নিউজ ডেস্ক:চুয়াডাঙ্গার পৌর এলাকার হকপাড়ায় নেশার টাকা ও নেশা করতে বারন করায় বৃদ্ধা মা’কে নির্যাতন ও ছুরিকাঘাতের চেষ্টায় ব্যর্থ হয়েছে তার ছেলে সুজন (৩০)। গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে চুয়াডাঙ্গা হকপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। সুজনের নিকট মাদক থাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ড দিয়েছে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াশীমুল বারী। গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ওয়াশীমুল বারীর নেতৃত্বে ও জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহযোগীতায় সুজনকে আটক করে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন। এসময় তার নিকট থেকে ৫০গ্রাম গাজা উদ্ধার করা হয়। অভিযুক্ত সুজন চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার হকপাড়ার শ্রী সন্তোষ কুমার সাহার ছেলে।
অভিযুক্ত সুজনের মা শিখা এ প্রতিবেদককে বলেন, আমার ছেলে দীর্ঘদিন ধরে মাদকাসক্ত। মাদকের টাকা না পেয়ে আমাকে মারধর ও শারীরিক নির্যাতন করে আসছে। তিনি কাঁদতে কাঁদতে আরো বলেন, গতকাল সকালে আমি ছেলেকে নেশা করতে বারন করি। এসময় আমার গলাই চুরিকাঘাতের চেষ্টা করে আমার ছেলে সুজন। এসময় চিৎকার চেঁচামেচি করলে আমার প্রতিবেশিরা ছুটে এসে আমাকে উদ্ধার করে। সুজনের কাছে মাদক আছে এমনই এক খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ওয়াশীমুল বারী ও জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে পৌঁছে অভিযুক্ত সুজনকে আটক করে। এসময় অভিযুক্তের কাছে এ সময় ৫০ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার করে। পরে সার্বিক তথ্যপ্রমাণ ও অভিযুক্তের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে সুজনকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ১৯৯০ এর ১৯, ১, ৭(ক) ধারায় ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদ- প্রদান করেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ওয়াশীমুল বারী।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ওয়াশীমুল বারী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে এ প্রতিবেদককে বলেন, অভিযুক্ত সুজন নেশার টাকা ও মাদক সেবন নিষেধ করায় তার মা’কে দীর্ঘদিন যাবত নির্যাতন করে আসতো বলে অভিযোগ করেছেন তার মা শিখারাণী। তবে অভিযুক্ত সুজনের নিকট মাদক আছে এমনই এক অভিযোগ পেয়ে গতকাল সকালে জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় অভিযুক্ত সুজনকে আটক করতে সক্ষম হয় এবং তার নিকট থেকে ৫০ গ্রাম গাজা উদ্ধার করা হয়। পরে তাকে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদ- প্রদান করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে সুজন তার মা শিখাকে কারণে-অকারণে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে আসছে। গতকাল সকালে নেশা করতে বারন করায় সুজন ক্ষিপ্ত হয়ে তার মাকে বেদম পিটিয়ে আহত করে এবং ছুরিকাঘাত করতে যায়। পরে স্থানীয়রা চেঁচামেচি শুনে এগিয়ে আসলে সুজন শান্ত হয়। এসময় প্রশাসনকে খবর দিলে তারা এসে সুজনকে গাঁজাসহ আটক করে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ইন্সপেক্টর আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাব-ইন্সপেক্টর আবুল কালাম আজাদ, সহকারী উপ-পরিদর্শক আকবর হোসেন প্রমূখ।