নিউজ ডেস্ক:
আমাদের মধ্যে একটি ধারণা প্রচলিত আছে যে, কাঁচা ডিমে সেদ্ধ বা রান্না করা ডিমের তুলনায় বিশেষ কিছু পুষ্টি উপাদান বেশি থাকে। কিন্তু পাশাপাশি আমরা এ হুঁশিয়ারিও শুনে আসছি, রান্না না করে ডিম খাওয়াটা একটি মৃত্যুফাঁদের মতো। এখন প্রশ্ন হলো কোনটা ঠিক?
একথা সত্যি যে, রান্না করার সময় ডিমে থাকা ভিটামিন এবং খনিজ পুষ্টি উপাদানগুলো কিছুটা নষ্ট হয়। কাঁচা ডিমে ভিটামিন বি (বি৬ এবং ফোলেট), ভিটামিন ই, খনিজ পুষ্টি উপাদান চোলিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট লুটেইন এবং জেএক্সানথিন একটু বেশিই থাকে। কিন্তু এই পার্থক্য খুবই নগন্য।
উদারহণত একটি কাঁচা ডিম থেকে আপনি ভিটামিন বি ৬ পাবেন .০৮৫ মাইক্রোগ্রাম, চোলিন পাবেন ১৪৬.৯ মিলিগ্রাম। অন্যদিকে একটি রান্না করা ডিমে ভিটামিন বি থাকে ০.৭২ মাইক্রোগ্রাম, চোলিন থাকে ১১৭ মিলিগ্রাম।
কিন্তু প্রোটিনের বেলায় রান্না করা ডিমই বেশি উপকারি। কাঁচা ডিম থেকে আমাদের দেহ মাত্র ৫০% প্রোটিন শুষে নিতে পারে। অন্যদিকে, রান্না করা ডিম থেকে আমাদের দেহ ৯১% প্রোটিন শুষে নিতে পারে। জার্নাল অফ নিউট্রিশনে প্রকাশিত এক গবেষণায় এই বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, রান্না করার সময় তাপ দেওয়ার ফলে ডিমের প্রোটিন অণুগুলোর কাঠামো এমনভাবে পরিবর্তিত হয় যে তা আরো বেশি হজমযোগ্য হয়ে ওঠে।
একটি কাঁচা ডিম থেকে আমাদের দেহ মাত্র ৩ গ্রাম হজমযোগ্য প্রোটিন পায়; অন্যদিকে একটি রান্না করা ডিম থেকে পায় ৬ গ্রাম।
আর তা ছাড়া কাঁচা ডিমে স্যালমোনেলা নামের এমন একটি ব্যাকটেরিয়া বা জীবাণু রয়েছে যা ফুড পয়জনিং বা খাদ্যে বিষক্রিয়া ঘটায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর অন্তত ১০ লাখ মানুষ খাদ্যের বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হন কাঁচা ডিম খেয়ে।
তবে খাদ্যে বিষক্রিয়ার জন্য দায়ী জীবাণু স্যালমোনেলা শুধু কাঁচা ডিমই নয় বরং পোল্ট্রি, মাংস, কাঁচা দুধ, পনির এবং এমনকি পঁচা ফল-মুল এবং সবজিতেও থাকে।
ডিম সেদ্ধ বা রান্না করলে এই ব্যাকটেরিয়া নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে এবং ফুড পয়জনিং বা খাদ্যে বিষক্রিয়ার ঝুঁকি দূর হয়।
সূত্র : ফক্স নিউজ