স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহঃ
পুলিশ ক্যাম্পের হাজতে আসামি নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার নারিকেলবাড়িয়া পুলিশ ক্যাম্পের আইসি (এসআই) মো: বদিউর রহমানের বিরুদ্ধে। যদিও তিনি এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। সোমবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে এ নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। নির্যাতিত ওই ব্যক্তি একই উপজেলার দোগাছি- বেড়পাড়া গ্রামের মৃত খেলাফৎ জোয়ারদারের ছেলে মো: আব্দুল জোয়ারদার (৪০)। জোয়ারদারকে গুরুতর আবস্থায় ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসা শেষে মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে সংশ্লিষ্ট আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তার জামিন মঞ্জুর করেন। এর আগে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আব্দুল জোয়ারদার সংশ্লিষ্ট পুলিশ ক্যাম্পের আইসি (এসআই) মো: বদিউর রহমানের উপস্থিতে জানান, পুলিশ ক্যাম্পের কাছে চায়ের দোকান রয়েছে তার। বিকেল অনুমান সাড়ে ৩টার দিকে ক্যাম্পের এএসআই মো: সেলিম হোসেন তার দোকানে আসেন এবং ক্যাম্পে যেতে বলেন। এ সময় ওই এএসআইকে ছেলে দোকানে আসার পরে ক্যাম্পে যাবে বলে জানায় আব্দুল জোয়ারদার। কিছু সময় পরে দোকানে আসেন ক্যাম্পের আইসি (এসআই)বদিউর রহমান। পরে আব্দুল জোয়ারদার এবং শরিফুল নামের অপর একজনকে জোর করে ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নিয়ে তাদের মারধর করা হয়। এরপর ক্যাম্পের হাজতে আটকে রাখা হয় দু’জনে।
আব্দুল জোয়ারদার আরও জানান, ২০১৯ সালের দিকে স্থানীয় একটি মারামারির ঘটনায় প্রতিপক্ষের দায়ের করা মামলার আসামি তিনি। ওই মামলায় নিয়মিত আদালতে হাজিরা দিয়ে আসছে জোয়ারদার। গত মাসের ২৫ তারিখে মামলার তারিখ ছিল। ওই দিন আদালতে হাজিরা দেয়নি তারা কেও। এতে করে আদালত থেকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে বলে ক্যাম্পের ধরে আনার পর তাকে জানানো হয়। তিনি আরো অভিযোগ করেন, ক্যাম্পের আইসি হাজতে ঢুকে দ্বিতীয় দফায় কিল ঘুষি, লাথি মেরে নির্যাতন করে আহত করছেন তাকে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দোগাছি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইসহাক আলী জোয়ারদার সাংবাদিকদের বলেন, গ্রাম্য মারামারির ঘটনায় আদালতে ধার্য তারিখে আদালতে হাজিরা না দেওয়ার কারণে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয় আব্দুল ও তার ভাই শরিফুলের বিরুদ্ধে। ‘ক্যাম্পে ধরে নিয়ে হাজতের অভ্যন্তরে আইসি নিজে আব্দুলকে নির্যাতন করেছে। নির্যাতনের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়লে পুলিশের পক্ষ থেকে তাকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।’ জানতে চাইলে সব মিথ্যে অভিযোগ বলে দাবি করেন এসআই মো: বদিউর রহমান। তিনি বলেন,আব্দুলের বিরুদ্ধে আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। যে কারণে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ক্যাম্পে আনার পরে বুকে ব্যাথা অনুভব করেন ওই ব্যক্তি। এরপর তাকে ঘটনার দিন (সোমবার) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে মোটরসাইকেলে সদর হাসপাতালে আনা হয় এবং ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয় তাকে। ওই রাতে হাসপাতাল পরিদর্শনকালে দেখা যায় সাদা পোষাকে এসআই বদিউর রহমানসহ তিনজন পুলিশ পাহারা দিচ্ছে আহত আব্দুলকে। একই দিন রাত পোনে ১০টার দিকে পদস্থ পুলিশ কর্মকর্তারা আহত আব্দুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। সর্বশেষ মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে এসআই মো: বদিউর রহমান জানান সুস্থ্য হওয়ার পরে আব্দুলকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর কি হয়েছে তা জানা নেই তার। এ বিষয়ে একাধিকবার যোগযোগ করা হলেও ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে মিজানুর রহমানকে ফোনে পাওয়া যায়নি।