বায়েজীদ (গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি) :
ড্রেনেজ ব্যবস্থা ঠিক না থাকায় ও প্রয়োজনীয় ড্রেনের অভাবে গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে গাইবান্ধা পৌরসভার সবগুলো ওয়ার্ডের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাঘাট ও আবাসিক এলাকা জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। বাড়ীর আঙিনা ও ঘরের ভেতর পানি প্রবেশ করেছে। এতে করে পৌরবাসীকে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখে ও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতাল সড়ক, জেনারেল হাসপাতাল ও সিভিল সার্জনের কার্যালয় চত্ত¡র, খাঁপাড়ায় গাইবান্ধা মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র (মাতৃসদন) রোড, মধ্যপাড়া স্কুল রোড, পলাশপাড়ায় গাইবান্ধা ক্লিনিকের সামনের সড়ক, শাপলাপাড়ায় মায়া ক্লিনিকের সামনের সড়ক, সুখশান্তির বাজার-খানকাহ শরীফ রোড, গাইবান্ধা ডিবি রোড জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। এসব সড়কসহ আবাসিক এলাকাগুলোয় হাঁটু পানি জমেছে। বৃষ্টিতে পঁচা ময়লা আবর্জনা সবখানে ছড়িয়ে পড়ায় সেসব আরও বেশি করে ভোগাচ্ছে মানুষকে।
এছাড়া গাইবান্ধা শহরের ডিবি রোডসহ বেশ কিছু সড়কে বৃষ্টির পানি জমে রাস্তার পিচ উঠে খানা-খন্দের সৃষ্টি হওয়ায় যাতায়াতে চরম বিপাকে পড়তে হচ্ছে মানুষদের। বৃষ্টিতে ভেসে গেছে হাসপাতালের রোগীদের ফেলে দেওয়া বিভিন্ন উপকরণ। ফলে সেই পানি গায়ে লেগে মানুষ চর্মরোগসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।
শুধু গাইবান্ধা পৌরসভাই নয়, বৃষ্টির কারণে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে সাঘাটা উপজেলা বাজার, বোনারপাড়া বাজারসহ অন্যান্য উপজেলা শহরের রাস্তা ও আবাসিক এলাকাগুলোয়। কোথাও কোথাও হাঁটু পানি জমে থাকায় যাতায়াতে চরম বিপাকে পড়তে হচ্ছে মানুষ ও যানবাহন চালকদের। বিশেষ করে অন্ধকার রাতে দুর্ভোগ আরো অনেক বেশি বেড়ে যায়।
ফলে জলাবদ্ধতার কারণে মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। অথচ এসব রাস্তা দিয়ে চলাচলের সময় গর্ভবতী নারীসহ শিশু ও বৃদ্ধদের ভোগান্তির যেন কোন শেষ নেই। কিন্তু এসব জলাবদ্ধতা সমস্যার সমাধান করতে জনপ্রতিনিধিসহ সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে উদাসীনতা লক্ষ্য করা গেছে। এই জলাবদ্ধতা নিয়ে বর্তমানে এমন অবস্থা দাঁড়িয়েছে যে, কে দেখে কার দুর্ভোগ ও কে শোনে কার কথা।
গাইবান্ধা পৌরসভার সুখনগর এলাকার কলেজ শিক্ষক সাখাওয়াৎ হোসেন বলেন, সামান্য বৃষ্টিতেই সুখশান্তির বাজারে মৎস্য কার্যালয়ের পাশের সড়কে হাঁটু পানি জমে থাকে। এতে করে যাতায়াতে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। অথচ গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটিতে নেই একটি ড্রেন। বিষয়টি পৌর কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোনো কাজ হচ্ছে না।
গাইবান্ধা নাগরিক পরিষদের আহবায়ক অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম বাবু বলেন, পানি নিঃষ্কাশনের জন্য জেলা শহর ও আবাসিক এলাকাগুলোয় প্রয়োজনীয় ড্রেন নেই। দুই-একটি থাকলেও সেগুলো উঁচু করে নির্মাণ করা হয়েছে। ফলে ড্রেনগুলো কোনো কাজে লাগছে না। ফলে পানি নিঃষ্কাশন হতে না পেরে সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তা ও আবাসিক এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। আর এ কারণে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে পৌরবাসীকে।
এ বিষয়ে গাইবান্ধা পৌরসভার মেয়র শাহ মাসুদ জাহাঙ্গীর কবীর মিলন বলেন, বৃষ্টির কারণে শহরের ড্রেনগুলোয় ময়লা-আবর্জনার জটলা লেগেছে। ফলে পানি নিঃষ্কাশন হতে পারছে না। শহরের পানি নিঃষ্কাশনের জন্য গুরুত্বপুর্ণ সড়কগুলোতে নতুন করে ড্রেন নির্মাণ করা হচ্ছে। ড্রেন নির্মাণ কাজ শেষ হলে শহরে জলাবদ্ধতা থাকবে না।