নিউজ ডেস্ক:
কিছুদিন আগেও যেই শিশুটি মেয়ে ছিল কয়েকদিনের ব্যবধানে সে হয়ে গেল ছেলে। এমন অদ্ভূত ঘটনা ঘটেছে ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের একটি গ্রামে।
অনেক সময় জন্মের পর জিনগত ক্রুটির শিকার হয় অনেক শিশু। পরবর্তীকালে তাদের শরীরে নানা অস্বাভাবিক লক্ষণও ফুটে ওঠে।
জিনগত ক্রুটির পরিণাম এতটাই মারাত্মক হতে পারে, যে গর্ভপাতেরও সিদ্ধান্ত নেন অনেক দম্পতি। কিন্তু, তা বলে জিনগত ক্রুটির কারণে শিশুর লিঙ্গটাই পালটে যাবে? বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছানোর পরই নারী শরীরে গজিয়ে উঠবে পুরুষাঙ্গ? এমনই অবিশ্বাস্য ঘটনায় এখন খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে ক্যারিবিয়ান দীপপুঞ্জের এ অখ্যাত গ্রাম।
ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের ডোমিনিকান রিপাবলিকের ছোট্ট গ্রাম লাস সালিনাস। কয়েকদিন আগে পর্যন্ত গ্রামটির নাম জানতেন না কেউ। কিন্তু, গ্রামে জন্মানো শিশুদের জিনগত ত্রুটি রাতারাতি বিখ্যাত করে তুলেছে এই ছোট্ট জনপদটিকে। এই গ্রামের শিশুকন্যারা বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছনোর পর ছেলে হয়ে যাচ্ছে! কিশোরীদের শরীরে তৈরি হচ্ছে পুরুষাঙ্গ! একজন বা দু’জন নয়, গত কয়েক বছরে লাস সালিনাস গ্রামে এমনই অদ্ভুত জিনগত ক্রুটি নিয়ে জন্মেছে ৯০ জন শিশু।
চিকিৎসা বিজ্ঞান অনুযায়ী, জন্মের পর স্বাভাবিকভাবে মেয়ে থেকে ছেলে হয়ে ওঠার এই ঘটনা ‘গুয়েভেডোসেস’ নামে পরিচিত। এক বিশেষ ধরনের জন্মগত ক্রুটির কারণে এই ঘটনা ঘটে। যারা এই জিনগত ত্রুটির শিকার হয়, জন্মের সময় তাদের শরীরে মেয়ের লক্ষণই থাকে।
কিন্তু, বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছনোর পরই ছেলেদের লক্ষণ ফুটে ওঠে। এমনকি, ১২ বছর বয়সে শরীরে পুরুষাঙ্গও দেখা পাওয়া যায়। এক কথায় জন্মানোর সময় শিশুর শরীরে ছেলের লক্ষণগুলি লুপ্ত বা লুকানো অবস্থায় থাকে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মাতৃগর্ভে থাকার সময়ে একটি বিশেষ ধরনের উৎসেচক ভ্রুণের শরীরের পুরুষ যৌন হরমোন তৈরি করে। কিন্তু, এক্ষেত্রে ভ্রুণের শরীরে ওই বিশেষ উৎসেচক অনুপস্থিত থাকে।
তাই মেয়েদের মতো লক্ষণ নিয়েই ওই বিশেষ ধরনের শিশুরা জন্মগ্রহণ করে। কিন্তু, বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছনোর পর, শরীরে টেস্টোটেরনের মাত্রা বাড়তে শুরু করে এবং ১২ বছর বয়সে তা পুংলিঙ্গে পরিণত হয়। লাস সালিনাস গ্রামের ‘গুয়েভেডোসেস’ –এর শিকার এক শিশু জানিয়েছে, সে মেয়ে হিসেবেই বড় হযেছে। কিন্তু ছোট থেকে মেয়েদের পোশাক পরতে ভাল লাগত না তার। ছেলেদের সঙ্গেই খেলাধুলা করত সে।
তবে লাস সালিনাস গ্রামে এই অদ্ভুত ঘটনার কথা এই প্রথম জানা গেল, এমনটা নয়। সাতের দশকে ক্যারিবিয়ান দীপপুঞ্জের এই অখ্যাত গ্রামে গিয়ে প্রথম ‘গুয়েভেডোসেস’ রোগটি লক্ষ্য করেন ডক্টর জুলিয়ান ইমপারেটো।