নিউজ ডেস্ক:
জাতীয় পতাকায় আচ্ছাদিত কফিনের ওপর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের পতাকা রেখে প্রবাসের মুক্তিযোদ্ধারা বিদায়ী অভিবাদন জানালেন প্রখ্যাত আবৃত্তিকার, স্থপতি এবং মুক্তিযোদ্ধা কাজী আরিফকে।
এ সময় সেক্টর কমান্ডার ফোরামের যুক্তরাষ্ট্র ইউনিটের আহবায়ক রাশেদ আহমেদ, যুগ্ম আহবায়ক লাবলু আনসার, সদস্য সচিব রেজাউল বারী সহযোদ্ধা কাজী আরিফের কফিনে পুষ্পার্ঘ অর্পণ করেন। এরপর একেএক প্রবাসের আবৃত্তিশিল্পী, নাট্যকর্মী, সাংস্কৃতিক সংগঠক, নিউইয়র্ক হতে প্রকাশিত পত্রিকাগুলোর সম্পাদক এবং যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমানের নেতৃত্বে নেতা-কর্মীরা কাজী আরিফের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা প্রদর্শন করেন। বিপুলসংখ্যক প্রবাসীর উপস্থিতিতে জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের সামনে সুশৃঙ্খলভাবে এসব পর্বের সমন্বয় ও উপস্থাপনা করেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের যুক্তরাষ্ট্র শাখার সভাপতি মিথুন আহমেদ।
স্থানীয় সময় শনিবার বাদ মাগরিব জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারে তার নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন কাজী আরিফের বিদেহী আত্মার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে সত্যিকার অর্থে দেশপ্রেমিক এই বাঙালির আত্মার মাগফেরাত কামনায় সকলের দোয়া প্রার্থনা করেন। নিউইয়র্কে বাংলাদেশের ভাইস কন্সাল জেনারেল শাহেদ আহমেদ মুক্তিযোদ্ধা কাজী আরিফের লাশ রাষ্ট্রীয় খরচে বাংলাদেশে প্রেরণের যাবতীয় ব্যবস্থা গৃহিত হয়েছে বলে জানান। তিনি বলেন, এখানে যেমন তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রদান করা হচ্ছে, ঠিক একইভাবে বাংলাদেশেও রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফনের সকল প্রস্তুতি চলছে। জানাযার প্রাক্কালে কাজী আরিফের ভগ্নিপতি আব্দুল করিমও সকলের কাছে দোয়া কামনা করে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন। জানাযায় ইমামতি করেন মাওলানা আবিদুর রহমান।
জানাযার পর কাজী আরিফের লাশ বহনকারি কফিন এই মুসলিম সেন্টারের সামনে রাখা হয়। সেখানেই সর্বস্তরের প্রবাসীরা তার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা প্রদর্শন করেন। বিশিষ্টজনদের মধ্যে ছিলেন রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন, ভাইস কন্সাল শাহেদ আহমেদ, প্রবীণ সাংবাদিক সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহ, একুশে পদকপ্রাপ্ত অভিনেতা জামালউদ্দিন হোসেন, চলচ্চিত্র নির্মাতা কবীর আনোয়ার, বাংলাদেশ আবৃত্তি পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আহকাম উল্লাহ, গণজাগরণ মঞ্চের গোপাল সান্যাল, শরাফ সরকার, সেমন্তি ওয়াহেদ, ওবায়দুল্লাহ মামুন, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি ফাহিম রেজা নূর ও সেক্রেটারি স্বীকৃতি বড়ুয়া, সাংস্কৃতিক সংগঠক গোপন সাহা প্রমুখ।
আরো ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ড. এম এ বাতেন, আব্দুল মুকিত চৌধুরী, সেক্টর কমান্ডার ফোরামের আহবায়ক রাশেদ আহমেদ, যুগ্ম আহবায়ক লাবলু আনসার, সদস্য সচিব রেজাউল বারী, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান, নির্বাহী সদস্য শাহানারা রহমান, খোরশেদ খন্দকার, উপদেষ্টা ডা. মাসুদুল হাসান। কাজী আরিফের কন্যা অনুসূয়াও ছিলেন শোকার্তদের মাঝে।
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন থেকে অসুস্থ কাজী আরিফের হার্টের ভাল্ব অকেজো হলে তাকে ম্যানহাটানের মাউন্ট সিনাই সেন্ট লিউক্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত মঙ্গলবার ভাল্ব পুনস্থাপন এবং আর্টারিতে বাইপাস সার্জারি করা হয়। এরপর থেকেই তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে নেয়া হয়। সেখানেই তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল। ২৯ এপ্রিল শনিবার বেলা ১২টা ৫৫ মিনিটে তার লাইফ সাপোর্ট খুলে দেয়ার পরই চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মরহুমের লাশ ঢাকার উদ্দেশ্যে নিউইয়র্ক থেকে প্রেরণ করা হচ্ছে রবিবার রাত ১১টায় আমিরাতের ফ্লাইটে। তা ঢাকায় পৌঁছার কথা মঙ্গলবার সকাল পৌনে ৯টায়।