ডামি বন্দুক ও জিহাদী বই উদ্ধার : গ্রামবাসির চোখে মানসিক রোগী
নিউজ ডেস্ক: ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কালুহাটী গ্রাম থেকে নব্য জেএমবি সদস্য আকতারুজ্জামান সাগর (১৯) নামে এক জঙ্গীকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-৬)। আকতারুজ্জামান সাগর ওই গ্রামের পশ্চিমপাড়ার কৃষক শরাফৎ হোসেন মন্ডলের ছেলে। এসময় তারা একটি ডামি বন্দুক ও কিছু জিহাদি বই উদ্ধার করেছে। তবে গ্রামবাসি জানায়, আটক আকতারুজ্জামান সাগর এক সময় মানসিক রোগী ছিলেন। ২০১৫ সালে তিনি পাবনার মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসাও নেন। গত ১৪ দিন আগে সাগর সদর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামে বিয়ে করেন। এদিকে
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কালুহাটি গ্রামের জঙ্গী আস্তানার ঘটনায় মামলা হয়েছে। ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি এমদাদুল হক শেখ জানান, বৃহস্পতিবার সকালে ঝিনাইদহ র্যাব ক্যাম্পের ডিএডি আব্দুল আওয়াল বাদী হয়ে ১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৪/৫ জনকে আসামী করে সদর থানায় মামলাটি দায়ের করে। এ মামলায় আটককৃত নব্য জেএমবির সদস্য আক্তারুজ্জামান ওরফে সাগরকে থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। খুলনা র্যাব-৬ এর অধিনায়ক হাসান ইমন আল রাজিব জানান, বুধবার ভোরে জঙ্গী আস্তানার খবর পেয়ে গান্না ইউনিয়নের কালুহাটি গ্রামের কৃষক শরাফৎ হোসেনের বাড়িতে অভিযান চালায় র্যাব। অভিযানে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) সদস্য আখতারুজ্জামান সাগরকে আটক করা হয়েছে। তার কাছ থেকে একটি ডামি বন্দুক ও কিছু জিহাদি বই জব্দ করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, আটক সাগর দুই বছর আগে জেএমবির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল। সুনিদ্দিষ্ট তথ্য পেয়েই তাকে আটক করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে অনেক তথ্য পাওয়া যেতে পারে বলে র্যাব-৬ মনে করছে। তবে আমরা নিরাপরাধ কাউকে হয়রানী করবো না বলে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি উল্লেখ করেন। এদিকে কৃষক শরাফৎ হোসেন মন্ডল জানান তার ছেলে দীর্ঘদিন ধরেই মানসিক ভারসম্যহীন ছিলেন। এখনো সে মাঝে মাঝেই গাপলামি করে। বিয়ের পর সাগর মসজিদের পাপোষ (ছেড়া বস্তা) মাথায় করে শ্বশুরবাড়ি গিয়ে ওঠে। এ নিয়ে তার শ্বশুর মামুন আমার কাছে অভিযোগ করেন। শ্বশুর বাড়ি গিয়ে দাড়িয়ে প্রসব করা ও বিড় সিগারেট খাওয়ার কথাও তার শ্বশুর উল্লেখ করেন। শরাফৎ হোসেন দাবী করেন, কালুহাটী হেফজখানা থেকে তার ছেলে কোরআনের হাফেজ। ওই গ্রামের দাখিল মাদ্রাসা থেকে দাখিল পরীক্ষা দেবার সময় ৫টি পরীক্ষা দিয়ে সে পালিয়ে যায়। তবে মাঝেমধ্যেই সে পালিয়ে যেত। দুই বছর আগে র্যাব তাদের বাড়ি এসে তার ছেলেকে বিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে যান বলে সাগরের পিতা শরাফৎ হোসেন উল্লেখ করেন।
গ্রামবাসিদের মধ্যে বৃদ্ধ হাবিবুর রহমান ও এমদাদুল হক দুদুসহ অনেকেই তাকে মানসিক ভারসম্যহীন হিসেবে জানে। তাদের ভাষ্য এরকম মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলে কি ভাবে ভয়ংকর জঙ্গী সংগঠনের সাথে জড়ালো তা তাদের বুঝে আসে না। জেহাদ নামে সাগরের এক শিশু বন্ধুর সাথেই সাগর বেশি ঘুরে বেড়াতেন। জিহাদ জানান, সাগর মজার মজার অসংলগ্ন কথা বলে মজা করে বলে তার সাথে আমার বন্ধুত্ব ছিল। সাগরের নববধু শারমিন আক্তার জানান, তাদের দুই সপ্তাহ আগে বিয়ে হয়েছে। তার মধ্যে তিনি খারাপ কিছু পাননি। তবে বিয়ের পর শুনেছেন পাগলামির কারণে তার স্বামী পাবনার মানসিক হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর আগে ভোর সাড়ে চারটার দিকে কালুহাটি গ্রামে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে বাড়িটি ঘিরে রাখে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব-৬)। বুধবার সকাল ৮টার দিকে অভিযনি শুরু করে ৯টার পর র্যাব অভিযান পরিত্যক্ত ঘোষনা করে।