নয় মাইল বাজারে মোবাইলের দোকানে চুরির ঘটনা
নিউজ ডেস্ক:চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নয় মাইল বাজারে একটি মোবাইল ফোনের দোকানে রাতের আধারে দুঃধর্ষ চুরির ঘটনায় পুলিশের পাতা ফাঁদ, সোর্সের সংবাদ ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তার মাধ্যমে আরও ৪ জনকে আটক করেছে সদর থানা পুলিশ। এ সময় এসকল আসামীদের কাছ থেকে দু’টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করাসহ গ্রেফতারকৃতদের সদর থানায় সোপর্দ করা হয়। আজ গ্রেফতারকৃতদের আদালতে সোপর্দ করা হতে পারে বলে জানায় পুলিশ। গতকাল সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বদরগঞ্জ বাজার, নয়মাইলসহ আশপাশের এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়। আটককৃতরা হল- চুয়াডাঙ্গা ভুলটিয়ার নুরনবী (২৮), জীবননগর বাকা গ্রামের বিট্টু (২০), ঝিনাইদহের সাকিল রেজা (৩০) ও সাতক্ষীরার সাহিদ সর্দার (২২)।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নয় মাইল বাজারে বিসমিল্লাহ স্টোর নামে একটি মোবাইল ফোনের দোকানে গত ১৯ শে অক্টোবার রাতের আধারে এক দুঃঘর্ষ চুরির ঘটনা ঘটে। পরে ওই দোকান মালিক বাদি হয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করলে, থানা পুলিশ চোরসহ চুরি হওয়া মালামাল উদ্ধারের জন্য মাঠে নামে। পরে চুয়াডাঙ্গা পুলিশের পাতা ফাঁদ, সোর্সের সংবাদ ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তার মাধ্যমে এ সকল আসামীদের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার পর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. কলিমুল্লাহ’র নেতৃত্বে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি (তদন্ত) আব্দুল খালেকসহ থানা পুলিশের একটি চৌকস দল বদরগঞ্জ বাজার, নয়মাইলসহ আশপাশের এলাকায় অভিযান চালিয়ে সাতক্ষীরা জেলার তালা থানার খাঁনপুর গ্রামের কিরামত সর্দারের ছেলে ৯ মাইল সততা ইটভাটার শ্রমিক সহিদ সর্দার ও চুয়াডাঙ্গা জীবননগর উপজেলার বাকা গ্রামের মোশারফ আলীর ছেলে ৯ মাইল বাজারের কাদের মিয়ার ইটভাটার শ্রমিক বিট্টুকে আটক করেন।
আটককৃত এই দু’জনের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় চুরি হওয়া দুটি মোবাইল ফোন। এ সময় আটক এই দু’জন জানায়, নূর নবী ও শাকিলের কাছ থেকে তারা এই ফোন কিনেছে। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ভুলটিয়া গ্রামের আব্দুল গনির ছেলে নয় মাইল বাজারের ইলেকট্রনিক্সের দোকানদার নূর নবী ও ঝিনাইদহ বড়াই গ্রামের হায়দার আলীর ছেলে বদরগঞ্জ বাজারের মা টেলিকমের মালিক শাকিলকে আটক করে সদর থানা হেফাজতে নেওয়া হয়। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. কলিমুল্লাহ প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এ ঘটনায় এর আগেও তিনজনকে আটক করে চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশ। এদের মধ্যে সিরাজুল নামে একজন সে সময় ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়, তাতে সে উল্লেখ করে তারা তিনজনই এই চুরির ঘটনার সাথে জড়িত ছিলো।
এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর থানার ওসি (তদন্ত) আব্দুল খালেকের সাথে কথা হলে তিনি জানান, নয় মাইল বাজারে একটি মোবাইল ফোনের দোকানে দুঃধর্ষ চুরির ঘটনায় দোকান মালিক বাদি হয়ে মামলা করলে, চুরি হওয়া মালামাল উদ্ধারসহ চোরকে আটক করতে কাজ শুরু করে থানা পুলিশ। এরই ধারাবাহিকতায় প্রথমে তিনজনকে আটক করা হয়। আটক এই তিনজনের মধ্যে সিরাজুল সে সময় ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়। এরপর বাকি আসামীদের ধরতে পুলিশি তৎপরতা আরও বাড়ানো হয়। পুলিশের পাতা ফাঁদ ও বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত সাহায়তায় গতকাল এই ৪ জনকে আটক করা হয়। এদের মধ্যে নূরনবী ও শাকিল বেশ কিছু চোরাই ফোন কেনে। পরে এসকল চোরাই ফোনের মধ্যে দুটি ফোন সহিদ ও বিট্টু নামে দুই ইটভাটা শ্রমিকের কাছে বিক্রি করে।
উল্লেখ্য, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নয়মাইল বাজারে বিসমিল্লাহ স্টোর নামে একটি মোবাইল ফোনের দোকানে গত ১৯ শে অক্টোবর রাতের আধারে এক দুঃধর্ষ চুরির ঘটনা ঘটে। এ সময় ওই চোরের দল দোকানের টিন কেটে বিভিন্ন ব্রান্ডের ৬০টি মোবাইল ফোন, একটি টিভিসহ বিভিন্ন ধরণের কসমেটিক্স নিয়ে যায়, যার আনুমানিক মূল্য ৯৮ হাজার টাকা। এ ঘটনায় দোকান মালিক আশরাফুল ইসলাম বাদি হয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করলে পুলিশ চুরি হওয়া মালামাল উদ্ধারসহ চোর আটক করতে মাঠে নামে। পরে গতকাল ৪ জনকে আটকের মধ্যে দিয়ে এ মামলায় মোট ৭ জনকে আটক করা হলো।