নিউজ ডেস্ক:
পরিসংখ্যান বলছে প্রায় ৯৯.৯ শতাংশ মানুষ কলা খাওয়ার পর খোসাটা ডাস্টাবিনে চালান করেন। আর বাকি ১ শতাংশ হল সেই দল, যারা খোসাটাকে দুষ্টুমির অস্ত্র বানিয়ে হয় কারও পায়ের তলায়, নয়তো মাথায় ফেলে মজা লোটেন। কিন্তু আপনাদের কি জানা আছে কোলার খোসাকে কাজে লাগিয়ে একাধিক রোগের চিকিৎসা করা সম্ভব? কথাটা শুনে নিশ্চয় অবাক হচ্ছেন?
কিন্তু একথার মধ্যে কোনও ভুল নেই যে কলার খোসা খাওয়া যায় এবং এমনটা করলে এতে উপস্থিত অ্যান্টি-ফাঙ্গাল উপাদান, অ্যান্টি-বায়োটিক প্রপাটিজ, ফাইবার এবং একাধিক পুষ্টিকর উপাদান শরীরের গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই সঙ্গে নানাবিধ সংক্রমণ এবং পেটের রোগকেও দূরে রাখে। এখানেই শেষ নয়, কলার খোসার আরও উপকারিতা আছে, যে সম্পর্কে বাকি প্রবন্ধে আলোচনা করা হল।
১. অবসাদ এবং মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে:
কলার খোসায় রয়েছে প্রচুর মাত্রায় সেরোটনিন, যা নিমেষে মন ভাল করে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। সম্প্রতি তাইওয়ান ইউনিভার্সিটির তত্ত্বাবধানে হওয়া একটা গবেষণা অনুসারে টানা তিন দিনে যদি ২ টো করে কলার খোসা খাওয়া যায় শরীরে সেরোটনিনের মাত্রা প্রায় ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। ফলে অবসাদের প্রকোপ কমতে শুরু করে।
২. ঘুম ভাল হয়:
ট্রাইপটোফেন নামে এক ধরনের রাসায়নিক থাকে কলার খোসায়, যা ঘুম আসতে সাহায্য করে। তাই তো যারা অনিদ্রার শিকার, তারা আজ থেকেই কলার খোসা খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন উপকার পাবেন।
৩. শরীরে বাজে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়:
ফাইবার, কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। আর এই উপাদানটি প্রচুর মাত্রায় রয়েছে কলার খোসায়। তাই তো যারা এমন রোগে ভুগছেন, তাদের এই ঘরোয়া পদ্ধতিটির সাহায্য নিতেই হবে। কারণ ভুলে যাবেন না, কোলেস্টেরল একা আসে না, সঙ্গে নিয়ে আসে হাজারো মারণ রোগকে। তাই সময় থাকতে থাকতে সাবধান হওয়াটা জরুরি।
৪. ওজন হ্রাসে সাহায্য করে:
ফাইবার শুধু কোলেস্টেরল কমায় না। সেই সঙ্গে ওজন হ্রাসেও সাহায্য করে। আসলে ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার পরে পেট অনেকক্ষণ পর্যন্ত ভর্তি থাকে। ফলে বেশি মাত্রায় খাবার খাওয়ার প্রবণতা হ্রাস পায়। সেই সঙ্গে শরীরে ভাল ব্যাকটেরিয়ার মাত্রা বৃদ্ধি পায়, যারা হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়। এইভাবে কলার খোসা ওজন কমাতে নানাভাবে সাহায্য করে থাকে।
৫. শরীরকে বিষ মুক্ত করে:
কলার খোসা, কোলোনে উপস্থিত ভাল ব্যাকটেরিয়াদের সংখ্যা বৃদ্ধি করে, যা ধীরে ধীরে শরীরে জমে থাকা টক্সিক উপাদান বের করে দেয়। সেই সঙ্গে কনস্টিপেশনের মতো সমস্যাও দূর করে।
৬. লোহিত রক্ত কণিকার সংখ্যা বৃদ্ধি করে:
শরীরে যাতে লোহিত রক্ত কণিকার সংখ্যা হ্রাস না পায়, সেদিকে খেয়াল রাখে কলার খোসা। ফলে অ্যানিমিয়ার মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে।
৭. দৃষ্টি শক্তির উন্নতি ঘটায়:
কলার খোসায় রয়েছে লুটিন নামে একটি উপাদান, যা দৃষ্টি শক্তির উন্নতি ঘটানোর পাশাপাশি ছানি প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
কলার খোসা খাবেন যেভাবে:
কাঁচা অবস্থায় কোলার খোসা খাওয়া একেবারেই সম্ভব নয়। তাহালে কীভাবে খাওয়া যায়? অনেক রকমভাবে খেতে পারেন। যেমন-
১. মিক্সিতে ফেলে সরবত বানিয়ে খেতে পারেন।
২. সামান্য ভেজে নিয়ে ভাত-ডালের সঙ্গে খাওয়া যেতে পারে।
৩. গরম পানিতে ১০ মিনিট সেদ্ধ করে নিয়ে তারপর খেতে পারেন।
৪. কলার খোসা পানিতে ফুটিয়ে চায়ের মতো করেও গ্রহণ করতে পারেন।