চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি : জীবননগর বাঁকায় বংশ নিয়ে উপহাস করাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে উভয় পক্ষের মহিলাসহ আহত ৫ জন আহত হয়েছে। আহতদেরকে উদ্ধার করে জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। আহতরা হলেন- বাঁকা গ্রামের মনির উদ্দিন বিশ্বাসের ছেলে কলম বিশ্বাস (৪৮), আনোয়ার হোসেন পুটি বিশ্বাসের ছেলে রফিকুল বিশ্বাস (৪২), আনিস উদ্দিন বিশ্বাসের স্ত্রী সুন্দরী বেগম (৭৫), বাঁকা পূর্বপাড়া গ্রামের আ. করিমের দুই ছেলে মোসারফ (৩৫) ও শফি (৪০)। গতকাল শুক্রবার জুম্মার নামাজ শেষে জীবননগর উপজেলার বাঁকা গ্রামের বাজারপাড়ায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে আহত বিশ্বাস গ্রুপের কলম অভিযোগ করে বলেন, শুক্রবার সকালে আমার ভায়ের ছেলে রাসেদ মাঠ থেকে ঘাস কেটে বাড়ি ফেরার সময় বাঁকা পূর্বপাড়া গ্রামের আ. রহিমের ছেলে তৌফিক তাকে উপহাস করে বলে এই কলু তোর বাপ ফিরোজ কলু কোই? তখন রাসেদ তার কথায় প্রতিবাদ করায় তারা রাসেদকে মারপিট ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। রাসেদ বাড়ি ফিরে আমাদের জানালে আমি ফিরোজকে বাঁকা বাজারে জিজ্ঞেস করি। এ সময় শফি গ্রুপের আলাউদ্দিনের দুই ছেলে আলমগীর, হুমায়ন, রহিম শেখের ছেলে সবুর, পিন্টুসহ আরো ৫-৬ জন হঠাৎ আমার উপর চড়াও হয়ে ওঠে। এক পর্যায়ে তারা হাসুয়া, রড, লাঠিসহ দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র দিয়ে অতর্কিতভাবে আমার উপর হামলা চালায়। এসময় আমি প্রাণ বাঁচাতে চিৎকার করলে আমার বড় মা ও চাচাতো ভাই রফিকুল ছুটে আসলে তাদেরও কুপিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করে। তখন এলাকাবাসী আমাদেরকে উদ্ধার করে জীবননগর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেন। অপর গ্রুপের আহত শফি পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, সকালে আমার ভাইপো তৌফিকের সাথে সকালে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সকালে বাঁকা বাজারপাড়ার ফিরোজের ছেলে রাসেদের কথা কাটাকাটি হয়। তারই জের ধরে জুম্মার নামাজের পর আমার চাচাতো ভাই আ. রহিমকে বিশ্বাস গ্রুপের কলমসহ বেশ কয়েকজন আটকে রাখে। এ সংবাদ শুনতে পেরে আমি ও আমার ভাই মোসারফ বাজারে গিয়ে কলমের কাছে রহিমের কথা জিজ্ঞেস করতেই কলমসহ ৭-৮ জন আমাদের উপর আক্রমণ করে। এ সময় আমরা চিৎকার করলে বাজারে উপস্থিত সাধারণ জনগন ছুটে আসে এবং আমাদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য জীবননগর হাসপাতালে ভর্তি করে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড মেম্বর খাইরুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনার সময় আমি এলাকায় ছিলাম না। তাই সঠিক ঘটনাটি বলতে পারবো না।
বাঁকা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের প্রধান জানান, শুক্রবার বাঁকা বাজারে বিশ্বাস ও শফি গ্রুপের মধ্যে যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে এই সংবাদ শুনে আহতদেরকে দেখতে ছুটে জীবননগর হাসপাতালে যায়। ঘটনা শুনে জানতে পারি উভয় পক্ষের আহতরা সংঘর্ষ ঠেকাতে গিয়ে আহত হয়েছে। আহতদের চিকিৎসা শেষে আমরা স্থানীয়ভাবে বসে বিষয়টি মিমাংসা করার চেষ্টা করবো। জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সের জরুরী বিভাগের কর্মরত চিকিৎসক ডা. আনিসুর রহমান জানান, শুক্রবার দুপুরে বাঁকায় দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ৫ জনের মধ্যে মোসারফ ও শফির অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের প্রাথমিকভাবে চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য যশোর সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে। বাকিদের অবস্থা আশঙ্কামুক্ত হওয়ায় তাদের হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। জীবননগর থানার (ওসি) তদন্ত আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, জীবননগর উপজেলার বাঁকা বাজারপাড়ায় দুই গ্রুপের মধ্যে যে সংঘর্ষ হয়েছে এ বিষয়টি আমি শুনেছি এবং ঘটনাস্থলে পুলিশ ফোর্স পাঠানো হয়। এখন পর্যন্ত দুই পক্ষের মধ্যে কোন পক্ষই থানায় অভিযোগ দায়ের করেনি। তবে অভিযোগ পেলে সঠিক তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। এদিকে বাঁকা গ্রামে দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় বাঁকা গ্রামবাসীর মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। যে কোন সময় হতে পারে বড় ধরনের সংঘর্ষের ঘটনা।