অনেক সময় ঘোষণা ছাড়াই গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। ফলে গ্যাস সংকটে চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, শনির আখড়া, কদমতলী, কামরাঙ্গীরচর, মিরপুর, নদ্দা ও কুড়িল বিশ্বরোডসহ বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা।
এসব এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, লাইনের গ্যাস বেশিরভাগ সময় থাকে না। গ্যাসের চাপও কম। বাধ্য হয়ে সিলিন্ডার ব্যবহারের দিকে ঝুঁকতে হচ্ছে। উপায়ন্তর না পেয়ে অনেক সময় হোটেল থেকে খাবার এনে খেতে হচ্ছে।
গ্যাস সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে কামরাঙ্গীরচরে। বিকল্প হিসেবে অনেকে সিলিন্ডারে ঝুঁকছেন। গ্যাস সংকট নিয়ে কথা হলে কামরাঙ্গীরচর এলাকার বাসিন্দা মনির হোসেন বলেন, ভোর থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত চুলাই জ্বলে না। মাঝে মধ্যে রাইস কুকারে সময় নিয়ে রান্না করতে হচ্ছে। প্রায়ই হোটেল থেকে ভাত-তরকারি কিনে আনতে হয়। এভাবেতো সব সময় চলা সম্ভব নয়।
কামরাঙ্গীরচরের বাসিন্দা সুরভী আক্তার বলেন, অনেক দিন ধরে এ এলাকায় গ্যাসের সমস্যা বিদ্যমান। রাত ১২টায় এসে ভোর ৫টায় চলে যায়। দিনের বেলা গ্যাস পাওয়া যায় না।
কুড়িল এলাকার বাসিন্দা আসাদুল সরদার বলেন, দুদিন আগে ঘোষণা ছাড়াই নদ্দা ও কুড়িল এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। আগে গ্যাস বন্ধের আগে জানিয়ে দিতো তিতাস। কিন্তু এখন ঘোষণা ছাড়াই গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে কঠিন বিপাকে পড়তে হয় আমাদের মত সাধারণ গ্রাহকদের।
জানা যায়, রাজধানীর মিরপুর এলাকায় দিনে দু-তিন ঘণ্টা গ্যাস থাকে না। মগবাজার ওয়্যারলেস গেট, বেইলি রোড, রমনা সিদ্ধেশরী এলাকার চিত্র একই। রাতে আসলেও দিনে গ্যাস থাকে না।
তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) প্রকৌশলী মো. সেলিম মিয়া বলেন, সব এলাকায় সমস্যা নেই। কিছু কিছু এলাকায় আছে। সাপ্লাই কম থাকায় এমনটা হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ে ফ্লোটিং স্টোরেজ অ্যান্ড রেগাসিফিকেশন ইউনিট (এফএসআরইউ) ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সরবরাহ এখন কম। আশা করছি, চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ে সমস্যার সমাধান হবে।
পেট্রোবাংলা সূত্রে জানা যায়, সামিট গ্রুপের এলএনজি টার্মিনালটি বন্ধ থাকায় একটি টার্মিনাল দিয়ে মাত্র ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ হচ্ছে। দেশের অভ্যন্তরীণ কূপ থেকে আরও ২০০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে। দেশে গ্যাসের চাহিদা রয়েছে কমপক্ষে ৩ হাজার ১০০ মিলিয়ন ঘনফুটের। ফলে বর্তমানে প্রতিদিন ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের ঘাটতি রয়েছে।