ঝিনাইদহ সংবাদাতাঃ ঝিনাইদহের রেজিষ্ট্রি অফিসে ২ দলিল লেখকের বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। লিখিত অভিযোগে জানা যায়, সদর সাব রেজিষ্টার অফিসের দলিল লেখক মোশাররফ হোসেন ও ময়েনউদ্দিন যোগ সাজস করে নলডাঙা ইউনিয়নে মোটা অংকের টাকা নিয়ে জাল জালিয়াতির মাধ্যমে দলিল করে বিপাকে ফেলছেন সাধারণ মানুষকে। এমনি অভিযোগ নিয়ে ভিটেশ্বর গ্রামের আবেদ আলী দফাদার এর কন্যা জাহিদা ও নাজমা পারভিন নামে দুই বোন বিচারের আশায় ঘুরছেন সদর সাব রেজিষ্টার অফিসের দ্বারে দ্বারে। তাছাড়া ইউনিয়নের নারানপুর ও ডাকাতিয়া গ্রামের কিছু লোকের জাল দলিল করে দেওয়ায় তা নিয়ে গ্রামবাসীর মধ্যে বিবাধ সৃষ্টি করে যাচ্ছে এই লেখকগণ। জাহিদা ও নাজমা পারভিন জানান, আমার বাবার নামের জমি আমার ভাই শরিফুল দলিল লেখক মোশাররফ হোসেন ও ময়েনউদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করে আমার পিতার নামের স্থানে ভাই শরিফুল তার নিজের নাম বসিয়ে আর দাদার নামের স্থানে পিতার নাম বসিয়ে আমাদেরকে না জানিয়ে মোশাররফ হোসেন ও ময়েনউদ্দিনের সহযোগীতায় জাল দলিল বানিয়ে নাম হস্তান্তর করে। তাছাড়া নাজমা পারভিন আরো জানান, আমার শ্বশুর বাড়িতে আমার মাকে কাছে রেখে প্রায় ২০ বছর দেখ-ভাল করেছি। এমনকি কবরও দিয়েছি আমার শ্বশুর বাড়ির কবর স্থানে। আমাদের দুবোনের কারও কোন খোঁজ রাখেনা ভাই শরিফুল। তাই শরিফুল কৌশলে মোটা অংকের টাকা দিয়ে দলিল লেখক মোশাররফ হোসেন ও ময়েনউদ্দিনের রেফারেন্সে এ জালিয়াতি করেছে। আমরা সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে এ ঘটনার পরই সুষ্ঠু বিচারের আশায় জেলা রেজিষ্ট্রি অফিসে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলিল রেজিষ্ট্র করতে আসা এক ব্যাক্তি জানান, এখানে অতিরিক্ত অর্থ ছাড়া দলিল রেজিষ্ট্রি হয় না। এখানে অনেক রকম সিন্ডিকেট আছে। তাছাড়া দলিল রেজিষ্ট্রির নামে অতিরিক্ত মাত্রায় জালিয়াতি করেও জাল দলিল করে যাচ্ছে। এ বিষয়ে দলিল লেখক মোশাররফ হোসেন বলেন ও ময়েনউদ্দিন জানান, বিষয়টি তেমন কিছু না। নাম লেখার সময় নামের বানানের ভুল হতে পারে। একটি মহল আমাদের সুনাম ক্ষুন্ন করার জন্য অপপ্রচার চালাচ্ছে। সদর সাব রেজিষ্টার অফিসের দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আসাদুল আলম জানান, প্রায়ই এই দুই দলিল লেখক অর্থের বিনিময়ে এ ধরণের অনিয়ম ও দূর্নীতি করে চলেছে। নলডাঙা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কবির হোসেন জানান, আমার ইউনিয়নে অনেক সাধারণ লোকের সাথে সদর সাব রেজিষ্টার অফিসের দলিল লেখক মোশাররফ হোসেন ও ময়েনউদ্দিন যোগ সাজস করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে এসব জালিয়াতিসহ বিভিন্ন রকমের হয়রানি করে যাচ্ছে। এ বিষয়ে ইউনিয়নের প্রতিনিধি হিসেবে জেলা রেজিষ্টার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। বিষয়টি কর্তৃপক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন। এ বিষয়ে ঝিনাইদহ জেলা রেজিষ্টার মোঃ আব্দুল মালেক বলেন, বিষয়টি নিয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাটি তদন্ত সাপেক্ষে দোষী ব্যাক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।