সংশ্লিষ্ট কাজের বিভাগীয় তদারকি ছাড়ায় রাতের আধারে চলছে নির্মাণ কাজ
পাথর বালির মিশ্রণে শুধুই মাটি : কাজ বন্ধ করে দিয়েছে ক্ষুব্ধ জনগণ : হুইপ ছেলুনের দৃষ্টি আকর্ষণ
নিউজ ডেস্ক:ঝিনাইদহ-চুয়াডাঙ্গা-মুজিবনগর (মুজিবনগর সড়ক) সড়কের উন্নয়ন কাজ চলছে কচ্ছপ গতিতে। বছরের পর বছর ভোগান্তির পর চুয়াডাঙ্গা শহরের বেশ কয়েকটি পয়েন্টে কাজ শুরু করা হয়েছে সম্প্রতি। যেটুকু কাজ দৃশ্যমান হয়েছে তা রোজার মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে শুরু করা হয়। তবে সংশ্লিষ্ট এ কাজের তদারকিতে কোন কর্মকর্তা তথা চুয়াডাঙ্গার সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী, এসডি ও এসও বা কার্যসহকারী কাউকেই পাওয়া যায়নি সাইটে। রাতারাতি পাথর বালির মিশ্রণ এনে রাস্তায় ছড়িয়ে রোলার দিয়ে সমান করে দেয়া হচ্ছে। ঠিকমত পানি না দিয়ে রাস্তার উপর নামকাওয়াস্তে রোলার চালানো হচ্ছে বলে জানা যায়। সিডিউল না মেনে নি¤œমানের সামগ্রী দিয়ে রাস্তা নির্মাণের অভিযোগ এনে গতকাল বুধবার রাত থেকে কাজ বন্ধ করে দিয়েছে ক্ষুব্ধ জনগণ। শহরের ফাতেমা প্লাজার সামনের অংশে এ কাজ থমকে যায়। যেখানে এসকে ভেটর দিয়ে রাস্তার সিলকোর্ট ও কার্পেটিং তুলে স্তুপ করা রাখা হয়েছে। দ্রুত এ সমস্যা সমাধান করে পুনরায় কাজ শুরু না হলে ভোগান্তি আরো বাড়বে বলে অনেকে জানান।
বিক্ষুব্ধদের অভিযোগে জানা যায়, সিডিউল অনুযায়ী পাথরের তুলনায় বালি বেশি দেয়া হচ্ছে; তাও নি¤œমানের। চুয়াডাঙ্গা শহরের অভ্যন্তরে এ সড়কটি উন্নয়নে বেইজ টাইপ-১ মানের পাথর-বালি দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। যেখানে চার ঝুড়ি পাথর ও এক ঝুড়ি বালি দেয়ার নিয়ম রয়েছে। সেখানে দেখা যায় প্রায় তিন ঝুড়ি নি¤œ মানের বালি ও এক ঝুড়ি পাথর দেয়া হচ্ছে। আর এই পাথর-বালির মিশ্রণ করা হচ্ছে সরাসরি মেহেরপুর থেকে। বৃহৎ এ প্রকল্পের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেহেরপুরের জহুরুল মিয়া; তাই তিনিই সেখান থেকে নি¤œমানের সামগ্রি পাঠিয়ে কাজ করাচ্ছেন। রাতারাতি কাজ করায় তা সহজে বোঝার উপায় নেই বলে অনেকে জানান। তা ছাড়া দিন বা রাত, কোন সময়ই ডিপার্টমেন্টের লোকজন তদারকির জন্য আসেন না; যা প্রশ্নবিদ্ধ।
জানা যায়, ঝিনাইদহ-চুয়াডাঙ্গা-মুজিবনগর রাস্তা নির্মাণ কাজে প্রতি কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণে ৩ কোটি টাকা নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে। এরমধ্যে প্রতি কিলোতে বেইজ টাইপ ওয়ান নির্মান ব্যয় ধরা হয় ১ কোটি টাকা, বেইজ কোর্স ওয়ারিং কোর্স করতে প্রতি কিলোমিটারে বরাদ্দ দেড় কোটি টাকা ও প্রতি কিলোমিটারে ৫০ লাখ টাকার মাটির কাজ রয়েছে। বেইজ টাইপ ওয়ানে ৪ ঝুড়ি পাথর ও এক ঝুড়ি বালি দেওয়ার নিয়ম রয়েছে সিডিউলে। সেখানে কাজ করা হচ্ছে ঠিক উল্টো। যা এলজিইডির ল্যাব টেকনিশিয়ান দিয়ে পরীক্ষা করলে এই পুকুর চুরির ঘটনা ধরা পড়বে।
এদিকে রাতে কাজ বন্ধের পর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের একটি পাথর-বালি ভর্তি ট্রাক আটকে রেখেছে বিক্ষুব্ধ জনগণ। তারা ট্রাকটিতে থাকা পাথর ও বালির মিশ্রণ পরীক্ষা করিয়ে মানসম্মত মালামাল দিয়ে রাস্তার নির্মাণের জন্য জাতীয় সংসদের হুইপ বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন, এমপি’র দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
এ প্রসঙ্গে বিস্তারিত জানার জন্য চুয়াডাঙ্গা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জিয়াউল হায়দারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। পরবর্তীতে আবারো ফোন দেয়া হলে তিনি সংযোগ বিচ্ছন্ন করেন।