোহেল রানা ডালিম তাঁর দায়িত্ব থেকে পিছপা না হয়ে ব্যস্ত ছিলেন সংবাদ সংগ্রহে। সহসম্পাদক সুমন পারভেজ খান, পলাশ কুমার সাহা, হেমন্ত কুমার সিংহ রায় ও বিজ্ঞাপন ব্যবস্থাপক সেলিমুল হাবীব সেলিমের দিকনির্দেশনায় অনেকটা উৎসবমুখরভাবেই শেষ হয় বর্ণাঢ্য র্যালি।
র্যালি শেষে দুপুর ১২টায় হোটেল সাহিদ প্যালেসের রাফেল কনভেনশন হলে আলোচনা সভায় যোগ দেন আমন্ত্রিত অতিথিসহ বিশিষ্টজনেরা। শুরুতে তাঁদেরকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়। এরপর পবিত্র কোরআন থেকে তিলাওয়াত করেন ইসলামিক ফাউন্ডেশন চুয়াডাঙ্গা জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক এ বি এম রবিউল ইসলাম ও গীতা থেকে পাঠ করেন শ্রীমতি তিথি রাণী আচার্য্য ও অন্তু সিংহ। আলোচনা শুরুর আগে যাঁদের রক্ত সম্ভ্রম ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি স্বাধীনতা, সেই সব বীর শহীদদের প্রতি সম্মান জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। বার্তা সম্পাদক হুসাইন মালিকের স্বাগত বক্তব্যের মধ্যদিয়ে শুরু হয় মূল আলোচনা পর্ব।
‘সততা আমাদের শক্তি’ এই স্লোগানে সময়ের সমীকরণ চারটি বছর অতিক্রম করেছে। সততা, নিষ্ঠা ও গ্রহণযোগ্যতা দিয়ে খুব অল্প সময়ে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সর্বাধিক পাঠকনন্দিত দৈনিক সময়ের সমীকরণ মানুষের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। সময়ের সমীকরণ-এর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বিশিষ্টজনেরা তাঁদের আলোচনায় এমনই ভূয়সী প্রশংসা করেন। পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক মো. শরীফুজ্জামান শরীফের নেতৃত্বে একঝাঁক তরুণ সংবাদকর্মী অক্লান্ত পরিশ্রম করে বদলে দিয়েছে গতানুগতিক ধারায় পরিচালিত গণমাধ্যমের দৃশ্য। চুয়াডাঙ্গার আঞ্চলিক পত্রিকা হলেও সময়ের সমীকরণ হতে পারে জাতীয় পর্যায়ে অনুকরণীয়।
পত্রিকার প্রধান পৃষ্ঠপোষক আলহাজ্ব সাহিদুজ্জামান টরিকের সভাপত্বিতে সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন কিশোরগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য, সাবেক আইজিপি, সচিব ও রাষ্ট্রদূত নূর মোহাম্মদ। তিনি বলেন, ‘চুয়াডাঙ্গায় এসে আমার নিজের এলাকার সঙ্গে মিলিয়ে দেখলাম, এখানকার মানুষের তথা নিজেদের মধ্যে সমঝোতা দেখে ভালো লেগেছে। আমার এলাকায় কোনো অনুষ্ঠানের জন্য কাউকে দাওয়াত দিতে গেলে জানতে চাওয়া হয়- কে আসবে?। অমুক থাকলে তমুক আসবে না। এখানে দেখছি দলমত নির্বিশেষে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশা, সামাজিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা উপস্থিত হয়েছেন। এখানে রয়েছেন একজন প্রাক্তন মেয়র ও বর্তমান মেয়র। আমাদের এলাকায় এভাবে দুজনকে আনা যেত না কখনো।’ গণমাধ্যম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘একটি পত্রিকা খুব ভালো করে জানে কোন এলাকায় কী হচ্ছে, না হচ্ছে, কারা ভালো মানুষ, কারা খারাপ মানুষ। কারা রাতের আধারে কী করে, আর দিনের বেলায় কী বলে। তা আপনারা যতটা জানেন, আর কারো পক্ষে জানা সম্ভব না। বর্তমানে আমেরিকা শহরের মতো জায়গাই ওয়াশিংটন পোস্ট, নিউইয়র্ক পোস্টের মতো প্রভাবশালী পত্রিকার সার্কুলেশন কমে যাচ্ছে। তাই সময়ের সঙ্গে তালমিলিয়ে এই পত্রিকাটি তথা সময়ের সমীকরণকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। আপনারা সবাই যদি একটু আন্তরিক হন, নিজেদের পেশাদারিত্বের জায়গায় আরেকটু দায়িত্বশীল হন, তবে তা সম্ভব। সময়ের সমীকরণ যেমন খুব ভালো একটি নাম, সবার বক্তব্য শুনে এর কর্মকাণ্ডও খুব ভালো বলে মনে হয়েছে। তাই ৫ বছর, ৫০ বছর না, ৫০০ বছর টিকে থাক সময়ের সমীকরণ পত্রিকা। এই কামনা করি।’
সময়ের সমীকরণ পরিবারের প্রতি শুভেচ্ছা ও উত্তরোত্তর সফলতা কামনা করে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাবেক ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ এ কে এম শহীদুল হক বলেন, ‘সময়ের সমীকরণ-এর প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে এই উৎসব আয়োজন, তার সঙ্গে গুণীজন সংবর্ধনা অত্যন্ত ভালো একটি উদ্যোগ।’ তিনি বলেন, ‘আমরা যতই অনলাইন দেখি, টিভি দেখি, ফেসবুক-ইউটিউব দেখে যা জানতে পারি, তার থেকে পত্রিকা পড়ে অনেক ভালো কিছু জানতে পারি। সকালে পত্রিকা না পড়লে যেন কিছু জানার পিপাসা বা তৃষ্ণাটা মেটে না। এরসঙ্গে সম্পৃক্ত সাংবাদিকরা। যে সংবাদ পরিবেশন করেন, তা থেকে আমরা (পুলিশ) অনেক তথ্য পায়। যা থেকে আমরা বিভিন্ন ঘটনা ও দুর্ঘটনার তদন্ত সহজেই করতে পারি। সর্বোপরি বাংলাদেশের পুলিশ ও সাংবাদিকদের মিতালী সম্পর্ক বিশ্বব্যাপী আলোচিত। কারণ আমাদের পেশাগত দায়িত্বটা অনেকটা একই। পুলিশ কাজ করবে বিধি-বিধান ও আইন-কানুনের মধ্যে থেকে। আপনারা (সাংবাদিকরা) কাজ করবেন সমাজের অসঙ্গতি, সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের দেশে বস্তুনিষ্ঠ ও নিরপেক্ষ সাংবাদিকতা করা অনেক কঠিন একটা কাজ। ইচ্ছে থাকলেও অনেক কিছু প্রকাশ করা সম্ভব হয় না, আবার হলেও অনেক ঝুঁকি নিয়ে সেই কাজটি করতে হয়। আমাদের দেশে পত্রিকার মালিকরা সব ব্যবসায়ী, কর্পোরেট। মালিকদের কিছু সীমাবদ্ধতা, দ্বায়বদ্ধতা থাকে, তারমধ্যে থেকেই তাদেরকে কাজ করতে হয়। কিছু পত্রিকা আছে, যারা সরকার যত ভালো কাজই করুক, তা তাদের চোখে বাধে না। পত্রিকা তথা গণমাধ্যম হওয়া উচিৎ স্বাধীন, বস্তুনিষ্ঠ ও নিরপেক্ষ।’
বিশেষ অতিথি জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘বিশ্বায়নের যুগে বস্তুনিষ্ঠ তথ্য বা সংবাদ পরিবেশন করে দৈনিক সময়ের সমীকরণ আমাদের আশা পূরণ করে চলেছে। প্রতিদিন সাধারণ মানুষের তথ্য চাহিদা পূরণে যে ভূমিকা রেখেছে, তা প্রশংসনীয়। এজন্যই সময়ের সমীকরণ এই অঞ্চলের পাঠকনন্দিত হয়েছে। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে সত্য ও ন্যায়কে বিবেচনায় রেখে সময়ের সমীকরণ-এর পথচলা আরও সুগম হোক। কারণ উন্নয়ন কর্মকাণ্ডসহ সব কাজে সবার সমান অংশগ্রহণ না থাকলে পরবর্তীতে তাঁদেরকে এগিয়ে নিতে গিয়ে আমাদের অনেকটা পিছিয়ে পড়তে হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘বস্তুনিষ্ঠ, গঠনমূলক ও অনুসন্ধানী রিপোর্টিং দিয়ে সময়ের সমীকরণ পাঠকের মনে একটি বিশেষ স্থান দখল করে আছে।’ তিনি আশা করেন, সময়ের সমীকরণ এর সেই ধারবাহিকতা অব্যাহত থাকবে।
পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম বলেন, মিডিয়া প্রতিদিন ফাইনাল চার্জশিট দেয়। পুলিশ কিছুদিন পরে চার্জশিট ফাইনাল রিপোর্ট দেন। ফলে মিডিয়া ও পুলিশের কাজের মধ্যে অনেকটা মিল আছে বলে তিনি মনে করেন। এ সময় তিনি বিজয়ের এই দিনে জাতির জনক, স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন এবং স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম রাজধানী চুয়াডাঙ্গার জেলার সম্মানিত অভিবাসীগণকে। তিনি বলেন, ‘আমি এই জেলায় যোগদান না করলে এই ইতিহাস আমি জানতাম না। আমার সৌভাগ্য হয়েছে, আমি এই জেলায় যোগদান করে আপনাদের সঙ্গে কাজ করতে পারছি।’ তিনি উল্লেখ করেন, ‘স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম রাজধানী হিসেবে চুয়াডাঙ্গার নাম ঘোষণা করা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে কিছু জটিলতার কারণে মুজিবনগরে স্থান্তাতরিত করা হয়। এটা একটি বড় ইতিহাস। তবে বাঙালি জাতি ইতিহাস বিকৃতিকারী জাতি। অনেক ইতিহাসকে সঠিকভাবে লিখতে পারে না। কারণ, জাতির বিভিন্ন ক্রান্তিলগ্নে জাতির পতাকাকে খামচে ধরা হয়েছে। কবি বলেছেন- ‘জাতীর পতাকা খামচে ধরেছে সেই পুরানো সকুনের দল। আমরা সময়ের সমীকরণের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এই দিনে সমাজের অবক্ষয় বিচ্যুতি, সমাজের ডাক্তার হিসেবে এই সমাজে আলোর দ্রুতি ছড়াবে এই কামনা করছি। সঙ্গে সঙ্গে সমাজের যে ভালো দিকগুলো আছে, চুয়াডাঙ্গার যে সমৃদ্ধি আছে, যে ইতিহাস ঐতিহ্য আছে, কৃষ্টি-কালচার আছে, খেলাধুলা, ফুটবলার, আর্চার, প্রকৃতিসহ চুয়াডাঙ্গার অনেক সাফল্য আছে, এইগুলোকে প্রমোট করে সময়ের সমীকরণ আমাদের মধ্যে হাজার বছর বেঁচে থাকবে।’
সময়ের সমীকরণ-এর সব সম্পাদক, প্রতিবেদক, প্রতিনিধি, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের শুভেচ্ছা জানিয়ে ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, এফবিসিসিআইয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট, বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিআইপি দিলীপ কুমার আগরওয়ালা বলেন, ‘স্বীকৃতি বা সম্মাননা দিলে তাঁর দায়িত্বটা বেড়ে যায়। সময়ের সমীকরণ আজ মুক্তিযুদ্ধ, কৃষি, খেলাধুলা, জীব-বৈচিত্রসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশিষ্টজনদের যে সম্মাননা ও পুরষ্কার দিচ্ছে, তা প্রশংসার দাবিদার। সময়ের সমীকরণ-এর ৪ বছর পূর্তি উৎসবটা আমাদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে, আশাকরি ৫০ বছর পূর্তি উৎসবে আরও বৃহৎ পরিসরে জমকালো আয়োজন করা হবে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা যখন ঢাকাতে বসে জানতে পারি চুলের সব থেকে বেশি এক্সপোর্ট করে চুয়াডাঙ্গা জেলা, তখন ভালো লাগে। আরও ভালো লাগে যখন দেখি, অনেক রকম সবজি, ফল, মাল্টা আমাদের চুয়াডাঙ্গা থেকে এক্সপোর্ট করে। এ ছাড়াও আছে চুয়াডাঙ্গার ব্র্যান্ড ব্লাক বেঙ্গল গট। ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে আমাদের চুয়াডাঙ্গা। তখন গর্ব হয়। আর এই ব্যবসা বাণিজ্য বাড়ানোর জন্য দরকার বড় মন এবং মানসিকতা। আপনারা যদি ওই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীকে সাহস যোগান তার কাজটাকে আরও সহজ হয়ে যায়। যেমন হয়েছে আমার বন্ধু টরিক। আপনাদের সহযোগিতায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী থেকে আজ আমি ও টরিক সফল ব্যবসায়ী। ঠিক তেমনি সহযোগিতা থাকলে আরও দিলীপ টরিক তৈরি হবে চুয়াডাঙ্গায়। চুয়াডাঙ্গার মানুষের ট্যাক্স দেওয়ার প্রবণতা অনেক কম জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে। নিজেদের অর্থায়নে হচ্ছে পদ্মাসেতু। ফলে সবাইকে ট্যাক্স দিতে হবে, তাহলে দেশ আরও এগিয়ে যাবে।’
সময়ের সমীকরণের প্রধান উপদেষ্টা ও সাবেক পৌর মেয়র রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন বলেন, ‘মানুষ বেড়েছে, বেড়েছে পত্রিকার সংখ্যাও। তবে আমি জোর দিয়ে বলতে পারি বৃহত্তর কুষ্টিয়া জেলার মধ্যে চুয়াডাঙ্গার প্রেস অনেক সমৃদ্ধ। এখানকার গণমাধ্যমকর্মীদের মধ্যে অনেক মেধা ও সৃজনশীল মনোভব রয়েছে। এ অঞ্চলের পত্রিকাগুলোর মধ্যে সময়ের সমীকরণ অনেক সমৃদ্ধ। এর মধ্যে কিছু ভুলক্রটি থাকতে পাওে, যা সংশোধন করে এগিয়ে চলায় আমাদের লক্ষ্য।’
চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়র ওবায়দুর রহমান চৌধুরী জিপু বলেন, ‘চুয়াডাঙ্গা এক সময় অনিরাপদ ও নিরাপত্তাহীন জনপদ ছিল। শহর থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত সন্ত্রাসীদের অস্ত্রের ঝনঝনানি শোনা যেত। সেই সময় চুয়াডাঙ্গার সাংবাদিকরা তাঁদের সাহসী লেখনির মাধ্যমে তা তুলে ধরেছেন। এরপর পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপে আজকের চুয়াডাঙ্গা হয়েছে শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ। এভাবেই সমাজের নানা অনিয়ম, দুর্নীতি, দুর্যোগ, দুর্ভোগ আর সফলতার কথা তুলে ধরে দৈনিক সময়ের সমীকরণ। এ ক্ষেত্রে খুব অল্প সময়ের পথচলায় অন্যান্য পত্র-পত্রিকা ও গণমাধ্যমের সঙ্গে তালমিলিয়ে চলতে সক্ষম দৈনিক সময়ের সমীকরণ।’
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সভাপতি সরদার আল আমিন, সাধারণ সম্পাদক রাজিব হাসান কচি, সাংবাদিক সমিতির সভাপতি অ্যাড. রফিকুল ইসলাম, সাবেক সিভিল সার্জন ডা. একরামুল হক, চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জনের প্রতিনিধি ডা. আওলিয়ার রহমান, সিঙ্গাপুর বিজনেস চেম্বারের নেতৃবৃন্দের মধ্যে আবু সায়েম আজাদ, কামরুল ইসলাম, ওটিক গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক প্রকৌশলী ইউসুব আলী, চুয়াডাঙ্গা জেলা জাতীয় মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান নাবিলা রুকছানা ছন্দা, সময়ের সমীকরণ-এর আলমডাঙ্গা অফিস প্রধান হামিদুল ইসলাম আজম প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর সিদ্দিকুর রহমান, জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপপরিচালক দীপক কুমার সাহা, সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান, যুব উন্নয়নের উপপরিচালক মাছুম আহমেদ, পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দীন হেলা, চুয়াডাঙ্গা জেলা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি ইয়াকুব হোসেন মালিক, সহসভাপতি মঞ্জুরুল আলম মালিক লার্জ, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার, হাবিবুর রহমান লাভলু, আহসানুজ্জামান বাবু, চুয়াডাঙ্গা রেড ক্রিসেন্ট ইউনিটের সেক্রেটারি শহিদুল ইসলাম শাহান, সাবেক পিপি অ্যাড. মুহা. শামসুজ্জোহা, সাবেক কৃতী ফুটবলার স্বপন কুমার নাথ, চুয়াডাঙ্গা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অধ্যক্ষ কে এম মিজানুর রহমান, অরিন্দম সাংস্কৃতিক সংগঠনের সভাপতি বজলুর রহমান জোয়ার্দ্দার, সহসভাপতি কাজল মাহমুদ, নৃত্য ও সংগীত সম্পাদক হিরন উর রশিদ শান্ত, চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সহসভাপতি কামাল জোয়ার্দ্দার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিপুল আশরাফ, সিনিয়র সাংবাদিক রফিক রহমান, অ্যাড. মানিক আকবর, জামান আখতার, আন্দুলবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান শেখ শফিকুল ইসলাম মুক্তার, সাবেক চেয়ারম্যান শাখাওয়াৎ হোসেন, সমাজকর্মী শামীম হাসান মিজিসহ বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব। সার্বিক অনুষ্ঠান পরিচালনা ও প্রাণবন্ত উপস্থাপনা করেন দৈনিক সময়ের সমীকরণ-এর প্রধান সম্পাদক নাজমুল হক স্বপন। মাঝে মধ্যে তাঁর সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন বিশেষ প্রতিবেদক এস এম শাফায়েত।
সন্ধ্যায় নাচে-গানে বর্ণিল আনন্দ উৎসব:
সন্ধ্যায় সময়ের সমীকরণের ৪র্থ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপনে সমীকরণ পরিবারের সদস্যদের মধ্যে আনন্দের কমতি ছিল না। আনন্দকে আরও উপভোগ ও চুয়াডাঙ্গা শহরবাসীর সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করতে ব্যান্ডপার্টির সঙ্গে নাচে-গানে আর আতশবাঁজি উৎসবে মেতে ওঠে সমীকরণ পরিবার। সন্ধ্যায় সময়ের সমীকরণ অফিসের সামনে থেকে এ উৎসব শুরু হয়। প্রধান সম্পাদক নাজমুল হক স্বপন প্রথমে বাজি ফুটিয়ে এ উৎসবের সূচনা করেন। ব্যান্ডপার্টির ঢোলের তালে নাচে নাচে বাজী উৎসবে মেতে ওঠেন বার্তা সম্পাদক হুসাইন মালিক, সহসম্পাদক সুমন পারভেজ খান, পলাশ কুমার সাহা, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক আমানউল্লাহ আমান, বিশেষ প্রতিবেদক এস এম শাফায়েত, নিজস্ব প্রতিবেদক সোহেল রানা ডালিম, আফজালুল হক, রুদ্র রাসেল, অনলাইন ডেস্ক ইনচার্জ রাহুল রাজ, সম্পাদনা সহকারী ফেরদৌস ওয়াহিদ, প্রধান কম্পিউটার বজলুল আলম জীবন, প্রতিনিধি রোকনুজ্জামান রোকন, ওয়াসিম রয়েল, হামিদুল ইসলাম, এস আই বাবুসহ সমীকরণ পরিবারের অন্য সদস্যরা। এতে আরও অংশ নেন প্রধান সম্পাদক পত্নী রেবেকা সুলতানা, কন্যা প্রিয়তি ও প্রেরণা, বার্তা সম্পাদক পত্নী শারমিন মালিক, সহসম্পাদক পত্নী কাকন পারভেজ, নিজস্ব প্রতিবেদক সোহেল রানা ডালিম পত্নী সাদিয়া ইসলাম ও অনলাইন ডেস্ক ইনচার্জ পত্নী তহমিনা রাজ। এ সময় শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে হোটেল সাহিদ প্যালেসে গিয়ে শেষ হয় আনন্দ উৎসব।