নিউজ ডেস্ক: জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন, জনগণ জাতীয় পার্টির উন্নয়ন ও শাসন দেখেছে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির শাসনও দেখেছে। আর আওয়ামী লীগ বিএনপি নয় জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় এলে দেশের সবাই নিরাপদ। জাতীয় পার্টি ছাড়া কেউ ক্ষমতায় যেতে পারবে না।
মঙ্গলবার বিকালে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার শহীদ মোস্তফা খেলার মাঠে স্থানীয় জাতীয় পার্টি আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এরশাদ বলেন, সবাই ভেবেছিল জাতীয় পার্টি ধ্বংস হয়ে যাবে। ২৭ বছর ধরে জাতীয় পার্টি বেঁচে আছে, বেঁচে থাকবে। জাতীয় পার্টি কোনো প্রতিহিংসা জ্বালা-পোড়াও, হরতাল ও সন্ত্রাস বিশ্বাস করে না। আমরা শান্তিতে বিশ্বাস করি।
তিনি বলেন, আগামীতে জাতীয় পার্টিকে নিয়েই গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে ক্ষমতায় যেতে হবে। জনগণ সব অপশাসনের পরিবর্তন চায়। দেশে প্রশ্নপত্র ফাঁস, চাকরিতে ঘুষ আর চলতে পারে না। দেশকে বাঁচাতে মানুষকে বাঁচাতে আগামীতে জাতীয় পার্টিকে ক্ষমতায় আসতে হবে।
সাবেক এ রাষ্ট্রপতি বলেন, আমার ৯ বছরের শাসনামলে উপজেলা ও জেলা প্রবর্তন করেছি। গোটা দেশের যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়ন করেছি। উপজেলা পর্যায় আদালত করেছি। তারপরও বিএনপি সরকার আমাকে ছয় বছর কারাগারে পাঠিয়ে নির্যাতন করেছে। আমি অসুস্থ ছিলাম আমাকে যথাযথ চিকিৎসা দেয়া হয়নি।
তিনি বলেন, আমাকে মেরে ফেলার ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। আজও আমি বেঁচে আছি। জাতীয় পার্টিও বেঁচে আছে। মানুষ আর জুলুম সংঘাত চায় না, শান্তি ও উন্নয়ন চায়। তা একমাত্র দিতে পারে জাতীয় পার্টি।
সমাবেশে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান অভিযোগ করেন, মঠবাড়িয়ায় জাতীয় পার্টির জনসভা বানচাল করতে একটি সন্ত্রাসী মহল বাধা দিয়েছে। কর্মীদের মারধর করেছে। তিনি এজন্য মঠবাড়িয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ও থানার ওসিকে অভিযুক্ত করে তাদের বিচার দাবি করেন।
মঠবাড়িয়ার সংসদ সদস্য সদ্য জাতীয় পার্টিতে যোগদানকারী ডা. রুস্তুম আলী ফরাজির হাত উচিয়ে সমাবেশে তাকে আগামী নির্বাচনে পিরোজপুর-৩ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেন এরশাদ।
এ সময় মঠবাড়িয়ার জনগণের উদ্দেশে তিনি বলেন, ডা. ফরাজি আগামীতে এমপি নির্বাচিত করলে তাকে মন্ত্রিত্ব দেয়া হবে। আমি তাই চাই। জাতীয় পার্টিকে ক্ষমতায় না দেখা পর্যন্ত আমি নিজেকে বৃদ্ধ মনে করি না। ইনশাআল্লাহ আমি এগিয়ে যাব তরুণের মতো।
সভায় জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমীন হাওলাদার হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, স্থানীয় উপজেলা চেয়ারম্যানের লেলিয়ে দেয়া সন্ত্রাসী বাহিনী মানুষকে সমাবেশে আসতে বাধা দিয়েছে। মারধর করেছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে উপজেলা চেয়ারম্যান ও থানার ওসির বিরুদ্ধে সরকারব্যবস্থা না নিলে জাতীয় পার্টি প্রয়োজনে সংসদ বর্জন করবে। বিচার না হলে আগামীতে আওয়ামী লীগের জোটে থাকব কিনা তা নতুন করে ভাবতে হবে।
এর আগে দুপুর আড়াইটার দিকে হেলিকপ্টারযোগে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদ কেন্দ্রীয় নেতাদের মঠবাড়িয়া সরকারি কলেজ মাঠে অবতরণ করেন। পরে তিনি নেতাকর্মীদের নিয়ে শহরের শহীদ মোস্তফা খেলার মাঠে সমাবেশস্থলে আসেন। এ সময় তাদের ফুল দিয়ে বরণ করা হয়।
মঠবাড়িয়া উপজেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক মো. নাজমুল আহসান কবীরের সভাপতিত্বে সমাবেশে স্থানীয় সংসদ সদস্য ডা. রুস্তুম আলী ফরাজি প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন। অন্যদের মধ্যে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদের, মহাসচিব এবিএম রুহুল আমীন হাওলাদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য আনিসুল ইসলাম মাহমুদ. কাজী ফিরোজ রশীদ, জিয়াউদ্দিন আহম্মেদ বাবলু, মুজিবুল হক চুন্নু, মশিউর রহমান রাঙা, খুলনা মহানগর জাপা সভাপতি শফিকুল ইসলাম মধু, মঠবাড়িয়া উপজেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক নূরুজ্জামান লিটন, রফিকুল ইসলাম টুকু, যুব সংহতি সভাপতি মিজানুর রহমান দুলাল প্রমুখ বক্তব্য দেন।