নিউজ ডেস্ক: জীবননগর শহরের আশতলাপাড়ায় স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামী ট্রাক চালক সুজনের বিরুদ্ধে। এ ঘটনার পর পলাতক ঘাতক স্বামী ট্রাকচালক সুজনকে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে এ হত্যাকা-ের ঘটনা ঘটে। জীবননগর থানা পুলিশ গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে। স্থানীয় পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ওয়াশিম রাজা হত্যার ঘটনাটি সত্য বলে স্বীকার করে বলেন, রুনা ও সুজনের সাংসারিক কলহের জের ধরে এ হত্যাকা- ঘটতে পারে বলে ধারনা করা হচ্ছে। পুলিশ জানায়, উপজেলার বাঁকা ইউনিয়নের পাথিলা গ্রামের রেজাউল করিমের ছেলে সুজন মিয়া (২৮ পেশায় একজন ট্রাক ড্রাইভার। সম্প্রতি সে একই উপজেলার পাঁকা গ্রামের বদর উদ্দিনের মেয়ে রুনা খাতুনকে (২৫) বিয়ে করে জীবননগর আশতলাপাড়ায় আওয়ামী লীগ নেতা ইকতিয়ার উদ্দীনের বাড়ি ভাড়া নিয়ে বসবাস করে আসছিল। বৃহস্পতিবার সকালে বিয়ের কাবিন ও দেনমহরের ৭৫ হাজার টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ৫ লাখ টাকা করার জন্য স্ত্রী রুনা স্বামীকে চাপ দিতে থাকে। এ নিয়ে দুইজনের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ শুরু হয়।
একপর্যায়ে ওই বাসার অন্য ভাড়াটিয়ারা তাদেরকে থামিয়ে ঘরে পাঠায়। দুপুর ১টার দিকে ওই বাড়ির অন্য ভাড়াটিয়ারা রুনার ঘরে গিয়ে তাকে চৌকির উপর মৃত অবস্থায় দেখে থানা পুলিশে খবর দেয়। এদিকে হত্যার ঘটনার ৫ ঘন্টার মধ্যে সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার (দামুড়হুদা সার্কেল) আবু রাসেলের নিদের্শে জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ গনি মিয়ার নেতৃত্বে ওসি তদন্ত এম এম সেলিম ও এসআই সিরাজুল ইসলাম সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশের বিশেষ কৌশল অবলম্বন করে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় মহেশপুর উপজেলার গুড়দাহ থেকে ঘাতক ট্রাকচালক স্বামী সুজনকে আটক করে। আটককৃত আসামী সুজনকে জীবননগর থানা পুলিশের হেফাজতে রাখা হয়েছে। এ ঘটনার বিষয়ে গতকাল সন্ধ্যায় সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার (দামুড়হুদা সার্কেল) আবু রাসেল সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, নিহত রুনা ও সুজনের বিয়ের পর থেকে তাদের মধ্যে একটি মনমালিন্য সৃষ্টি হয়। মাঝে রুনা সুজনের নিকট থেকে তালাক নিয়ে নেয়। পরবর্তীতে আবার তারা বিবাহ করে, তবে তাদের পারিবারিক কলহের কারণেই হয়ত এ ঘটনা ঘটেছে। তবে প্রাথমিক ধারণা করা হচ্ছে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। এ লাশের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করা হয়েছে। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। সাথে সাথে রুনার হত্যাকারী তার স্বামী সুজনকে মহেশপুর উপজেলার গুড়দাহ থেকে জীবননগর থানা পুলিশের একটি টিম আটক করেছে। এদিকে মেয়েকে হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন নিহত রুনার বাবা-মা।