নিউজ ডেস্ক:
তথ্য গোপন করার অভিযোগে রাজধানীর ভাটারা থানায় দায়ের করা নন প্রসিকিউশন মামলায় কানাডার টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাহমিদ হাসিব খান নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন।
মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর হাকিম মাহমুদুল হাসানের আদালতে আত্মপক্ষ শুনানিতে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে আদালতের কাছে বিচার প্রার্থণা করেন তাহমিদ।
এর আগে বিচারক তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়া সাক্ষিদের জবানবন্দি পড়ে শোনান। এরপর তিনি তাহমিদের কাছে জানতে চান, আপনি দোষী না নির্দোষ ? জবাবে তাহমিদ বলেন, আমি নির্দোষ।
এরপর বিচারক তার কাছে জানতে চান, আপনি কি সাফাই সাক্ষি দেবেন ? উত্তরে তাহমিদ সাফাই সাক্ষি দিবেন না বলে আদালতকে জানান। আদালতে কোন কাগজপত্র দাখিল করবেন কি না বিচারক তাহমিদের কাছে জানতে চান। জবাবে তাহমিদ জানান, কাগজপত্র দেবেন না।
এরপর আদালতকে কিছু বলার আছে কি না জানতে চান বিচারক। জবাবে না বলেন এবং আদালতের কাছে বিচার প্রার্থণা করেন তাহমিদ। আত্মপক্ষ শুনানি শেষে তাহমিদের আইনজীবী মতিউর রহমান তার পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। তবে এদিন যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ না হওয়ায় বিচারক আগামি ২০ মার্চ অবশিষ্ট যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য দিন ধার্য করেছেন।
তাহমিদের আইনজীবী মতিউর রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, গত বছরের ৩ আগস্ট হলি আর্টিজানে হামলার ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে ৫৪ ধারায় কানাডার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তাহমিদকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাকে ৫৪ ধারা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এর পরই তার বিরুদ্ধে পুলিশকে অসহযোগিতা করার অভিযোগ আনা হয়।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ৪ আগস্ট রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার জি-ব্লকের একটি বাসা থেকে তাহমিদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নেয়া হয়।
এরপর ২৮ সেপ্টেম্বর গুলশানে জঙ্গি হামলার ঘটনায় তাহমিদ হাসিব খানের বিরুদ্ধে কোনো সাক্ষ্য প্রমাণ না পাওয়ায় কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের পরিদর্শক হুমায়ুন কবির তাকে ৫৪ ধারার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়ে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন এবং সরকারি কর্মচারীর নোটিশের জবাব না দেয়ায় একটি নন প্রসিকিউশন মামলা দায়ের করেন।
তাহমিদ হাসিব খান আফতাব বহুমুখী ফার্মের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফজলে রহিম খান শাহরিয়ারের ছেলে। তিনি কানাডার স্থায়ী নাগরিক।
প্রসঙ্গত, গত বছর ১ জুলাই রাত পৌনে ৯টার দিকে রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় অস্ত্রধারী জঙ্গিরা হামলা চালায় এবং দেশি-বিদেশি নাগরিকদের জিম্মি করে। এ সময় অভিযান চালাতে গিয়ে জঙ্গিদের গ্রেনেড হামলায় গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সহকারী কমিশনার রবিউল ইসলাম ও বনানী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সালাউদ্দিন খান নিহত হন। রাতের বিভিন্ন সময়ে তিন বাংলাদেশিসহ ২০ জন জিম্মিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করে জঙ্গিরা।
পরদিন সকালে যৌথ বাহিনী কমান্ডো অভিযান চালায়। এতে ৫ হামলাকারী নিহত হয়। জীবিত উদ্ধার করা হয় ১৩ জিম্মিকে। ওই ঘটনায় নিহত জঙ্গিরা হলেন, মীর সামেহ মোবাশ্বের, রোহান ইবনে ইমতিয়াজ, নিবরাস ইসলাম, খায়রুল ইসলাম পায়েল ও সফিকুল ইসলাম ওরফে উজ্জ্বল।
রেস্টুরেন্টে হামলার পর গত ৪ জুলাই রাতে গুলশান থানার এসআই রিপন কুমার দাস বাদী হয়ে সন্ত্রাস দমন আইনে গুলশান থানায় একটি মামলা করেন। বর্তমানে মামলাটির তদন্ত করছে কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট।