শহরে থমথমে অবস্থা ও জনমনে আতঙ্ক, অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন
নিউজ ডেস্ক:চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের নেতা শোয়েব রিগানকে উপর্যুপরি কুপিয়ে জখম করেছে দুর্বৃত্তরা। তাঁকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাতেই তাঁকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে শহরের জ্বিনতলা মল্লিকপাড়া এলাকার একটি চায়ের দোকানে এ হামলার ঘটনা ঘটে। আহত শোয়েব রিগান শহরের মাঝেরপাড়ার আজমের ছেলে ও চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রলীগের প্রস্তাবিত কমিটির সহসভাপতি হিসেবে মনোনীত। এ ঘটনার পর চুয়াডাঙ্গা শহরে থমথমে অবস্থা ও জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে। যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের সংঘর্ষ। এদিকে যেকোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এদিকে, ছাত্রলীগের নেতা শোয়েব রিগানের ওপর হামলার খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. কলিমুল্লাহ, সদর থানার ভারাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাসহ জেলা ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতারা হাসপাতালে ছুটে যান। ঘটনার পর চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সিব্বির আহমেদের উপস্থিতিতে ছয়জনের নাম উল্লেখ করে জবানবন্দি দেন শোয়েব রিগান। হাসপাতালে উপস্থিত কয়েকজন ছাত্রলীগের নেতা বলেন, গতকাল রাত ১১টার দিকে বশির নামের এক যুবককে পাওনা টাকা আদায়ের জন্য মল্লিকপাড়ার একটি চায়ের দোকানে আটকিয়ে রাখে কিছু দুর্বৃত্ত। দুর্বৃত্তরা জানায়, রিগান এলে বশিরকে ছেড়ে দেওয়া হবে। এরপর রিগান একটি মোটরসাইকেলযোগে সেখানে গেলে তাঁর ওপর হামলা চালানো হয়। একপর্যায়ে তাঁকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে ফেলে রাখা হয়। এ সময় বশিরকেও মারধর করা হয়। পরে স্থানীয় ব্যক্তিরা রিগানকে পড়ে থাকতে দেখে একটি ভ্যানযোগে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে পাঠান।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মশিউর রহমান জানান, ‘ধারালো চাপাতি দিয়ে উপর্যুপরি কোপানোর ফলে রিগানের দুই পা, বাঁ হাত, পিঠ, ঘাড়সহ শরীরের অন্তত ৪০টি স্থান ক্ষত-বিক্ষত হয়েছে। বিশেষ করে দুই পা ও বাঁ হাতে কোপ দেওয়া হয়েছে অসংখ্য। প্রচুর রক্তক্ষরণের কারণে তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। উন্নত চিকিৎসার জন্য আমরা চুয়াডাঙ্গা থেকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে তাঁকে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছি। রাতেই অ্যাম্বুলেন্সে করে তাঁকে ঢাকায় নেওয়া হয়েছে।’
এদিকে, চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি শাহাবুল হোসেন জানান, শোয়েব রিগান কলেজ ছাত্রলীগের নেতা হলেও চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রলীগের প্রস্তাবিত কমিটির সহসভাপতি হিসেবে মনোনীত। এ ন্যক্কারজনক হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে দোষী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ খান বলেন, ‘শোয়েব রিগান আমাদের কাছে ছয়জনের নাম উল্লেখ করে জবানবন্দি দিয়েছেন। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। আসামিদের ধরতে আমরা ইতিমধ্যে অভিযান চালাচ্ছি।’