ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ
ঝিনাইদহ মহাসড়ক গুলো বড় বড় গর্ত আর খানাখন্দে ভরে গেছে। অভিযোগ রয়েছে, মহাসড়ক গুলো নি¤œœমানের সামগ্রী দিয়ে তৈরি ও সংস্কারে বেশি দিন টিকছে না। ভাঙা ও গর্তে বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে সড়কের বিভিন্ন স্থান। সময় সাশ্রয়ে ভাঙা রাস্তায় দ্রুত যানবাহন চালাচ্ছেন চালকেরা। ফলে প্রায়ই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। গত তিন বছরে ৫৫ জনের বেশি প্রানহানির ঘটনা ঘটেছে ঝিনাইদহের মহাসড়কগুলোয়। এতে সরকারের প্রতি যাত্রীদের ক্ষোভ বাড়ছে দিন দিন। ঝিনাইদহ সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এজেলায় মোট সড়কের দৈর্ঘ্য ৪০৬ কিলোমিটার। এর মধ্যে পাঁচটি জাতীয় মহাসড়কের দৈর্ঘ্য ৮১ কিলোমিটার, জেলায় আঞ্চলিক দু’টি সড়ক ৫০ কিলোমিটার ও ১১টি জেলা সড়কের দৈর্ঘ্য ২৭৬ কিলোমিটার। এসব সড়ক ও মহাসড়কের ওপর দিয়ে প্রতিদিন ঢাকা, রাজশাহী, মুজিবনগরসহ বিভিন্ন রুটে বাস, ট্রাকসহ কয়েক হাজার যানবাহন চলাচল করে। ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহ-যশোর সড়কটি চলাচলের সম্পূর্ণ অযোগ্য হয়ে পড়েছে। খানাখন্দ ও বড় বড় গর্তে পরিণত হয়েছে। সড়কের চুটলিয়া, তেঁতুলতলা, বিষয়খালী, শেখপাড়া, ভাটই, এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে সড়ক সংস্কারের পরও রাস্তা ভেঙে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। দুর্ঘটনা প্রবন স্থান রয়েছে অন্তত ২০টি। এ ছাড়া মহেশপুর, হরিণাকুন্ডু ও সদর উপজেলাসহ সব উপজেলার সড়কগুলো চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
এসব স্থানে প্রায়ই বিকল হয়ে পড়ে যানবাহন। ভাঙা রাস্তায় সময় ব্যয় বেশি হওয়ায়, ভালো রাস্তায় দ্রুত গতিতে যানবাহন চালান চালকেরা। ফলে দুর্ঘটনায় প্রানহানির হার প্রতি বছরই বেড়েই চলেছে। এতে যাত্রীরা যেমন শঙ্কার মধ্যে থাকেন, তেমনি চালকেরাও থাকেন দুর্ঘটনা ঝুঁকিতে। তাই সর্বস্তরের মানুষের দাবি সড়ক মেরামতে যেন অর্থ সঠিক ভাবে ব্যবহার করা হয়। বাস ও ট্রাক চালকেরা জানান, সময়ের কারণে গাড়ি দ্রুত চালাতে হয়। রাস্তা ভালো হলে নিরাপদে গাড়ি চালাতে পারতাম। এলাকাবাসী ও যাত্রীরা জানান, দুর্ঘটনার শঙ্কা নিয়ে আমরা রাস্তায় যাতায়াত করি। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, ঝিনাইদহের উপসহকারী পরিচালক রফিকুল ইসলাম জানান, সড়কের অবস্থা খারাপ, দ্রুত গতিতে যানবাহন চালানো, ঝুঁকিপূর্ণ বাঁকসহ বিভিন্ন কারণে দুর্ঘটনার সংখ্যা বাড়ছে। এমনকি উদ্ধারকাজে যেতেও অনেক সময় ব্যয় হয়। সড়ক-মহাসড়কের অবস্থা ভালো হলে দুর্ঘটনা অনেক কমে যেত। ঝিনাইদহ ফায়ার সার্ভিসের তথ্য মতে, ঝিনাইদহ জেলার মহাসড়কে ২০১৫ সালে দুর্ঘটনার সংখ্যা ছিল ১৫১টি, এতে আহত হন ২২৮ জন এবং ঘটনাস্থলেই মারা যান ১৭ জন। ২০১৬ সালে দুর্ঘটনার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১৭৮টি; এতে আহত হন ৩৪২ জন, ঘটনাস্থলেই মারা যান ২৫ জন। সর্বশেষ ২০১৭ সালের ৫ মে পর্যন্ত দুর্ঘটনার সংখ্যা ৩৫টি; এতে আহত হয়েছেন ৭০ জন, মারা গেছেন ১০ জন।